নতুন করে নির্বাহী প্রেসিডেন্ট খুঁজছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী শূন্য পদে সরাসরি/প্রেষণে/চুক্তিভিত্তিক পূর্ণকালীন/লিয়েনের মাধ্যমে নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে।

সম্প্রতি নির্বাহী প্রেসিডেন্ট পদে স্থায়ী যোগ্য ও ভালো প্রার্থী চেয়ে পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিআইসিএম।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে- বিআইসিএম পুঁজিবাজারের তাত্ত্বিক এবং প্রায়োগিক জ্ঞান প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান, যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পূর্ণ অর্থায়নে পরিচালিত। ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট এর স্থায়ী শূন্য পদে সরাসরি/প্রেষণে/চুক্তিভিত্তিক পূর্ণকালীন/লিয়েন এর মাধ্যমে নিয়োগের নিমিত্ত নিচে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন বাংলাদেশি নাগরিকদের নিকট হতে দরখাস্ত আহ্বান করা যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

ইস্টার্ন ব্যাংক চাকরি, লাগবে না অভিজ্ঞতা

নৌবাহিনীতে চাকরি, আবেদন ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত

পদের নাম: নির্বাহী প্রেসিডেন্ট।

পদ সংখ্যা: ১।

দায়িত্ব ও কর্তব্য: বিআইসিএম এর পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার আলোকে ইনস্টিটিউটের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করা। ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ও কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নেতৃত্বদান করা। শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তদারক করা ও তাতে অবদান রাখা।

শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য যোগ্যতা: * সরকার অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ফিন্যান্স/হিসাববিজ্ঞান/ব্যাংকিং/ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স/ব্যবস্থাপনা/ব্যবসায় শিক্ষা/ব্যবসায় প্রশাসন/মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা/ব্যবসায় শিক্ষার অন্যান্য বিষয়/আন্তর্জাতিক সম্পর্ক/লোক প্রশাসন/গভর্ন্যাস এন্ড পাবলিক পলিসি/অর্থনীতি/পরিসংখ্যান/আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।

* অন্যান্য যোগ্যতা সমান থাকলে পিএইচডি, চার্টাড এ্যাকাউন্ট্যান্টস (এফসিএ)/কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট এ্যাকাউন্ট্যান্টস (এফসিএমএ)/চার্টাড ফাইন্যান্সিয়াল এনালিস্ট (সিএফএ) ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে।

* কমপক্ষে ২০ বৎসরের পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়াও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিতে উচ্চতর পর্যায়ের জ্ঞান ও দক্ষতা; ইন্সটিটিউটকে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীতকরনের প্রয়োজনীয় দূরদৃষ্টি; বিশ্লেষণ ক্ষমতা, ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দক্ষতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলীর অধিকারী; বাংলাদেশের অর্থনীতি, পুঁজিবাজার এবং বর্তমান আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞানের অধিকারী, উন্নত সাংগঠনিক ও নেটওয়ার্কিং দক্ষতা; ইংরেজিতে অসাধারণ বাচনিক ও লৈখিক দক্ষতা; দেশে ও বিদেশে পুঁজিবাজার/ইন্সটিটিউট-এ পেশাদারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রণয়ন ও প্রশিক্ষণ প্রদানে বাস্তব অভিজ্ঞতা অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

* কোনো প্রার্থীর শিক্ষাজীবনে তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ গ্রহণযোগ্য নয়।

* কোনো স্বীকৃত প্রশিক্ষণ/গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষক/গবেষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অথবা সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থা-এর ন্যূনতম যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদা হিসেবে চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

বয়স: অনূর্ধ্ব ৫৫ বছর

চাকরির ধরন: সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশের মেয়াদ হবে নিয়োগের তারিখ থেকে দুই বছর। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে চুক্তির মেয়াদ হবে নিয়োগের তারিখ থেকে তিন বছর। কাজের মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময় চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

বেতন: প্রারম্ভিক মাসিক মূল বেতন ১,৭৫,০০০ টাকা।

সুযোগ-সুবিধা: বছরে দুটি উৎসব ভাতা (মূল বেতনের সমপরিমাণ), নিয়মানুযায়ী বৈশাখী ভাতা, জ্বালানি ও চালকসহ সার্বক্ষণিক একটি গাড়িসহ ইনস্টিটিউটের নিয়মানুযায়ী অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে।

আবেদনের নিয়ম: আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত আবেদন ফরম এই লিংক থেকে ডাউনলোড করতে হবে। ফরম পূরণ করে তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সনদের সত্যায়িত অনুলিপিসহ আবেদনপত্র সরাসরি, ডাকযোগে বা কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। নিয়োগসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের ওয়েবসাইটে জানা যাবে। গত ১১ ডিসেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যারা আবেদন করেছেন, তাঁদের আর আবেদন করার প্রয়োজন নেই।

আবেদনপত্র পাঠানোর ঠিকানা: চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট, বিজিআইসি টাওয়ার (প্রথম-চতুর্থ তলা ও নবম-১০ম তলা), ৩৪, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।

আবেদনের শেষ তারিখ: ৩ মার্চ ২০২৫।

ঢাকা/তানিম/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ কর চ কর ত য গ যত অন য ন য পর চ ল ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

আইন যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার

এটা অনস্বীকার্য যে মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য আইন তৈরি করা হয়, অন্যভাবে বললে মানুষের অধিকার সুরক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী আইনি কাঠামোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেই আইনই মানুষের অধিকার লঙ্ঘনের সহযোগী উপাদান বা হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে, বিশেষত আইন যখন এমনভাবে প্রণয়ন করা হয়, যাতে অতিবিস্তৃত, অস্পষ্ট এবং অসংগতিপূর্ণ ধারা থাকে কিংবা আইনের দুর্বল এবং ‘সিলেকটিভ’ প্রয়োগ হয়; আইনকে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়, যা নির্বিচার আটকের ন্যায্যতা দেয়, মৌলিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে এবং বৈষম্যমূলক চর্চাকে উৎসাহিত করে।

আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে সেসব দেশে, যেখানে আইনের শাসন ভঙ্গুর, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সীমিত এবং গণতন্ত্রের ঘাটতি থাকে। বাংলাদেশ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

২.

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন অধ্যায়, যেখানে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটে। সরকারি চাকরিতে অন্যায্য কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও তৎকালীন সরকারের ব্যাপক দমন-পীড়ন এবং সহিংস আক্রমণের ফলে পরবর্তীকালে তা গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। গণ-অভ্যুত্থানে সমাজের সব স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং একটি স্বৈরাচারী বা কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন হয়।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, যার মধ্যে আশঙ্কাজনকভাবে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের বিগত সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা বিচারবহির্ভূত হত্যা, সহিংসতা, নির্বিচার আটক ও নির্যাতনের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে জড়িত ছিল।

আন্দোলন চলাকালীন হাজার হাজার আন্দোলনকারীকে নির্বিচার আটক করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে স্বীকৃত ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার এবং আটকের ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া (ডিউ প্রসেস) অনুসরণের যে বিধান, তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গণগ্রেপ্তার অভিযানের সময় আটক হওয়া প্রায় ৮৫ শতাংশ ছিল শিক্ষার্থী এবং সাধারণ নাগরিক আর ১৫ শতাংশ বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিল। হত্যা, নির্বিচার আটক এবং নির্যাতনের পাশাপাশি গণ-অভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে মানুষের যোগাযোগের অধিকার, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।

এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা, জননিরাপত্তা, আত্মরক্ষায় বলপ্রয়োগ কিংবা জনস্বার্থের মতো ‘অস্পষ্ট’ বিষয়ের কথা বলা হয়েছে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিপীড়ন, হয়রানি ও নির্যাতনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। এসব ক্ষেত্রে আইন সহযোগী উপাদান বা অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। যেমন, কারফিউ জারি, প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বা দেখামাত্রই গুলির নির্দেশকে ন্যায্যতা দিতে জননিরাপত্তা এবং জনস্বার্থের মতো বিষয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে মূলত আইন রাষ্ট্রের দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিতে সহায়তা করেছে, যা মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

৩.

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানেই নয়, বছরের পর বছর ধরে দেশের শাসনব্যবস্থায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার হিসেবে আইনকে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন বিগত সময়ে কিছু কঠোর ও দমনমূলক আইন প্রণয়ন করেছিল, যা স্পষ্টভাবে মানবাধিকারের পরিপন্থী। এই আইনগুলো ভিন্নমত দমন, নির্যাতন এবং নিপীড়ন করে কর্তৃতবাদী শাসন টিকিয়ে রাখতে সহায়ক ছিল। বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) ছিল এমন একটি আইন (যা পূর্ববর্তী আইসিটি আইনের বিতর্কিত এবং দমনমূলক ৫৭ ধারার একটি পদচিহ্ন)। এ আইন বাংলাদেশে ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল, যার ভুক্তভোগী ছিলেন অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, এমনকি সাধারণ নাগরিকও।

এই দমনমূলক ডিএসএ আইনটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে আইনের অপব্যবহারের প্রয়োজন ছিল না, বরং আইনটি ব্যবহার করেই অর্থাৎ আইনের মধ্যে থেকেই মানুষকে হয়রানি এবং নির্যাতন করা সম্ভব ছিল। ডিজিটাল আইনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ছিল ভীতি এবং সেলফ-সেন্সরশিপের সংস্কৃতি তৈরি করে ভিন্নমতকে দমন করা, যা সংবিধান প্রদত্ত বাক্‌স্বাধীনতা, মতপ্রকাশ এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে। লক্ষণীয়, নিপীড়নমূলক ডিজিটাল আইন প্রণয়নে এবং প্রয়োগে বিগত সরকার ডিজিটাল মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষার চেয়ে রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে যখন ডিজিটাল মাধ্যমে মানবাধিকারের ধারণা ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে, বাংলাদেশে দমনমূলক ডিজিটাল আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে এবং বিরোধী কণ্ঠ দমন করে কর্তৃত্ববাদী শাসনকে পাকাপোক্ত করতে সহায়তা করেছে।

বিগত সরকারের আমলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হয়ে উঠেছিল ভিন্নমত দমনের বড় অস্ত্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইন যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার
  • এইচএসসি পরীক্ষা: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রে ভালো করতে হলে