টিসিবির কার্ড বিতরণকে কেন্দ্র করে যশোরের শার্শা উপজেলার কন্দবপুর গ্রামে বিএনপির দুই নেতার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে পরে তিনি বাড়িতে আগুন ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ৬-৭ জনকে আসামি করে দুটিমামলা হয়েছে। 

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শার্শার কন্দবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও আজ মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- কন্দবপুর গ্রামের রেজাউল ওরফে সোনা মিয়ার ছেলে আসাদুল ও তার ভাই তোতা, আক্তারুজ্জামান, সিদ্দিকের ছেলে শাহিন, গোলাম মোক্তাদির ছেলে কবির হোসেন, আক্তারের ছেলে সম্রাট, কাদেরের ছেলে আবুজার, রবিউলের ছেলে আলম, ঝড়ু মিয়ার ছেলে মোহাম্মাদ ও জুব্বারের ছেলে হাবিবুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টিসিবির কার্ড বিতরণকে কেন্দ্র করে কন্দবপুর গ্রামের রবিউলের চায়ের দোকানে নিজামপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামারুল ইসলাম ও যুগ্ম সম্পাদক আশাদুল ইসলামের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আসাদুল তার চাচা সুজন মেম্বারের নির্দেশে দেশিয় অস্ত্র, বোমাসহ প্রথমে রবিউলের দোকানে হামলা চালানো হয়। এর পর দোকানে আগুন দিয়ে তারা হামলা চালায় কামারুল ও ঝর্ণা বেগমের বাড়িতে। তাদের হাতে রড, দা ও বোমা দেখে বাড়ির পুরুষরা পালিয়ে যায়। তখন দুর্বৃত্তরা বাড়িতে আগুন দেয়। এসময় মুরগির খামার, ধানের গোলা, গোখাদ্য বিচালির গাদায় আগুন দেয়। 

ভুক্তভোগী চা দোকানদার রবিউল ইসলাম বলেন, কামারুল ও আশাদুল বিএনপি করেন। টিসিবির কার্ড বিতরণকে কেন্দ্র করে আমার চায়ের দোকানে হাতাহাতি হয় তাদের। আমি তাদের থামিয়ে দেয়। পরে আসাদুল তার লোকজন এনে আমার দোকান ভাঙচুর করে আগুন দেয়। 

ঝর্ণা বেগম বলেন, তারা রাতে কামরুলের বাড়িতে যখন হামলা করছিল তখন তাদের আমি নিষেধ করি। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে আমার গোখাদ্যের গাদায় আগুন দেয়।

বিউটি খাতুন বলেন, আসাদুল তার দলবলসহ রাতে বাড়িতে এসে আমাদের ঘর, মুরগির খামার, ধানের গোলায় আগুন দেওয়ার পর লুটপাট চালায়। বাধা দিতে গেলে তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং হত্যার হুমকি দেয়। 

ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামারুল বলেন, আসাদুল ও তার ভাই তোতা আমার বাড়িতে আগুন দেয় ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে শার্শা থানায় মামলা করা হয়েছে।

শার্শা থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, শার্শার কন্দবপুর গ্রামে বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সামাজিক নিরাপত্তা ও বৃত্তির অর্থ যাবে পছন্দের হিসাবে 

সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্য কার্যক্রমের নগদ অর্থ উপকারভোগীরা নিজেদের পছন্দের ব্যাংক বা এমএফএস হিসাবে নিতে পারবেন। বিতরণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ভাতা বিতরণে কোনো ব্যাংক বা মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে দিতে পারবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সম্প্রতি সরকারের এ সিদ্ধান্ত পরিপত্র আকারে জারি করেছে। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে উপকারভোগীরা তাদের পছন্দমতো হিসাবে সরকারি ভাতার টাকা নিতে পারবেন। এ ছাড়া এমএফএস এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অভিন্ন ক্যাশ আউট চার্জ শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্যাশ আউট চার্জ সরকার পরিশোধ করবে। আগামী ১ জুলাই থেকে সরকারি ভাতা বিতরণের নতুন এ নিয়ম কার্যকর হবে। জানা গেছে, বর্তমানে চার্জ রয়েছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা সমকালকে জানান, সরকার থেকে ব্যক্তি (জি-টু-পি) পদ্ধতিতে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার পাশাপাশি শিক্ষা উপবৃত্তি এবং অন্যান্য নগদ হস্তান্তর সম্পন্ন হয়। আগামী অর্থবছর থেকে উপকারভোগীরা এ ধরনের অর্থ তাদের পছন্দের অ্যাকাউন্টে নিতে পারবেন। ভাতাভোগীদের নতুন করে কোনো হিসাব খুলতে হবে না।

২০২১ সালে এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদকে ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নগদ দায়িত্ব পায় ৪০টি জেলার। বাকি ২৪টি জেলায় অন্যান্য এমএফএস ও ব্যাংকের মাধ্যমে ভাতা দেওয়া হয়।  

অর্থ বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভাতা বিতরণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা এখন থেকে তাদের পছন্দমতো কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না। ফলে সারাদেশের যে কোনো জায়গার ভাতাভোগীরা তাদের নিজেদের পছন্দের হিসাবে ভাতার টাকা গ্রহণ করতে পারবেন।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য নগদ অর্থ ক্যাশ আউট চার্জসহ একসঙ্গে পাঠাতে হবে। নগদ বিতরণের ক্ষেত্রে এমএফএস বা ব্যাংক উপকারভোগীর ওপর কোনো ধরনের চার্জ আরোপ করতে পারবে না। ইফটি রিটার্নের ক্ষেত্রে ক্যাশ আউট চার্জসহ সরকারকে ফেরত দিতে হবে। ইএফটির রিয়েল টাইম ট্র্যাকিংয়ের জন্য অর্থ বিভাগের সিঙ্গেল রেজিস্ট্রি সিস্টেমে প্রতিটি এমএফএস এবং ব্যাংক সংযোগ স্থাপন আগামী ২৯ মে’র মধ্যে শেষ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামাজিক নিরাপত্তা ও বৃত্তির অর্থ যাবে পছন্দের হিসাবে