লায়লাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় টিকটকার প্রিন্স মামুনের বিচার শুরু
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার লায়লা আখতার ফরহাদের করা মারধর, হত্যাচেষ্টা মামলায় টিকটকার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন। এদিন আসামি মামুন আদালতে হাজির হন। তার পক্ষে আইনজীবী এ মামলার দায় হতে অব্যাহতির আবেদন করেন। অপরদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। এসময় আদালত আসামি পক্ষের আবেদন নামঞ্জুর করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান সমকালকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লায়লার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মারধর, হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানায় প্রিন্স মামুনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন লায়লা। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, প্রিন্স মামুনের সঙ্গে তিন বছর আগে লায়লার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই পরিবারের সম্মতিতে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে তার বিয়ের কথাবার্তাও চূড়ান্ত হয়। তখন থেকে প্রিন্স মামুন লায়লার বারিধারার ডিওএইচএস এর বাসায় বসবাস করতে থাকেন। এরপর থেকে প্রিন্স মামুন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে লায়লার কাছ থেকে টাকা নিতেন। প্রায় সময় মাদক সেবন করে গভীর রাতে বাসায় প্রবেশ করতেন। বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় কথা বলতেন। এমনকি মাঝে মধ্যে লায়লাকে মারপিট করতেন মামুন। এছাড়া বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি আদায়ের পাঁয়তারা করতেন।
আরও জানা যায়, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর লায়লা-মামুন উত্তরার একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে বাসায় আসেন। এসময় মামুনসহ আরও দুজন মদ পান করার জন্য মিরপুরে যাওয়ার পরামর্শ করেন। এসময় লায়লা তাকে নিষেধ করেন এবং বাধা দেন।। এতে মামুন উত্তেজিত হয়ে লায়লাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তিনি লায়লাকে মারধর করেন, হত্যার চেষ্টা করেন।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ। পরে ওই বছরের ৩ জুন অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। পরদিন ৪ জুন মামুন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি।
আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি।
তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।
আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।
তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনেন তারা।