কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর নির্বিচারে গুলিবর্ষণের অভিযোগে ঢাবিতে মা
Published: 24th, February 2025 GMT
কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিরস্ত্র জনগণের উপর বিমান বাহিনীর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে। এ সময় গুলিবর্ষণে শিহাব কবির নাহিদ নিহত এবং ১৫-২০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাবির কক্সবাজার স্টুডেন্টস ফোরামের এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে কক্সবাজার স্টুডেন্ট ফোরাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিমান বাহিনীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীগুলোতে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসরা বহাল তবিয়তে আছে। দেশের বিরাজমান অনেক সমস্যা বিভিন্নভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে কৌশলে সমাধান করা যায়।
তারা বলেন, বিভিন্ন বাহিনীতে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসররা একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা করতেছে। যার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে, কক্সবাজারে তুচ্ছ ও সমাধানযোগ্য একটা বিষয়ে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে এ বাহিনী, যা খুনী হাসিনার স্বৈরাচারী আচরণের প্রতিচ্ছবি।
সংগঠনটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ বলেন, “ওসি প্রদীপ বিচার বহির্ভূতভাবে ২০০ জনকে হত্যা করেছে, তার বিচার দাবি করছি। যদি শিহাব কবির নাহিদের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয় তাহলে জনগণ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। আমি এ ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
কক্সবাজার স্টুডেন্টস ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বলেন, “আজ দুইজন সাধারণ মানুষ মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল। তাদের বিমান বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। এরপর এলাকার সাধারণ মানুষেরা শান্তিপূর্ণভাবে ছাড়িয়ে নিতে গেলে বিমান বাহিনী সশস্ত্র হামলা চালায়। আমরা কি মানুষ নই?”
তিনি বলেন, “কিছু মিডিয়া হলুদ সাংবাদিকতা করে এ ঘটনাকে বিমান বাহিনীর ওপর হামলার নাটক সাজিয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম, আপনাদের এ দাবি সত্য নয়।” এ সময় তিনি কক্সবাজারের খাস জমিগুলো সশস্ত্র বাহিনীগুলো দখল করে হোটেল ব্যবসা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-
১.
২. বিমান বাহিনী ও আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী সংযোগ অধিদপ্তর) থেকে প্রকাশিত একপাক্ষিক প্রেস বিজ্ঞপ্তির নিন্দা জানানো হোক এবং সত্যনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা নিশ্চিত করে ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. বিমান বাহিনীসহ কক্সবাজারে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিবাদী ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বাহিনী থেকে অপসারণ করতে হবে।
৪.স্থানীয়দের অধিগ্রহণ করা জমিজমার ন্যায্য মূল্য প্রদান, স্থানীয়দের মামলা দিয়ে হয়রানি না করা এবং গুলিতে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের একজন নারী একটি ফেস্টুন হাতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাতে লেখা ছিল ‘নদী আমাদের মা, মায়ের বুক ভাঙা চাই না।’ এ রকম আরও বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষেরা।
জেলার চারঘাট উপজেলা সদরে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার ভাঙনকবলিত পাঁচটি গ্রামের মানুষের উদ্যোগে আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত এই আয়োজন হয়।
গ্রামবাসীর ভাষ্য, চারঘাট উপজেলার গোপালপুর, রাউথা, পিরোজপুর, সাহাপুর এবং বাঘা উপজেলার চক রাজাপুর, আতারপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করা হলে আগামীতে ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এই আশঙ্কায় ভাঙনকবলিত গ্রামবাসী এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন চারঘাটের পিরোজপুর গ্রামের শাহানাজ বেগম (৪০। তিনি বললেন, ‘আমার বাড়ি নদীর পাড়ের ওপরে ঝুলি আছে। যকুন তকুন ভাইঙ্গি পড়বি।’
একই এলাকা থেকে এসেছেন পারভীনা খাতুন (৩৫)। সঙ্গে তাঁর শিশু ও বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, নদী একেবারে পায়ের তলায় এসে গেছে। তাঁদের আর পেছনে সরার জায়গা নেই।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাইদ। তিনি বলেন, পিরোজপুর, গোপালপুর, সাহাপুর এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে নদীভাঙন অব্যাহত আছে। এলাকার অন্তত ৫০০ মানুষের ঘরবাড়ি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকার বাস্তুহারা মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন। তাঁরা এলাকায় ফিরতে পারছেন না। এই ভাঙনকবলিত এলাকায় এবার যদি বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে জনগণ আবার রাজপথে নামবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অচল করে দেওয়া হবে। তাঁদের অফিস করতে দেওয়া হবে না।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহীন আলী, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির রহমান, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সালেক আদিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শাহীনুর রহমান, ভাঙনকবলিত এলাকার শিক্ষক মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।