পর্দা নামল তিন দিনব্যাপী বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের
Published: 22nd, February 2025 GMT
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার প্রদানের মধ্যদিয়ে পর্দা নামলো তিনব্যাপী ৫ম বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। পুণ্ড্রনগর চলচ্চিত্র সংসদ বগুড়ার আয়োজনে উৎসবটি দুটি ভেন্যুতে শুরু হয় ২০ ফেব্রুয়ারি। তিনদিনে বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দেখানো হয় ৩৩ দেশের দেশের ৯৭টি চলচ্চিত্র।
শনিবার সন্ধ্যায় উৎসবের সমাপনী দিনে ৬টি বিভাগে ৬টি সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার প্রদান করা হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা (পিপিএম)।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুরি মেম্বার ফিল্ম সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো.
বিধান রায়ের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন। তিনি বলেন, এইবার ৬টি ক্যাটাগরিতে দেয়া হয় উৎসবের সেরা ৬টি চলচ্চিত্রের পুরস্কার। উৎসবে আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় ইরানের চলচ্চিত্র ‘লন্ড্রি’, সেরা প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ‘দ্যা টেস্ট অব হানি’, ওপেন ডোর শর্ট বিভাগে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নেপাল থেকে ‘জুনকো’, সেরা বাংলাদেশি চলচ্চিত্র বিভাগের পুরস্কার পায় ‘সওদা’, সেরা অ্যানিমেশন বিভাগে রাশিয়ার ‘মুনখা’, সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে তুর্কির ‘এ পিচ অব গ্রেইন’ এবং উৎসব মেনশন অ্যাওয়ার্ড পায় নেপালের ‘বুলাকী’।
সেরা চলচ্চিত্র মনোনয়নের জন্য জুরিবোর্ডে ছিলেন ভারত থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা রাকেশ আন্দানিয়া, অমল ভাগাত, মিশর থেকে ইল সাকুরি, বাংলাদেশের থেকে ফিল্ম সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. তাওকীর ইসলাম, লেখক ও সাংবাদিক অপূর্ণ রুবেল, অনিন্দ্য মামুন, চলচ্চিত্র নির্মাতা শায়লা রহমান তিথি এবং অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। মাস্টার ক্লাস পরিচলানা করেন যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার আহম্মেদ তাওকীর এবং ফিল্ম সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ।
উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন জানান, এইবার দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাসহ নেপাল, ভারত, ইটালি ও মালয়েশিয়া থেকে ৩৫ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা, কলাকুশলী বগুড়ায় আসেন। তাঁরা ২১ এ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র উৎসব চলচ চ ত র ন র ম ত র চলচ চ ত র উৎসব র
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’