শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি ৪ কৃষকের পথচলা
Published: 8th, September 2025 GMT
শারীরিক সীমাবদ্ধতা জীবনকে থমকে দিতে পারে না, তার উজ্জ্বল উদাহরণ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চার কৃষক। ভিক্ষাবৃত্তির পথ এড়িয়ে তারা কর্ম ও আত্মনির্ভরতার দৃঢ় মনোবল নিয়ে কৃষি কাজকেই বেছে নিয়েছেন। উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের গোড়ারপাড়া গ্রামের এই চার কৃষকের অদম্য জীবনযাত্রা এখন সবার কাছে অনুপ্রেরণার।
সামেদুল ইসলাম (৪৫) শৈশবে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে দুই পায়ের শক্তি হারান। হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করলেও তিনি দমে যাননি। পৈত্রিক ও বর্গা জমিতে কৃষিকাজ করে সংসার চালান তিনি। তিন মেয়ের মধ্যে দুইজনকে বিয়েও দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচন: ব্রেইল পদ্ধতিতেও ব্যালট পেপার ছাপানো হবে
অভয়নগরে প্রতিবন্ধী ভ্যানচালক হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
সামেদুল ইসলাম বলেন, “বাপ দাদার পৈতৃক ও বর্গা জমিতে কৃষি কাজ করি। শারীরিক কারণে একটু কষ্ট সহ্য করতে হয়। নিজে কাজ করে সংসার চালানোর মধ্যে সব সময় আত্মতৃপ্তি কাজ করে।”
সামেদুল ইসলাম নিজের কৃষি জমিতে ধান কাটছেন
একই গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী দৃষ্টিহীন টিপু নেওয়াজ। ছোটবেলায় এক চোখ এবং কৈশোরে আরেক চোখের আলো হারান তিনি। চিকিৎসা নিয়েও দৃষ্টি ফেরেনি তার। শৈশব থেকেই বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে যুক্ত থাকায় এই পেশার প্রতি জন্ম নেয় ভালোবাসা। এখনো জমি চেনেন অভিজ্ঞতার জোরে।
টিপু নেওয়াজ বলেন, “কৃষি অফিস আমাকে সব ধরনের সাহায্যে সহযোগিতা করে। মাঠে যেতে অনেক কষ্ট হয়। তারপরও যাতায়াত করতে করতে অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন আর মাঠে যেতে অসুবিধা হয় না। নিজে কাজ করে ভালোই আছি।”
জমিতে সার ছিটানো থেকে শুরু করে কীটনাশক প্রয়োগ সবকিছুই একাই সামলান নেওয়াজ। কৃষি বিভাগের প্রণোদনার সার ও বীজ পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান এই কৃষক।
জামরুল ইসলাম গ্যাংগ্রিন রোগে একটি পা হারান। পরিবারের বোঝা হতে চাননি তিনি। নিজের জমিতে চাষাবাদ ও পানের বরজে কাজ করে চলেছেন জামরুল। তিনি বলেন, “ছোট বেলাই গ্যাংগ্রিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পা হারাই। পরিবার ও সমাজের বোঝা হতে চাইনি। তাই নিজের শারীরিক অক্ষমতাকে আমলে না নিয়ে জমিতে চাষাবাদ করে চলেছি। কখনো কারো কাছে হাত পাতিনি।”
রইচ উদ্দিন
একইভাবে ৬৫ বছর বয়সী রইচ উদ্দিন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অন্যের কাছে হাত না পেতে কৃষিকেই আঁকড়ে ধরে আছেন। রইচ উদ্দিন বলেন, “এলাকার মানুষ শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সমাজের বোঝা মনে করেন। আমি সেই প্রতিবন্ধীকতা জয় করে নিজেই কাজ করে সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছি।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, “প্রতিবন্ধী কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রণোদনার সার ও বীজ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ ও কৃষি পরামর্শের ব্যবস্থাও আছে। যেসব প্রতিবন্ধী কৃষক প্রণোদনার আওতায় নেই, তাদের দ্রুত এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”
uuজমিরুল
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, “প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনে সরকার কাজ করছে। আপনি যে চারজন প্রতিবন্ধীর কথা বলছেন, তাদের সরকারি সহায়তা করা হবে। প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিবন্ধীদের সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা ব্যবসা বা কৃষিকাজে যুক্ত হতে পারেন। ঋণ নিয়ে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমরা চাই, তারা কারও বোঝা না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হোক।”
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা সমাজসেবা অফিসের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ সেখ বলেন, ‘প্রতিবন্ধীরা চাইলে সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগের মাধ্যমে সহজেই প্রতিবন্ধী কার্ড তৈরি করে ভাতার আওতায় আসতে পারেন।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম ক জ কর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট
অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। কয়েক দিন আগে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর বাগদান সম্পন্ন করেছেন তারা। যদিও এই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি হুমা।
আরো পড়ুন:
আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইনস্টাগ্রামে একটি রহস্যময় বার্তা শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। হুমা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রামেন বাউলের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “প্রত্যেকেরই শান্ত হওয়া প্রয়োজন… আর শান্তভাবে কাজ করা উচিত।” পাশাপাশি জানান, তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন।
এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”
হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।”
এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।
সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। তবে বাগদান নিয়ে নানা চর্চা চললেও সরাসরি একটি কথাও বলেননি হুমা কিংবা রচিত।
রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। রচিত সিং ওয়ার্কশপ নামে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, অনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা।
এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।
ঢাকা/শান্ত