তাপমাত্রা আরও বাড়ল, কমতে পারে বুধবার থেকে
Published: 13th, January 2025 GMT
রাজধানীতে শীত সাধারণত দেরিতে পড়ে। শীতের অনুভূতিও এখানে কম থাকে। সেই তুলনায় দেশের উত্তর জনপদসহ বিভিন্ন স্থানে শীত পড়তে থাকে সেই আশ্বিনের শেষ দিক থেকেই। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত দেশের কোনো স্থানেই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি। মাঝে একদিন শুধু তেঁতুলিয়ায় মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত শীতের তীব্রতা তেমন নেই, এ কথা বলছেন আবহাওয়াবিদেরাই।
গত ডিসেম্বরের একেবারে শেষ দিকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। কয়েক দিন থাকার পর তা আবার কমে আসে। মাঝে দিন তিনেক ঘন কুয়াশাও ছিল। এরপর শীত কমেছে আবার বেড়েছে। তিন দিন মাঝারি থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর গতকাল রোববার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামীকাল মঙ্গলবারও উত্তরের কিছু এলাকা বাদ দিয়ে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। কিছু স্থানে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
তবে আগামী বুধবার থেকে তাপমাত্রা আবার কমতে পারে। সেই দফায় অবশ্য তীব্র শৈত্যপ্রবাহের তেমন সম্ভাবনা নেই। আজ সকালে এ কথা বললেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকালের চেয়ে বেড়েছে। তবে আজও দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশা পড়েছে। সকালের পর থেকে সেই কুয়াশা কেটেও গেছে।
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে, ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে, ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ উত্তরের এই জনপদে তাপমাত্রা বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশের ‘শীতের হটস্পট’ নামে পরিচিত এলাকাগুলোতেও গতকালের চেয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে। আজ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল তা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল তা ছিল ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি। চায়ের দেশ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল এর চেয়ে প্রায় ২ ডিগ্রি কম ছিল তাপমাত্রা।
আজ বেড়েছে রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও। আবহাওয়ার বার্তা অনুযায়ী তা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চলতি বছরে শীতের মধ্যেও টানা শৈত্যপ্রবাহ হয়নি। শীত বাড়ছে আবার কমছে। এ বছর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশি থাকার জন্যই এমনটা হচ্ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলছিলেন, ‘দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল রেকর্ড করা হয়েছিল ফেনীতে, ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় তা ২৯ দশমিক ১ ডিগ্রি। শীতের দিন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আসলে কিছুটা বেশিই বলা যায়।’
শীতের শেষ হয়নি। তাই শীত যে আরও পড়বে না, তা কিন্তু বলছেন না আবহাওয়াবিদেরা। জানুয়ারি মাসের অর্ধেকটা পড়ে আছে। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশে মেঘ আছে। মেঘ কেটে গেলে শীত বাড়ে। তাই শীতের তীব্রতা বাড়ারও সম্ভাবনা রয়ে গেছে, বললেন হাফিজুর রহমান।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।