মাইকে ঘোষণা দিয়ে কুমিল্লার ৪ মাজারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
Published: 18th, September 2025 GMT
কুমিল্লার হোমনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে চারটি মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি মাজার আঙিনায় থাকা তিনটি বসতঘর ভাঙচুর শেষে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে পৃথক চারটি মাজারে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আতঙ্ক বিরাজ করছে মাজারের ভক্তদের মধ্যে।
হামলার শিকার ওই চারটি মাজার হচ্ছে আসাদপুর গ্রামের আলেক শাহের বাড়িতে অবস্থিত তাঁর বাবা কফিল উদ্দিন শাহের মাজার, একই গ্রামের আবদু শাহের মাজার, কালাই (কানু) শাহের মাজার এবং হাওয়ালি শাহের মাজার। হাওয়া বেগম নামে এক নারী ‘হাওয়ালি শাহ’ মাজার পরিচালনা করেন। তবে সেখানে কোনো ব্যক্তি সমাহিত নেই। ওই বাড়িতে মাজারসদৃশ স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আলেক শাহর ছেলে মহসিন তাঁর ফেসবুকে আইডি থেকে বুধবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় স্থানীয় একদল মানুষ হোমনা থানার সামনে জড়ো হয়ে মহসিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে ওই দিন দুপুরেই পুলিশ মহসিনকে আটক করে। পরে তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মহসিনকে কুমিল্লার আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। এর আগে গত ২৯ আগস্টও মহসিন ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননামূলক পোস্ট করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাজারে ভাঙচুরের পাশাপাশি বসতবাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আসাদপুর গ্রামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মহস ন
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে মার্কিন সামরিক উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ বাম জোট, আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
যৌথ সামরিক মহড়ার নামে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সামরিক বিমান ও সেনাসদস্যদের উপস্থিতির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। অবিলম্বে ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের’ এসব তৎপরতা বন্ধ না করলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
আজ বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাম জোট। বিবৃতিতে সই করেছেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী।
বিবৃতিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নানামুখী অপতৎপরতা চলছে। এ সময় এ ধরনের সেনাদের উপস্থিতি এই অপতৎপরতাকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে।
বাম জোট বলেছে, ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ নামের এই যৌথ মহড়ার আওতায় বাংলাদেশে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি অনুমোদন দিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তার এখতিয়ারের বাইরে বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করে চলছে। এটি বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ এবং নিরাপত্তার পরিপন্থী।
বাম জোটের অভিযোগ, চট্টগ্রামের মতো স্পর্শকাতর ভৌগোলিক অঞ্চলে, গভীর সমুদ্রে মার্কিন বাহিনী বহু আগে থেকেই সামরিক ঘাঁটি করার জন্য লোলুপ দৃষ্টি ফেলে রেখেছে। উপরন্তু মিয়ানমার সীমান্ত এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমস্যা বিদ্যমান। সেই সঙ্গে এখানে দেশের তিন বাহিনীর অনেক গোপনীয় এবং স্পর্শকাতর স্থাপনা রয়েছে। এ রকম একটি এলাকায় মার্কিন এই সামরিক উপস্থিতি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের পূর্ণাঙ্গ বিবৃতিও দাবি করেছে বাম জোট। অবিলম্বে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এসব তৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়ে তারা বলেছে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২৫–৩ মহড়া এগিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সহযোগিতা১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫