কয়েক যুগ ধরে বেদখলে থাকা ৪ একর ৭ শতাংশ জমি অবশেষে বুঝে পেয়েছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানা। থানার এ জমি অবৈধভাবে দখল করে থাকা ১৩টি পরিবারের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। নিজেদের উদ্যোগেই জমি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে পরিবারগুলো। 

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) কোটালীপাড়া থানা তাদের জমি বুঝে পায়। পুলিশ বলছে, দীর্ঘদিন পর বেদখল হওয়ায় জমি ফিরে পাওয়ায় ফোর্সের আবাসন সংকট নিরসন করা সম্ভব হবে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, স্বাধীনতার পর থেকে কোটালিপাড়া থানা ভবনের পাশের পরিত্যক্ত জমিতে আশ্রয় নিয়ে বসতবাড়ি গড়ে তোলে স্থানীয় কয়েকটি পরিবার। আশ্রয়কৃত পরিবারগুলো তখন থানার বাবুর্চি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে দিনমজুরির কাজ করতেন। আশ্রয় নেওয়ার কয়েক বছর পর থেকে তাদের আত্মীয় স্বজনেরাও থানার জমি দখল করে বসতবাড়ি গড়ে তোলে। 

বেশ কয়েকবছর আগে থেকে থানা কর্তৃপক্ষ কয়েকবার তাদের নোটিশ দিয়ে জমি ছেড়ে বলে। কিছুদিন আগে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জমি ছেড়ে দিতে বললে তারা গত শনিবার দখল করা জমি নিজেরাই ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। পরে মঙ্গলবার কোটালীপাড়া থানা পুলিশ তাদের বেদখল থাকা ৪ একর ৭ শতাংশ জমি বুঝে পায়।

এ বিষয়ে ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা আমাদের জমি দীর্ঘদিন পরে বুঝে পেয়েছি। এতে আমাদের থানার আরো ৪ একর জমি আমাদের কাছে ফিরে এলো। আমাদের ফোর্সের আবাসন সংকট রয়েছে। জমি সংকট ও বেদখল থাকায় আমরা ভবন তৈরি করতে পারছি না। এখন যেহেতু জমি আমরা বুঝে পেয়েছি, আমাদের সদস্যদের জন্য আবাসস্থলসহ প্রয়োজনীয় কাজে জমি ব্যবহার করতে পারব।”

ঢাকা/বাদল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র পর ব র ব দখল

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে বসতবাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা ও প্রাননাশের হুমকি
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব