কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিরস্ত্র জনগণের উপর বিমান বাহিনীর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে। এ সময় গুলিবর্ষণে শিহাব কবির নাহিদ নিহত এবং ১৫-২০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয় বলে অভিযোগ করা হয়।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাবির কক্সবাজার স্টুডেন্টস ফোরামের এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে কক্সবাজার স্টুডেন্ট ফোরাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিমান বাহিনীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীগুলোতে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসরা বহাল তবিয়তে আছে। দেশের বিরাজমান অনেক সমস্যা বিভিন্নভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে কৌশলে সমাধান করা যায়।

তারা বলেন, বিভিন্ন বাহিনীতে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসররা একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা করতেছে। যার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে, কক্সবাজারে তুচ্ছ ও সমাধানযোগ্য একটা বিষয়ে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে এ বাহিনী, যা খুনী হাসিনার স্বৈরাচারী আচরণের প্রতিচ্ছবি। 

সংগঠনটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ বলেন, “ওসি প্রদীপ বিচার বহির্ভূতভাবে ২০০ জনকে হত্যা করেছে, তার বিচার দাবি করছি‌। যদি শিহাব কবির নাহিদের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয় তাহলে জনগণ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে‌‌। আমি এ ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”

কক্সবাজার স্টুডেন্টস ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বলেন, “আজ দুইজন সাধারণ মানুষ মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল। তাদের বিমান বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। এরপর এলাকার সাধারণ মানুষেরা শান্তিপূর্ণভাবে ছাড়িয়ে নিতে গেলে বিমান বাহিনী সশস্ত্র হামলা চালায়। আমরা কি মানুষ নই?”

তিনি বলেন, “কিছু মিডিয়া হলুদ সাংবাদিকতা করে এ ঘটনাকে বিমান বাহিনীর ওপর হামলার নাটক সাজিয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম, আপনাদের এ দাবি সত্য নয়।” এ সময় তিনি কক্সবাজারের খাস জমিগুলো সশস্ত্র বাহিনীগুলো দখল করে হোটেল ব্যবসা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-

১.

বিমান বাহিনীর গুলিবর্ষণে নিহত শিহাব কবির নাহিদ ও ১০-১৫ জন আহতদের ঘটনার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধের নামে ক্রসফায়ারে প্রায় ২০০ নিহতের ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

২. বিমান বাহিনী ও আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী সংযোগ অধিদপ্তর) থেকে প্রকাশিত একপাক্ষিক প্রেস বিজ্ঞপ্তির নিন্দা জানানো হোক এবং সত্যনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা নিশ্চিত করে ক্ষমা চাইতে হবে।

৩. বিমান বাহিনীসহ কক্সবাজারে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিবাদী ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বাহিনী থেকে অপসারণ করতে হবে।

৪.স্থানীয়দের অধিগ্রহণ করা জমিজমার ন্যায্য মূল্য প্রদান, স্থানীয়দের মামলা দিয়ে হয়রানি না করা এবং গুলিতে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’

গাড়ি চাপা দিয়ে সড়কে নির্মমভাবে সাইক্লিস্ট ওসমান গণিকে (১৯) হত্যা করেছে। ধাক্কা দেওয়ার পর ওসমানের মাথার ওপর গাড়ি চালিয়ে চলে যান আসামি। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, হত্যা। এ হত্যার বিচার হতে হবে। এখন আসামির বয়স নিয়ে লুকোচুরি করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম নগরের বড়পোল এলাকায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত সাইক্লিস্ট ওসমান হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনের এসব কথা বলেন উপস্থিত বক্তারা। আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় নগরের জামালখান এলাকায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধন আয়োজন করে চট্টগ্রাম সাইক্লিং কমিউনিটি। মানববন্ধন থেকে আসামির শাস্তির দাবি জানানো হয়।

এর আগে গত বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বড়পোল এলাকার সিলভার বেলস স্কুলের সামনে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত হন ওসমান গণি। তিনি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পূর্ব বাইশারী গ্রামের মোহাম্মদ নাছিরের ছেলে। এ ঘটনায় বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সড়ক পরিবহন আইনে হালিশহর থানায় মামলা করেন নিহত ব্যক্তির মামা আবুল কাশেম।

মামলায় প্রাইভেটকার চালক তানিম হোসেনকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি নগরের হালিশহর এল ব্লক এলাকার এরশাদ হোসেনের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, তানিম তাঁর বাবার গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন সময় সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতেন। কিন্তু তাঁর কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। শুরুতে তাঁর বয়স ১৬ থেকে ১৭ বলা হলেও মামলার এজাহারে তাঁর বয়স ১৯ উল্লেখ করা হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত ওসমানের বাবা মোহাম্মদ নাছির, মামা আবুল কাশেম, বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল, সদস্য সুবীর মিত্র, জাতীয় পর্যায়ের সাইক্লিস্ট রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া সারা দেশের অন্তত ১০টি সাইক্লিং গ্রুপের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে ওসমানের বাবা মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের পরিবার ভেঙে পড়েছে। গ্রামের মানুষ, এলাকার লোকজন সবাই শোকাহত। ছেলে যে বাসায় কেয়ারটেকার ছিল সেখানে বাজার-সদাই সে করতে। সেদিনও সে একই উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছিল।’

অন্য বক্তারা বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হয়? আবার তাঁকে এখন শিশু বানানো হচ্ছে। বাবার টাকা থাকলেই কী হত্যাকারীরা বের হয়ে যাতে পারে? আসামি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক, তাঁকে শিশু বানিয়ে তাঁর বাবা ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাঁর ফেসবুকে তাঁর বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ভিডিও সবাই দেখেছেন। বারবার প্রশ্রয় পেয়ে তিনি এমন বেপরোয়া হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গৃহশ্রমিকদের সাপ্তাহিক ও মাতৃত্বকালীন ছুটি শ্রম আইনে রাখতে হবে
  • নরসিংদীতে তিন গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ১
  • চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে কেউ নিচ্ছেন চিকিৎসা, কেউ করাচ্ছেন পরীক্ষা
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • ১৭ দিন পর কাটলো অচলাবস্থা, চক্ষু হাসপাতালে সেবা চালু
  • ১৭ দিন পর কাটলো অচলাবস্থা, চক্ষু হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু
  • ‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’
  • রাজধানীতে ছিনতাইকারীর ছুরিতে দু’জন আহত
  • কুলিয়ারচরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, ৩০ যাত্রী আহত
  • আহমেদাবাদে দুর্ঘটনাস্থলে নরেন্দ্র মোদী, আহতদের দেখতে গেলেন হাসপাতালে