নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ছেলের ফেসবুকে লাইভ দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মফিজুর রহমানের বাড়িতে দুই দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ও রাত ৯টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি নেতার কুরিপাড়ার বাড়িতে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মফিজুর রহমান উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি। সম্প্রতি তাঁর বড় ছেলে দাউদ উর রহমানকে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিবের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত রোববার রাত ৮টার দিকে দাউদ উর রহমান ফেসবুক লাইভে এসে নাম না করে বিএনপির কয়েকজন স্থানীয় নেতার চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে অভিযোগ করেন। ওই লাইভের সূত্র ধরেই মফিজুরের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

হামলার শিকার মফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ছেলের ফেসবুক লাইভ শেষ হলে একই দিন রাত ১১টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষা চন্দ্র দাস তাঁর মুঠোফোনে ফোন করে ছেলের ফেসবুক লাইভ মুছে দিতে বলেন। এরপর গত সোমবার রাত ১০টার দিকে একদল যুবক তাঁর বাড়ির আশপাশে মহড়া দেন। স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিলে তাঁরা তাঁর ছেলেকে হুমকি দিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় তাঁর ছেলে বেগমগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

মফিজুর রহমানের অভিযোগ, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। ওই সময় তাঁরা তাঁর বসতঘরের দরজা-জানালা, তিনটি মোটরসাইকেল, আসবাবপত্র, টিনের বেড়া ভাঙচুর করেন। সন্ত্রাসীদের হামলায় তাঁর ছেলে দাউদ, স্ত্রী পারভীনসহ পরিবারের পাঁচজন আহত হয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষা চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিএনপি নেতা মফিজুর রহমানকে ফোন করেননি কিংবা কোনো ধরনের হুমকিও দেননি। তাঁর (বিএনপি নেতা মফিজুর) ছেলে ছাত্রদলের সদস্যসচিব দাউদ ইসলামকে মাদক সেবন, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের কারণে চার মাস আগে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ কারণে তাঁরা নিজেরাই নিজেদের ঘর ভাঙচুর করে মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছেন।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এটা মনে হয় তাদের দলীয় কোন্দল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তিন থেকে চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ল র ফ সব ক ব গমগঞ জ ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কারের প্রশ্নে ব্যক্তি–দলের স্বার্থের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে: নুরুল হক

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, আর কোনো শাসক যাতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পথ অনুসরণ করে নাগরিকদের নিপীড়নসহ দেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে না পারে, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সংস্কার প্রশ্নে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের চেয়ে দেশকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংস্কার প্রশ্নে গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের শুরুতে নুরুল হক এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে আজ গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

বৈঠকের শুরুতে নুরুল হক বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বান থাকবে, যে সংস্কারগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে, সেগুলো যেকোনো মূল্যে এই সরকারের অধীনেই বাস্তবায়ন করতে হবে।

নুরুল হক বলেন, বিগত ১৬ বছরে দেশের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হয়ছিল। গণ অধিকার পরিষদ নবীন রাজনৈতিক দল হলেও ২০১৮ সাল থেকে তাঁরা মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার।

বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নতুন অধ্যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে।

সম্মিলিতভাবে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, তাঁদের লক্ষ্য দ্রুততম সময়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।

সংস্কার প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, শুধু আলোচনার মধ্য দিয়েই সংস্কার বাস্তবায়ন হবে না। সবার একত্রিত থাকার তাগিদ সব সময় জারি রাখতে হবে।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

আলোচনায় গণ অধিকার পরিষদের ১০ সদস্যদের প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে। নুরুল হক ছাড়া প্রতিনিধিদলে রয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র ফারুক হাসান, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য খালিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান রিজু, সাকিব হোসেন, দপ্তর সম্পাদক শাকিলুজ্জামান, সহমানবাধিকার–বিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা দিশা, যুব উইংয়ের সদস্য মুমতাজুল ইসলাম, গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোয়াখালীতে গুলি করে হত্যা: থানায় মামলা, অস্ত্র উদ্ধার
  • স্বেচ্ছাশ্রমে চট্টগ্রামে খাল খনন করছে বিএনপি
  • গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের ওপর নির্ভর করবে সংলাপের সাফল্য: আলী রীয়াজ 
  • নোয়াখালীতে যুবককে গুলি করে হত্যা, ৩ জনকে আটক করে গণধোলাই
  • যুবককে তুলে নিতে বাধা, গুলিতে প্রাণ গেল যুবদল কর্মীর
  • অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
  • জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ
  • সংস্কারের প্রশ্নে ব্যক্তি–দলের স্বার্থের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে: নুরুল হক