বিয়ে করলেই তো জীবনের একটা পার্ট শেষ হয়ে গেল: পূজা চেরি
Published: 23rd, February 2025 GMT
পূজা চেরি আছেন, আবার নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর অ্যাকাউন্ট বা ওয়ালে গেলে নিজের পোস্ট করা দারুণ দারুণ ছবি দেখা যায়। দেখা যায় বাহারি পোশাকে তৈরি করা রিলস। সে সব ছবি ও রিলসই জানিয়ে দেয় অভিনেত্রী বেশ খুশ মেজাজেই আছেন। ঘুরছেন-ফিরছেন, শুটিং করছেন বিভিন্ন পণ্যের। প্রশ্ন হলো তাহলে নেই কোথায় এই অভিনেত্রী? উত্তর হবে, সিনেমায়। পূজা চেরি অভিনীত সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘লিপস্টিক’।
এরপর আর অভিনেত্রীকে বড়পর্দায় দেখা যায়নি। দেখা গেছে বিজ্ঞাপনে ও ওয়েব ফিল্মে। সর্বশেষ তাঁর মুক্তি পাওয়া ওয়েব ফিল্মটি হচ্ছে রায়হান রাফী পরিচালিত ‘ব্ল্যাকমানি’। এটি দিয়ে দীর্ঘ দিন পর রাফি-পূজা জুটির কাজ দেখেছেন দর্শক। তাতে কি অনুরাগীর মন তৃপ্ত হয়! অভিনেত্রীকে বড়পর্দায় দেখতে চান ভক্তরা। সেটি কবে? এ প্রশ্ন নিয়েই যোগাযোগ করতেই জানা গেল পূজা আদর আজাদের সঙ্গে ফের জুটি হয়েছেন।
মানে ‘টগর’ ছবির নায়িকা হয়েছেন পূজা চেরি। যে ছবিটি আগামী কোরাবানীর ঈদে মুক্তি পাবে।
এর আগে ছবিটিতে নায়িকা ছিলেন দীঘি। হুট করে দীঘিকে সরিয়ে পূজার যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে নায়িকা বলেন, ‘আলোক হাসান ও আদর আজাদের সঙ্গে এর আগেও আমার কাজ হয়েছে। অ্যানাউন্সমেন্ট টিজারে ভিন্ন কাস্টিং-এর কারণে আমি নিজেও কাজটিতে পরে যুক্ত হতে চাইনি। তবে পরবর্তীতে টিম আমাকে বুঝাতে সমর্থ হয়, আমারও গল্পটি পছন্দ হওয়ায় রাজি হয়ে যাই।’
এদিকে সম্প্রতি অভিনেত্রী কার সঙ্গে প্রেম করছেন, কবে বিয়ে করবেন এ প্রশ্ন নিয়েও চর্চার শেষ নেই। বরাবরই উত্তরটি এড়িয়ে যাওয়াদের দলেই অভিনেত্রী। জানিয়ে আসছেন কেবল সিনেমার সঙ্গেই প্রেম তাঁর। ক’দিন আগে বসন্ত উৎসব উপলক্ষে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান। সেখানে যাওয়া নিয়েও কৌতূহলি দর্শক। কার সঙ্গে গেলেন, কেন গেলেন তা নিয়ে ভাবনার শেষ নেই যেন। সেটি খোলাসা করেছেন পূজা নিজেই। একটি ইভেন্টে অংশ নিতে মালয়েশিয়াতে পাড়ি জমানো তাঁর। কাজ শেষ করে দেশেও ফিরেছেন।
পূজা মনে করেন, অভিনয় ক্যারিয়ারে এখন তিনি সুন্দর সময়ে আছেন। আপাতত অভিনয়ের প্রতি মনোযোগী থাকতে চান। কাজ করতে চান ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে। পূজা বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে ভক্তদের আগ্রহ থাকবে এটিই স্বাভাবিক। গণমাধ্যমের বরাতে তারা জানতে চান কবে আমি বিয়ে করছি। তাদের উদ্দেশে আমি বলব, পূজা এখনই বিয়ে করছে না। বিয়ে করলে তো জীবনের একটা পার্ট শেষ হয়ে গেল। আগে নিজের ক্যারিয়ার সেটল করি। তারপর বিয়ে নিয়ে ভাবা যাবে। আপাতত সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। আমার কাছে মনে হয়, আমি এখনও আনসেটলড। আরও অনেকদূর পাড়ি দিতে হবে, যেতে হবে বহুদূর। বহুদূর না গিয়ে বিয়েটা করে ফেললে মাঝপথেই তো আটকে গেলাম।’
‘ভালোবাসার রং’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র রাজ চক্রবর্তী প্রযোজিত কলকাতার সিনেমা ‘নূরজাহান’। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ অভিনেত্রীকে। সর্বশেষ রায়হান রাফীর ওয়েব সিরিজ ‘ব্ল্যাক মানি’তে দেখা গেছে পূজাকে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।