জাকসু নির্বাচন: ২১টির মধ্যে ২০টি হলের ভোট গোনা শেষ
Published: 12th, September 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনে ২১টি হলের মধ্যে ২০টি ভোট গণনা শেষ হয়েছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত জসীমউদ্দিন হলের গণনা হয়নি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই হলের ভোট ২০ শতাংশের মতো গণনা হয়েছে, বাকি গণনার কাজ চলমান রয়েছে।
আরো পড়ুন:
জান্নাতুলের মৃত্যুর জন্য প্রশাসনের অব্যবস্থাপনাই দায়ী: রিটার্নিং কর্মকর্তা
ভোট গণনা চলবে, যেকোনো সহযোগিতা করতে প্রস্তুত: জাবি উপাচার্য
সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে জাকসু নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২১টি হলের গণনার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে তারপর শুরু হবে কেন্দ্রীয় সংসদ অর্থাৎ জাকসুর ভোট গণনা। আজ রাতের মধ্যেই গণনা শেষ করার চেষ্টা করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ করা হয়। ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় বাদে শুরু হয় গণনা। সেই গণনা চলছেই, এরই মধ্যে প্রায় ২২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও হলেরই গণনা এখনো শেষ করতে পারেনি জাকসু নির্বাচন কমিশন।
জাকসু ও হল সংসদে ২১টি ভোটকেন্দ্রে ছাত্র-ছাত্রী মিলে এবার মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৫৯ জন। নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সূত্র বলছে, মোট ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৮ হাজার ২৬ জন, শতাংশের হিসাবে যা ৬৮ দশমিক ২৫।
আলবেরুনী হলে মোট ২১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১২৫ জন, ভোট পড়েছে ৫৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।
আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের মোট ৩৩৩ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২১৬ জন, ভোট পড়েছে ৬৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
র মশাররফ হোসেন হলের মোট ভোটার ৪৬৪ জন, ভোটা দিয়েছেন ৩১০ জন। এই হলে ৬৬ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে মোট ভোটার ২৮০, ভোট পড়েছে ১৩৮টি। ভোটদানের হার ৪৯ দশমিক ২৯। এই হলে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে।
শহীদ সালাম-বরকত হলে ২৯৯ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২২৪ জন। এখানে ভোট পড়েছে ৭৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
মওলানা ভাসানী হলে ৫১৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৮৪ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণের হার ৭৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।
জাহানারা ইমাম হলে ৩৬৭ জনের মধ্যে ২৪৭ জন ভোট দিয়েছেন, ভোট পড়েছে ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।
প্রীতিলতা হলে ৩৯৯ ভোটারের মধ্যে ২৫০ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, ভোট পড়েছে ৬২ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪০৯ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৪৯, অংশগ্রহণ করেছেন ৬০ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
১০ নং (ছাত্র) হলে ৫২২ ভোটারের মধ্যে ৩৮১ জন ভোট দিয়েছেন। ভোটে অংশ নিয়েছেন ৭২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
শহীদ রফিক-জব্বার হলে ৬৫১ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৪৭০ জন, অর্থাৎ ৭২ দশমিক ২০ শতাংশ।
বেগম সুফিয়া কামাল হলের ৪৫৬ ভোটারের মধ্যে মাত্র ২৪৬ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ ৫৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
১৩ নম্বর ছাত্রী হলে ৫১৯ জনের মধ্যে ২৯২ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ ৫৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
১৫ নম্বর ছাত্রী হলে ৫৭১ ভোটারের মধ্যে ৩৫০ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ গৃহীত ভোট ৬১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫০ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ২৬১টি, অংশগ্রহণ ৭৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
রোকেয়া হলে ৯৫৫ জনের মধ্যে ৬৮০ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণ ৭১ দশমিক ২০ শতাংশ।
ফজিলতুন্নেসা হলে ৮০৩ ভোটারের মধ্যে ৪৮৯ জন ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ গৃহীত ভোট ৬০ দশমিক ৯০ শতাংশ।
বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের ৯৮৪ জনের মধ্যে ৫৯৫ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণ ৬০ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৩৫ ভোটারের মধ্যে ৫৬০ জন ভোট দিয়েছেন, অংশগ্রহণ ৭৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে সর্বাধিক অংশগ্রহণ দেখা গেছে। ৯৯১ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৮০৭ জন, ভোট পড়েছে ৮১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৪৭ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৭৫২ জন, অংশগ্রহণ ৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।
কাজী নজরুল ইসলাম হলের পর সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে (৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ) এবং ২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ৪৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর দশমবারের মতো জাকসু নির্বাচন হলো। এবার নির্বাচনে জাকসুর ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৭ প্রার্থী। নির্বাচনে বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থীদের সমর্থিত আটটি প্যানেল দিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার মধ্যাহ্নের পর থেকে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অভিযোগ আসতে থাকে। এসব অভিযোগ তুলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে পুননির্বাচনের দাবি করেছে। তবে জাকসুর নির্বাচন কমিশন এই দাবি পক্ষে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
এদিকে ভোট গণনার সময় অসুস্থ হয়ে একজন শিক্ষিকার মৃত্যু ঘিরে শোকাবহ পরিবেশ তৈরি হয়। কোনো কোনো শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, জাকসু নির্বাচন কমিশনের অবহেলায় এই মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জন ভ ট দ য় ছ ন ভ ট গণন কর ছ ন অর থ ৎ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
সার্চ দুনিয়ার নতুন দিগন্ত জিইও: দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কী প্
ইন্টারনেট সার্চ দুনিয়ায় চলছে নীরব এক বিপ্লব। তথ্য খোঁজার ধরন বদলে যাচ্ছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত। আগে যেখানে গুগলে উচ্চ র্যাংকিং মানেই ছিল সাফল্য, এখন সেই জায়গা নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-নির্ভর সার্চ টুল।
সার্চ জগতের নতুন চ্যালেঞ্জ
চ্যাটজিপিটি, গুগল জেমিনি, মাইক্রোসফট কপিলট কিংবা পারপ্লেক্সিটি এআই-এগুলো আর শুধু সার্চ ইঞ্জিন নয়, বরং উত্তর তৈরিকারক ইঞ্জিন। ব্যবহারকারী এখন শুধু ‘লিংক’ নয়, বরং সরাসরি উত্তর পেতে চায়। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই এসেছে নতুন এক কৌশল- জিইও বা জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
জিইও কী?
জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে আপনার ওয়েবসাইট ও কনটেন্ট এমনভাবে সাজানো হয় যাতে এআই-চালিত সার্চ ইঞ্জিন সহজেই আপনার তথ্য চিনতে, বুঝতে এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে সেটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
আগে ব্র্যান্ডগুলোর ফোকাস ছিল গুগলের প্রথম পাতায় জায়গা করে নেওয়া। কিন্তু এখন গুরুত্ব পাচ্ছে- চ্যাটজিপিটি বা জেমিনি-এর উত্তরে আপনার ব্র্যান্ডের নাম আসছে কি না!
এসইও বনাম জিইও: সার্চ দুনিয়ার নতুন যুগের পালাবদল
অনেকেই এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এবং জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এক মনে করেন, কিন্তু এদের মধ্যে মূলত লক্ষ্য ও কৌশল ভিন্ন। এসইও হচ্ছে পুরোনো পদ্ধতি, অন্যদিকে জিইও হচ্ছে নতুন পদ্ধতি।
* মূল লক্ষ্য
এসইও: সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক বাড়ানো
জিইও: এআই সার্চের উত্তরে দৃশ্যমান হওয়া
* কাজের ধরন
এসইও: কিওয়ার্ড ও ব্যাকলিংক ভিত্তিক
জিইও: কনটেক্সট, প্রাসঙ্গিকতা ও ব্র্যান্ড অথরিটি নির্ভর
* ফলাফল
এসইও: ক্লিক ও ট্রাফিক বৃদ্ধি
জিইও: ব্র্যান্ড উল্লেখ ও আস্থা বৃদ্ধি
* প্ল্যাটফর্ম
এসইও: গুগল, বিং ইত্যাদি সার্চ ইঞ্জিন
জিইও: চ্যাটজিপিটি, জেমিনি, পারপ্লেক্সিটি, এসজিই ইত্যাদি এআই সার্চ
এসইও এখনও গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ভবিষ্যতের সার্চ ইকোসিস্টেমে জিইও সমান অপরিহার্য হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশি ব্যবসার জন্য জিইও-এর গুরুত্ব
বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিক্ষা, ট্রাভেল, স্বাস্থ্যসেবা, ই-কমার্স, রিয়েল এস্টেট- প্রায় প্রতিটি খাতেই ব্যবসা অনলাইনে আরো দৃশ্যমান হতে চাচ্ছে। কিন্তু বদলেছে মানুষের সার্চ করার ধরন। এখন তারা শুধু গুগলে সার্চ করেই সন্তুষ্ট থাকছে না, তারা এআই-চালিত সার্চ টুলগুলো যেমন চ্যাটজিপিটি, জেমিনি বা পারপ্লেক্সিটি-এর মাধ্যমে সরাসরি উত্তর খুঁজছে।
গার্টনারের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রচলিত সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ ভলিউম প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যাবে- কারণ ব্যবহারকারীরা দ্রুতই এআই-চালিত সার্চ ও চ্যাটবটের দিকে ঝুঁকছে। (তথ্যসূত্র: Gartner, “Search Engine Volume Will Drop 25% by 2026, Due to AI Chatbots and Other Virtual Agents)
তবে এই পরিবর্তনের প্রভাব ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন, কেউ চ্যাটজিপিটি-তে লিখল, ‘ঢাকায় সেরা অ্যাকাউন্টিং ফার্ম কোনটি?’ যদি আপনার কোম্পানির নাম বা কনটেন্ট এআই-এর তৈরি উত্তরে না আসে, তাহলে সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট ও ব্যবসার সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে।
মূলত এখানেই জিইও-এর গুরুত্ব উঠে আসে। জিইও ব্যবহার করে কনটেন্ট এমনভাবে সাজানো যায় যাতে এআই সার্চ সিস্টেম আপনার ব্র্যান্ডকে সহজেই চিনতে পারে, বুঝতে পারে এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করে। অর্থাৎ, বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যবসা যদি এআই-এর দুনিয়ায় দৃশ্যমান থাকতে চায়, জিইও’র সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এখন আর বিকল্প নয়- এটি একান্ত প্রয়োজন।
জিইও’র জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (জিইও) কোনো একদিনে শেখার মতো বিষয় না- এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যেখানে ব্যবসাগুলোকে নিজেদের কনটেন্ট, উপস্থিতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা এআই-বান্ধব করে গড়ে তুলতে হয়। নিচে ধাপে ধাপে দেখা যাক, কীভাবে আপনি জিইও’র পথে প্রস্তুত হতে পারবেন।
১. অনলাইন উপস্থিতি যাচাই করুন
জিইও’র প্রথম ধাপ হলো আপনার ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের বর্তমান অনলাইন উপস্থিতি যাচাই করা। চ্যাটজিপিটি বা পারপ্লেক্সিটি-এর মতো এআই-চালিত সার্চ টুলে সার্চ দিন ‘বাংলাদেশে সেরা (আপনার ইন্ডাস্ট্রি)-এর কোম্পানিগুলো কোনগুলো?’
যদি সার্চের উত্তরে আপনার নাম না আসে, বোঝা যাবে যে আপনার এআই-দৃশ্যমানতা এখনও সীমিত। এই ক্ষেত্রে আপনাকে জিইও অনুযায়ী কনটেন্ট ও অনলাইন উপস্থিতি বাড়াতে কাজ শুরু করতে হবে।
২. বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করুন
জেনারেটিভ এআই সার্চ সিস্টেম সেই উৎসকেই অগ্রাধিকার দেয়, যা নির্ভরযোগ্য ও যাচাইযোগ্য। তাই আপনার ওয়েবসাইটে ব্র্যান্ড, টিম, যোগাযোগ ও রিভিউসহ সব তথ্য সম্পূর্ণ ও স্বচ্ছ রাখুন।
গুগল বিজনেস প্রোফাইল নিয়মিত আপডেট করুন- ঠিকানা, সময়, পোস্ট ও রিভিউসহ।
বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম ও ব্লগে ব্র্যান্ডের উল্লেখ বাড়ান।
E-E-A-T (Experience, Expertise, Authoritativeness, Trustworthiness) বজায় রাখুন।
এভাবেই এআই ও ব্যবহারকারীর কাছে আপনার ব্র্যান্ড একটি বিশ্বাসযোগ্য সোর্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে- যা জিইও সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
৩. কনভারসেশনাল কনটেন্ট লিখুন
এআই সার্চ এখন ব্যবহারকারীর প্রশ্নভিত্তিক অনুসন্ধানকে গুরুত্ব দেয়। তাই আপনার কনটেন্ট তৈরি করুন এমনভাবে যেন এটি প্রাকৃতিক প্রশ্ন ও কথোপকথনের মতো শোনায়। উদাহরণ: ‘Where can I find a trusted IELTS coaching center in Dhaka?’ ‘Where can I apply for a blue-collar job?’ এ ধরনের কনটেন্ট এআই-এর চোখে আরো সহজে বোঝার মতো হয় এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তর হিসেবে উল্লেখযোগ্য।
৪. বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকুন
এআই শুধু ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে না। এটি ফেসবুক, ইউটিউব, লিংকডইন, কোরা এবং অন্যান্য সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে। তাই বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত করা জিইও-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৫. এসইও এবং জিইও একসাথে ব্যবহার করুন
ডিজিটাল দুনিয়ায় এখন শুধু সার্চ র্যাংকই যথেষ্ট নয়। এসইও যেমন গুগল সার্চে আপনার কনটেন্টকে শীর্ষে নিয়ে আসে, তেমনি নতুন যুগের জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) আপনার ব্র্যান্ডকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সার্চে আরো দৃশ্যমান করে তোলে।
এসইও মূলত গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের অবস্থান উন্নত করে, আর জিইও শেখায়- কীভাবে এআই মডেলগুলো আপনার ব্র্যান্ডকে চিনবে, উল্লেখ করবে এবং বিশ্বাস করবে।
দুটি কৌশল একসাথে প্রয়োগ করলে অনলাইন উপস্থিতি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। একদিকে সার্চে দৃশ্যমানতা বাড়ে, অন্যদিকে এআই-নির্ভর প্ল্যাটফর্মগুলোতেও আপনার ব্র্যান্ডের নাম উঠে আসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
ভবিষ্যতের সার্চ জগতে টিকে থাকতে হলে এখনই সময়- এসইও এবং জিইও-কে একসাথে কাজে লাগানোর।
বাংলাদেশের ব্যবসার জন্য জিইও’র নতুন সম্ভাবনা
জিইও বাংলাদেশের ব্যবসাগুলোর জন্য হতে পারে এক গেম চেঞ্জার। আগে যেখানে অনলাইন দৃশ্যমানতা মানেই ছিল গুগলে র্যাংক করা, এখন সেটি ধীরে ধীরে স্থান ছেড়ে দিচ্ছে এআই সার্চ ভিজিবিলিটি–কে।
আজ যদি কোনো ব্যবহারকারী চ্যাটজিপিটি বা জেমিনি-তে জিজ্ঞেস করে-
‘বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য অনলাইন বই বিক্রির সাইট কোনটা?’
অথবা, ‘ঢাকায় সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি কারা?’
যদি আপনার ব্র্যান্ডের নাম সেই উত্তরে উঠে আসে, সেটিই হবে প্রকৃত দৃশ্যমানতা- শুধু ক্লিক নয়, বরং আস্থা, প্রভাব ও ব্র্যান্ড অথরিটি–এর প্রতিফলন।
বাংলাদেশে এখন প্রতিদিন শত শত নতুন অনলাইন ব্যবসা শুরু হচ্ছে- ই–কমার্স, এডুকেশন, হেলথটেক, রিয়েল এস্টেট, ফাইন্যান্স, এমনকি ছোট স্টার্টআপরাও দ্রুত ডিজিটাল হচ্ছে। কিন্তু একইসঙ্গে প্রতিযোগিতাও বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণে।
এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু এসইও নয়, জিইও–কেন্দ্রিক কৌশলও অপরিহার্য।
জিইও’র ভবিষ্যৎ
খুব শিগগিরই এআই সার্চ টেক্সটের বাইরে গিয়ে ভয়েস, ভিডিও ও ইমেজ কনটেন্ট থেকেও উত্তর তৈরি করবে। তখন জিইও কেবল ওয়েবসাইট নয়, বরং ভিডিও, পডকাস্ট, সোশ্যাল প্রোফাইল, নিউজ রিপোর্ট- সবকিছুর মধ্যেই প্রভাব ফেলবে।
তাই এখন থেকেই যারা জিইও-কেন্দ্রিক কৌশল গ্রহণ করবে, ভবিষ্যতের সার্চ রেভোলিউশনে নেতৃত্ব দেবে তারাই।
উপসংহার
জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (জিইও) শুধু নতুন ট্রেন্ড নয়- এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পরবর্তী অধ্যায়।
এসইও যেমন আপনাকে সার্চ রেজাল্টে নিয়ে যায়, জিইও তেমনি আপনাকে নিয়ে যাবে এআই–এর উত্তরে।
‘ভবিষ্যতের সার্চে র্যাংক নয়, ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতাই হবে সাফল্যের আসল মাপকাঠি।’
লেখক: হেড অব ওয়েব অ্যানালাইসিস অ্যান্ড এসইও ডিরেক্টর, ইন্টেলেক আইটি এলএলসি (ইউএসএ অ্যান্ড বাংলাদেশ)
ঢাকা/ফিরোজ