বেলা গড়াতেই খুলনার রূপসা নদীর দুই পাড়ে ভিড় করতে শুরু করেছেন মানুষ। কারণ, প্রায় তিন বছর পর এ নদীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন।

১১ বছরের নাতিকে নিয়ে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছেন শফিকুল ইসলাম। রূপসার পশ্চিম পাড়ে কাস্টমস ঘাট এলাকায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান ছেলেমেয়েরা নৌকাবাইচ সম্পর্কে কিছু জানে না। তারা সারা দিন মোবাইল নিয়ে পড়ি থাকে। অথচ নৌকাবাইচ ছিল আমাদের খুশির বড় উৎসব। কোনো জায়গায় নৌকাবাইচ হবে শুনলিই সেখানে দলবল নিয়ে চলি যাতাম। নৌকা বাইচ কেমন, তা–ই দেখাতি নাতিকে নিয়ে আইছি।’

আয়োজকেরা বলেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্তের অন্তত ১০টি নৌকা। ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। বাইচ হবে খুলনার ১ নম্বর কাস্টমস ঘাট থেকে খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) পর্যন্ত।

গতকাল মঙ্গলবার নৌকাবাইচ আয়োজন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো.

ফিরোজ সরকার বলেন, নতুন প্রজন্মকে মাদক থেকে দূরে রেখে উৎপাদনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত রাখতে এবং খুলনাবাসীকে নির্মল বিনোদন উপভোগের সুযোগ করে দিতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক