ইনকিলাব মঞ্চের পুলিশ সদর দপ্তর ঘেরাও মিছিল আটকালো হাইকোর্ট মোড়ে
Published: 31st, January 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে নিহতদের নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং গণহত্যায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারসহ পাঁচ দাবিতে পুলিশ সদর দপ্তর ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে ইনকিলাব মঞ্চের মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। পরে দাবির একটি স্মারকলিপি তুলে দিয়ে শনিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আলটিমেটাম বেঁধে দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন তারা।
শুক্রবার দুপর সাড়ে তিনটায় শাহবাগ থানার সামনে থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট মোড়ে যেতেই মিছিলটি আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ লাঠি হাতে অবস্থান নেন। পরে সেখানে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
এ সময় ডিএমপির রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, ‘আপনারা এমন কিছু করবেন না যাতে আমাদের কাজ করতে সমস্যা হয়। এতে রাষ্ট্র দুর্বল হয়ে পড়বে। এখানে যারা পুলিশ সদস্য আছেন সবাই ঢাকায় নতুন, জুলাইয়ে আমাদেরও ব্যাপক ভূমিকা ছিল। আপনাদের দাবিদাওয়া আমার কাছে দেন। আমি কালকে আইজিপির কাছে পৌঁছে দেব।’
এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি পাঁচদফা দাবি তুলে ধরে জানান, তারা (পুলিশ) কথা দিয়েছেন আমাদের পাঁচ দফা আইজিপির কাছে পৌঁছে দেবেন। আমরা নিশ্চিত হতে চাই আগামীকাল সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে পাঁচ দফা দাবির ব্যাপারে আপডেট জানানো হবে। এমনটি না হলে কর্মসূচি ঘোষণা না দিয়ে আমরা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বারান্দায় অবস্থান নেব। পরে ইনকিলাব মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ফাতিমা তাসনিম ঝুমা রমনা জোনের ডিসির হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন।
ইনকিলাব মঞ্চের পাঁচ দফা দাবি হচ্ছে- জুলাই গণহত্যায় সরাসরি জড়িত সব পুলিশকে অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; জুলাই আন্দোলনে নিহত এবং এ আন্দোলনের কর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা, মিথ্যা প্রতিবেদন ও হয়রানিতে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; ছাত্রলীগের নেতাকর্মী যারা পুলিশ বাহিনীতে আছে তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে হবে; জুলাই গণহত্যার দায়ে তিরস্কৃত ও বদলি হওয়া পুলিশদের তালিকা জনমক্ষে প্রকাশ করতে হবে এবং দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে জুলাই গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি করা বন্ধ করতে হবে। এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য গণহত য সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।