ফরিদপুরে বরযাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নারীর মৃত্যু, আহত ৪০
Published: 15th, February 2025 GMT
ফরিদপুরে বরযাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪০ জন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ফরিদপুরের নগরকান্দার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই নারীর নাম মুক্তি রানী দাস (৪৫)। তিনি রাজবাড়ী সদরের বিনোদপুর মহল্লার দিলু কুমার দাসের স্ত্রী।
ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বাসটিতে ৫০ জনের মতো বরযাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৪০ জন আহত হন। আহত বরযাত্রীদের মধ্যে ৩০ জনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঠানো হয়েছে। বাকি ১০ জনকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডমাস্টার মো.
ঘটনার বিবরণ দিয়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মামুন বলেন, বরিশালের গৌরনদীতে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাজবাড়ীতে যাচ্ছিল বরযাত্রীবাহী বাসটি। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এলে বাসচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধার করে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানায় নেওয়া হচ্ছে।
নগরকান্দা ফায়ার সার্ভিসের সদস্য নিরঞ্জন কুমার মণ্ডল বলেন, ঘটনার পর স্থানীয় মানুষের সহায়তায় সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রায় ২ ঘণ্টা বাসের নিচে চাপা পড়ে ছিলেন বাসচালকের সহকারী। পরে সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভুয়া র্যাবকে ধাওয়া দিল আসল র্যাব, পথে দুই পক্ষকেই পেটাল জনতা
জোরে হর্ন দিতে দিতে দ্রুতগতিতে ছুটছিল একটি মাইক্রোবাস। সেটির কিছুটা পেছনে ছুটছিল আরেকটি মাইক্রোবাস। বিষয়টিকে অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রথম মাইক্রোবাসটিকে থামান স্থানীয় লোকজন। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের র্যাব বলে পরিচয় দেন। তবে তাঁদের কারও গায়ে র্যাবের পোশাক ছিল না। সন্দেহ হয় স্থানীয় লোকজনের। ওই ব্যক্তিরা পালাতে চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে মারধর শুরু করেন স্থানীয় লোকজন।
এমন সময়ে সেখানে পৌঁছে যায় দ্বিতীয় মাইক্রোবাসটি। এতে ছিলেন র্যাবের প্রকৃত সদস্যরাই। যদিও কয়েকজনের গায়ে ইউনিফর্ম ছিল না। তাঁরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয় লোকজনের রোষের মুখে পড়ে তাঁরাও পিটুনির শিকার হন। একপর্যায়ে স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে শান্ত করে এই দুই পক্ষকেই উদ্ধার করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চর যশোরদী ইউনিয়নের জয় বাংলার মোড় এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে; গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আমীরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জনতার হাত থেকে র্যাব ও ভুয়া র্যাব সদস্যদের উদ্ধার করে নগরকান্দা থানায় নিয়ে আসা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁদের নিয়ে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার উদ্দেশে যান।
মারধরের শিকার ভুয়া র্যাব পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা হলেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ছাব্বিশপাড়া গ্রামের স্বপন খান (৪৫), চাঁদপুর সদরের মদনা গ্রামের মিন্টু গাজী (৪৫), গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কুনসিবাড়ি গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আন্ডারচর এলাকার মো. জামিল (৩২) এবং ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হিদাডাঙ্গা গ্রামের দিদার (২৯)। তাঁদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে র্যাব-১০–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা দুজন সোনা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডাকাতি করেছিলেন।
র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তারিকুল ইসলাম বলেন, র্যাব-১০–এর হেডকোয়ার্টার থেকে একটি টিম ডাকাত দলকে ধাওয়া করে আসছিল। স্থানীয় লোকজন ভুল বুঝে উভয় পক্ষের ওপর চড়াও হন। কিছু র্যাবের সদস্যরা সাদাপোশাকে থাকায় উত্তেজিত লোকজন তাঁদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রকৃত র্যাব বলে চিনতে ভুল করেন।
র্যাব-১০ মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ভুয়া র্যাবের দলকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ধাওয়া করে নিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের টোল দিয়ে বের হয়ে যেতে পারলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ধরা গেছে।’ নিজেরাও মারধরের শিকার হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ যখন ভুয়া র্যাব পরিচয়কারীদের মারপিট করছিলেন, তখন তাঁদের যাতে মেরে না ফেলেন, এই আশঙ্কায় আমরা জনগণের পিটুনি থেকে তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করি। তবে প্রথম পর্যায়ে জনগণ আমাদেরও ভুয়া র্যাব মনে করেছিলেন। এ কারণে আমাদের সঙ্গে কিছু ঘটনা ঘটেছিল, তবে তা আমলযোগ্য নয়।’