অতিরিক্ত করারোপ না করে ও রাজস্ব খাত সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের ৬৭৮ কোটি ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ১৩৮ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান এই বাজেট ঘোষণা উপস্থাপন করেন।
ঘোষিত বাজেটে রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে সমপরিমাণ আয় দেখানো হলেও ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭৮ কোটি ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ১৩৮ টাকা। এতে ৯৬ কোটি ৪০ লাখ ২১ হাজার ১৯ টাকা উদ্বৃত্ত থাকবে বলে জানানো হয়।

নাসিক প্রশাসক কামরুজ্জামান বলেন, ‘নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন এবং পরিকল্পিত শহর গঠনের লক্ষ্যে এ বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ–পুনঃনির্মাণ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা–সংস্কৃতি, ক্রীড়া, জলাবদ্ধতা নিরসন, মশক নিধন, পরিবেশ সংরক্ষণ, যানজট নিরসন, সড়কবাতির উন্নয়ন ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের আওতায় ২০ কিলোমিটার সঞ্চালন পাইপলাইন, ৩০০ কিলোমিটার বিতরণ পাইপলাইন, ৩৫ হাজার হোল্ডিংয়ে স্মার্ট মিটারসহ পানি সরবরাহ সংযোগ, ৩৫ কিলোমিটার ড্রেন, এবং পাঁচ হেক্টর জমিতে পার্ক, খেলার মাঠ ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি খাল, পুকুর ও গণপরিসর পুনরুদ্ধারে বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জালকুড়িতে স্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ড নির্মাণ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া কদমরসুল অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে ইতিমধ্যে ২৩৪ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। পরিচ্ছন্নকর্মীদের জন্য ঋষিপাড়া ও ইসদাইরে ৩৬৯টি ফ্ল্যাটও নির্মিত হয়েছে।’ সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাগবাড়িতে সাধু নাগ মহাশয় মন্দির নির্মাণ কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীকে সচেতন থাকতে অনুরোধ করে প্রশাসক বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম চালালেও বাসা-বাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার রাখা নাগরিকদের দায়িত্ব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে ৩৪টি স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প স্থাপন, চারটি কবর সংরক্ষণসহ নানা উন্নয়ন কাজ চলছে। একইসঙ্গে সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ভাতা, ক্ষুদ্রঋণ ও টিসিবি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

বাজেট ঘোষণার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের মতামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রশাসক কামরুজ্জামান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জকে সিটি ভিশন অনুযায়ী পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও দারিদ্রমুক্ত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে নাগরিকদের সহযোগিতা অপরিহার্য।
এ জন্য সময়মতো হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করে নগর উন্নয়নে প্রত্যেকের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে আজ (সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার কারণে বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

আরো পড়ুন:

ডিজিটাল ব্যাংকের আবেদনের সময় বাড়ল    

রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে নামল

তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে বাজারে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণেই রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামে বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা পর্যন্ত। নিলামের কাট অফ প্রাইস ধরা হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা। এই কাট অফ প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে রিজার্ভ বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৭৪৭ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে এবং গত ১৫ জুলাই একই দরে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫  পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং  গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। ডলারের দাম আরো কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বেন, অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়, যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছেন।

ঢাকা/নাজমুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ২৪ কোটি টাকার পানি প্রকল্প
  • ১৭ হাজার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৪৫ হাজার মিশুক
  • ১৭ হাজার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৪৫ হাজার মিশুক
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন
  • নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার
  • ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে