কুয়েটে সংঘর্ষ: আটক ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে
Published: 23rd, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের করা মামলায় আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বিএনপি নেতা আবদুল করিম মোল্লা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন ও ইব্রাহিম হাওলাদার এবং কর্মী শফিকুল ইসলাম।
গতকাল শনিবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করার তথ্য প্রকাশ করা হয়। এদিকে গতকাল রাতে খুলনা মহানগর বিএনপির গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁদের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের দিন পাঁচজনকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছিলেন সেনাসদস্যরা। তাঁদের প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। গত শুক্রবার তাঁদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
বিবৃতি দেওয়া নেতারা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম (বকুল), তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম (মনা) ও সদস্যসচিব শফিকুল আলম (তুহিন)।
আরও পড়ুনকুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের মামলা, আসামি অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫কুয়েটের মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে খুলনা মহানগর বিএনপি নেতারা বলেছেন, ‘এরই মধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন ও ছবি, ভিডিও ফুটেজ পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে দেশবাসী জানতে পেরেছে, কুয়েটে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তার সূত্রপাত গুপ্ত একটি ছাত্রসংগঠন ঘটিয়েছে।’
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘সেই ঘটনায় কুয়েট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা পাঁচ শতাধিক আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে গুপ্ত ছাত্রসংগঠনের নেতা–কর্মীদের হামলায় মারাত্মক আহত খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা আবদুল করিম মোল্লা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহিম হাওলাদার ও বিএনপির সর্মথক শফিকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে প্রেরণ করেছে, যা রীতিমতো নিন্দনীয় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
আরও পড়ুনকুয়েট উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বিবৃতিতে বিএনপির নেতারা আরও বলেন, ‘কুয়েটের ভিসি, শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মীদের ওপর গুপ্ত সংগঠনের সন্ত্রাসী হামলার হাজারো প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের প্রেসক্রিপশনে পুলিশ অসুস্থ চার নেতা–কর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের পথ অনুসরণ করেছে, যা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। বিশেষ দলের প্রেসক্রিপশনে যেসব চিকিৎসক, পুলিশ সদস্য এহেন নিন্দনীয় কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিএনপি। কুয়েটের ঘটনায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। শুধু শিক্ষার্থীদেরই নয়, গুপ্ত ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসীরা কুয়েট ভিসি, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছেন। অবিলম্বে ওই গুপ্ত সংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় বিএনপি বিকল্প পথে হাঁটতে বাধ্য হবে।’
আরও পড়ুনকুয়েটে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি দিয়ে প্রদর্শনী২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ম দ র স গঠন র ব এনপ র স ঘর ষ ঘটন য় র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী
নোয়াখালীর হাতিয়ায় হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির পাঁচ কর্মী। তাদের মধ্যে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য একই দলের অন্য নেতার অনুসারীদের দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
আহত ব্যক্তিরা হলেন– সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো. রনি (২৬), এরশাদ (৩৫) ও পায়েল (২৫)। তাদের বাড়ি তমরদ্দি ইউনিয়নের আঠারোবেকী গ্রামে। আহত সবাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের কর্মী-সমর্থক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তমরদ্দি বাজারের একটি চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এ সময় কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিহাব উদ্দিনের ভাষ্য, সবার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। কিছু আঘাত অনেক গভীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ জন্য চারজনকে রাতেই হাতিয়ার বাইরে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের ভাষ্য, মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে আসার পথে হামলায় তাঁর কয়েকজন কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওই আসামিরাই বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোক।
তবে আলমগীর কবিরের দাবি, হামলায় তাঁর কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিলেন না। এমন অভিযোগ সত্য নয়।
হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, বিএনপি নেতা তানভীর হায়দার ও আলমগীর কবিরের লোকজনের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের বিরোধ অনেক পুরোনো। আগের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।