পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট আমজাদ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি ভারতের নাগরিক বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন তার শ্যালক সুমন কুমার রায়। সুখরঞ্জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে শ্বশুরের নামে লিজ নেওয়া সরকারি সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টারও অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগপত্রের সঙ্গে সরবরাহ করা ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র ও আধার কার্ড অনুযায়ী, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদমের সূর্যসেন পল্লির বাসিন্দা। তার বাবার নাম নির্মল চক্রবর্তী।

তবে, পাবনা শহরের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দাও তিনি। সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর ভারতীয় পরিচয়পত্রের তালিকাভুক্তির নাম্বার ০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭ এবং আধার কার্ডের নাম্বার ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১।

ভারতীয় জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্মতারিখ: ০১/০৯/১৯৬৯। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রেও তার জন্মতারিখ একই। সে হিসেবে তার বয়স ৫৬ বছর।

তবে, ভারতীয় নাগরিকত্বে অভিযোগ অস্বীকার করে সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, তার জন্ম পাবনায়। দাদার বাড়ি পাবনা শহরে। পৈত্রিক ভিটা পাবনার সুজানগরে। জন্ম ও লেখাপড়া পাবনাতেই। ১৯৮৬ সালে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। ১৯৯২ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক এবং ১৯৯৩ সালে একই কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২০০০ সাল থেকে পাবনায় স্থায়ীভাবে বাস করছেন। ওই বছরই সুজানগর উপজেলার ভবানীপুর ২ নাম্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি শুরু করেন তিনি। 

অভিযোগ করা হচ্ছে, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বাংলাদেশের চাকরিবিধি উপেক্ষা করেই প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন। তিনি ভারতের নাগরিক। সেখানে জমি কিনে বাড়িও করেছেন। তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভারতেই থাকেন। ছোট ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী হিসেবে ভাতা পাওয়ায় তাকে নিয়ে পাবনাতেই থাকেন সুখ রঞ্জন। মাঝে-মধ্যে ১৫ দিন থেকে ১ মাসের ছুটি নিয়ে তারা ভারতে যান। 

সুখ রঞ্জন তার শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে সরকারি লিজ নেওয়া সম্পত্তি জালিয়াতি করে নিজের নামে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ শ্যালক সুমন কুমার রায়ের।

এ বিষয়ে সুমন কুমার রায় বলেছেন, “আমার বাবা পাবনা শহরের মুরগি পট্টিতে সরকারি জমি লিজ নিয়ে বাস করতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর আমার মায়ের নামে লিজ দেওয়া হয়। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে না জানিয়ে শুধু আমার বোনকে একমাত্র উত্তরসূরি বানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন সুখ রঞ্জন। এমনকি পৌরসভাতেও আমার একমাত্র বোনকে উত্তরসূরি বানিয়ে আবেদন দিয়েছেন। আমার বাড়িতে বাস করে এখন আমাকেই বাড়িছাড়া করতে চান।”

পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর বলেছেন, “লিখিত অভিযোগ ও কাগজপত্র পেয়েছি। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে এ বিষয়ে তদন্ত হবে। অভিযুক্ত সুখ রঞ্জনকে তদন্তকালে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর  চিঠি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রমাণসাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযুক্ত শিক্ষক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, “এসব অভিযোগের ভিত্তি নেই। এসব কাগজপত্র বানানো যায়। মূলত, শ্যালক সুমন সম্পত্তি দখল করতে আমার পেছনে লেগেছে। এর আগে শ্বশুরের একটি দোকান বিক্রি করে খেয়েছে। এখন বাড়ি দখলের পাঁয়তারা করছে। কিন্তু, বাড়ি তো সরকারি। আমি কীভাবে দেবো? আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমি প্রমাণ দেবো যে, আমি ভারতীয় নাগরিক নই।”

ঢাকা/শাহীন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন শ য লক আম র ব তদন ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রামের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা জেএসসি পাস হতে হবে। জেএসসি ছাড়াদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

ভর্তির দরকারি তারিখ—

১. অনলাইনে ভর্তি এবং আবেদনের তারিখ শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৬।

২. অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের সনদবিহীন ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

৩. ওরিয়েন্টেশন ও টিউটোরিয়াল ক্লাস শুরু : ১৫ মে ২০২৬।

ভর্তির যোগ্যতা—

১. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণ হতে হবে। (ভর্তির তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

২. সরাসরি অনলাইন ভর্তির জন্য: osapsnew.bou.ac.bd

ভর্তির যোগ্যতা(জেএসসি ছাড়া) —

১. যেসব শিক্ষার্থীর জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের সনদপত্র নেই তারাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর (৩১/১২/২০২৫ তারিখে)।

২. এসব আবেদনকারীকে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৩. এ জন্য ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ফরম ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হবে।

৪. ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবণ্টন, তারিখ ও পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি’র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে। (অনলাইনে আবেদনের তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

প্রয়োজনীয় কাগজ যা লাগবে—

১. দুই কপি ছবি।

২. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণের সনদ।

৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।

ভর্তি ও অন্যান্য ফি—

অনলাইন আবেদন ফি: ১০০ টাকা,

রেজিস্ট্রেশন ফি : ১০০ টাকা,

কোর্স ফি (প্রতি কোর্স ৫২৫ টাকা): ৩৬৭৫ টাকা,

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) ব্যবহারিক ফি: ১০০ টাকা,

একাডেমিক ক্যালেন্ডার ফি:৫ টাকা,

ডিজিটাল আইডি কার্ড ফি: ২০০ টাকা,

পরীক্ষা ফি (প্রতি কোর্স ৫০ টাকা) : ৩৫০ টাকা,

প্রথম বর্ষ নম্বরপত্র ফি : ৭০ টাকা,

মোট আবেদন ফি: ৪৬৯৬ টাকা।

বিজ্ঞান শাখার জন্য দুটি ব্যবহারিক কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা জমা দিতে হবে।

দরকারি তথ্য—

১. অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাসের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদত্ত সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী একই রকম হতে হবে।

২. জেএসসি বা জেডিসি পাসের ক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসি সনদ অনুযায়ী হতে হবে। ২০২০ সাল কিংবা তার পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদে বা প্রমাণকে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। সনদবিহীনদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে।

৩. তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা কোর্স ফির শতকরা ৬০ ভাগ ছাড় পাবেন।

# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
  • সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন