শরীয়তপুরে বিএনপির ৬টি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
Published: 9th, February 2025 GMT
শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপির ছয়টি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিলুপ্ত করা কমিটিগুলো হলো ভেদরগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা, ডামুড্যা উপজেলা ও পৌরসভা, গোসাইরহাট উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে এমন দাবি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি আবুল হাসেন ঢালী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে আমাদের কমিটি বিলুপ্ত করেছেন। বিষয়টি তাঁর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাইনি। আমার এখান থেকে নির্বাচন করতে চান ও আমাদের নেতা তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ এক নেতা আমাকে জানিয়েছেন দলীয় প্রয়োজনে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি অথবা মূল কমিটি দেওয়া হবে।’
ডামুড্যা উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাহাদাৎ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটির মেয়াদ নেই। আমরাও চাইছিলাম কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠন করা হোক। সামনে নির্বাচন, অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তাই নেতা-কর্মীর কার্যক্রম ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করা জরুরি। তাই নতুন কমিটিরও প্রয়োজন।’
শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন ইউনিটের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। তাই দলের কর্মীদের গতিশীল করতে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন কমিটি করে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। সেখানে সরাসরি কমিটি গঠনও করা হতে পারে। আবার তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে সম্মেলনের মাধ্যমেও কমিটি গঠন করা হতে পারে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ল প ত কর ব এনপ র কম ট র আম দ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল