প্রবাসীর বসতঘরে ডাকাতির ঘটনায় বিএনপির তিন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
Published: 23rd, February 2025 GMT
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার বাটাখালী এলাকায় এক প্রবাসীর বসতঘরে ডাকাতির ঘটনায় বিএনপি ও যুবদলের তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার ভোরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চকরিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. নয়ন চৌধুরী (৪৫), ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো.
চকরিয়া পৌরসভা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মনোহর আলম গ্রেপ্তার নেতাদের পদবি নিশ্চিত করেছেন।
চকরিয়া থানার পুলিশ ও ডাকাতির শিকার বসতঘরের পরিবারের সদস্যরা বলেন, গত শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বাটাখালী এলাকার বাসিন্দা সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী শ্রীমন্ত দাশের বসতঘরে ডাকাতি সংঘটিত হয়। এ সময় ছয় সদস্যের ডাকাতদল বাড়ির দারোয়ান রবি দাশকে (৫০) গলায় ছুরি ধরে বাড়ির গেট খুলতে বাধ্য করে। পরে তাঁর হাতে ও পায়ে ছুরিকাঘাত করে বসতঘরে ঢোকে ডাকাত দল। ডাকাতেরা পরিবারের সদস্যদের গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে তিন ভরি স্বর্ণ, চার ভরি রুপা ও ১২ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
শ্রীমন্তের স্ত্রী রুবি দাশ বলেন, পরিবারে কোনো পুরুষ সদস্য নেই। ডাকাতেরা পরিবারের নারী সদস্যদের গলায় ছুরি ধরে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শনিবার সকালে খবর পাওয়ার পর পুলিশের একাধিক দল ডাকাতির ঘটনা কারা ঘটিয়েছে, তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়। পরে হানিফ, নয়ন ও ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়। নয়নের স্বীকারোক্তি মতে তাঁর শয়নকক্ষের ফ্রিজের পেছনে লুকিয়ে রাখা ১০ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ওসি বলেন, প্রবাসী শ্রীমন্তের স্ত্রী রুবি দাশ বাদী হয়ে আজ ডাকাতির ঘটনায় একটি মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার তিনজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে আদালতে তোলা হলে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ছাড়া লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধার এবং ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা করছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ক ত র ঘটন র বসতঘর পর ব র ব এনপ সদস য প রসভ চকর য়
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।