সিরাজদিখান থানায় হামলা, ৪ গাড়ি ভাঙচুর
Published: 12th, February 2025 GMT
রোমান শেখ (১৬) নামে নিখোঁজ এক কিশোরের সন্ধান চেয়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় হামলা চালিয়েছে স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় তারা থানা, সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয় এবং থানার মাঠে থাকা চারটি গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হামলা হয় বলে জানান মুন্সীগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাদিখান সার্কেল) ইমরান খান।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে হামলার ঘটনায় ২৩৯ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ৩৪
গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ সকালে নিখোঁজ রোমানের সন্ধান চেয়ে সিরাজদিখান থানা সংলগ্ন বাজার এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পরে তারা থানায় হামলা করেন। এসময় তারা থানার বিভিন্ন কক্ষের সরঞ্জাম ও সহকারী পুলিশ সুপারের অফিসের জানালার থাই গ্লাস ভাঙচুর করেন। এছাড়া থানার মাঠে থাকা পুলিশেরসহ চারটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধরা।
রোমানের বাবা মিরাজ শেখ জানান, স্কুলে পড়ালেখার পাশাপাশি রোমান ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করতো। গত ২১ জানুয়ারি রোমান বাড়ি থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ রয়েছে। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও রোমান এবং তার অটোরিকশাটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। এঘটনায় পরে তিনি সিরাজদিখান থানায় মামলা করেন।
মুন্সীগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাদিখান সার্কেল) ইমরান খান বলেন, “বিক্ষুব্ধদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা তিনদিনের আল্টিমেটাম দিয়ে চলে যায়।”
এ বিষয়ে জানতে সিরাজদিখান থানার ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেনি। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রতন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস