কুষ্টিয়ার মিরপুরে চোর সন্দেহে এক নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার পোড়াদহ বাজারে মেহেদী ফাতেমা বস্ত্রবিতানে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত আবু জাফর মিরপুর উপজেলার কাটদহ গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হক বিশ্বাসের ছেলে ও মেহেদী ফাতেমা বস্ত্রবিতানের মালিক। নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা ও মারধরের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীর হাত ধরে রেখেছেন আবু জাফর। এ সময় তিনি কর্মচারীকে মোবাইলে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে বলেন। কিন্তু, ওই নারী বার বার বলেন, আমি আর করব না; এবারের মত ক্ষমা করে দেন। আমার সংসার ভেঙে যাবে। অনেক অনুরোধ করা স্বত্বেও আবু জাফর তার গায়ের ওড়না কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর সবার সামনে মারধর করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবু জাফর বলেন, ‘‘প্রতিদিন দোকানে চুরি হচ্ছে। শনিবার দুপুরে ওই নারীকে চুরির মালামালসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে সামান্য মারধর করে ছেড়ে দিই।’’

এলাকাবাসী বলছেন, পুরুষ হয়ে এক নারীকে মারধরের বিষয়টি ন্যক্কারজনক। ওই নারী যদি সত্যি চোর হয়ে থাকেন, তাহলে তাকে পুলিশে দেওয়া উচিত ছিল।

মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি ন্যক্কারজনক। তবে, এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।

বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ