রাবির স্থগিত ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন শুরু সোমবার
Published: 26th, January 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়ার স্থগিত প্রাথমিক আবেদন শুরুর তারিখ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। এবারের ভর্তি পরিক্ষায় প্রাথমিক আবেদন ফি ৫৫ টাকা থেকে কমিয়ে ২২ টাকা নির্ধারণ করেছে প্রশাসন।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্থগিতকৃত প্রাথমিক আবেদন ২৭ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলবে। চূড়ান্ত আবেদন তিন ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপে মনোনীত শিক্ষার্থীরা আগামী ১১ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত আবেদন করতে পারবেন। প্রথম ধাপে আবেদন পূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে দ্বিতীয় দফায় ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি এবং তৃতীয় দফা ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চূড়ান্ত আবেদন চলবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভর্তি পরীক্ষা পূর্বনির্ধারিত ‘বি’ (বাণিজ্য) ইউনিট ১২ এপ্রিল, ‘এ’ (মানবিক) ইউনিট ১৯ এপ্রিল এবং ‘সি’ (বিজ্ঞান) ইউনিট ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর-এ অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে।
গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব। ৫ জানুয়ারি থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। উপাচার্যের ওই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে পোষ্য কোটা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে ৪ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন সাময়িকভাবে স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পোষ্য কোটার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় কোনো পোষ্য কোটা থাকছে না। বাতিলের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে ভর্তি উপ-কমিটি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ