স্রেডায় ইন্টার্নশিপ, স্নাতক অথবা অ্যাপিংয়ার্ড প্রার্থীদেরও সুযোগ, মাসে ১০ হাজার টাকা
Published: 25th, February 2025 GMT
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)। দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন-প্রসার, জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার ও উন্নয়ন, জ্বালানি সাশ্রয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ এবং নতুন সম্ভাবনাময় টেকসই জ্বালানির ক্রমাগত অনুসন্ধানে এটি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে আগামী প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে স্রেডা বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে স্রেডা ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিচ্ছে। সপ্তম ব্যাচের এই ইন্টার্নশিপ (এপ্রিল-জুন, ২০২৫) প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহীদের আবেদন করতে হবে অনলাইনে। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আবেদন শুরু হবে।
আরও পড়ুনশিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা পাবেন অনুদান, আবেদন অনলাইনে২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা—১.
আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে;
২.
যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) অথবা নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে স্নাতক/স্নাতকোত্তর/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অথবা পরীক্ষায় অবতীর্ণ (Appeared) হতে হবে। অবতীর্ণ প্রার্থীদের পরীক্ষায় অবতীর্ণ মর্মে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে;
৩.
স্নাতক/স্নাতকোত্তর/সমমান ডিগ্রি অর্জনের দুই (২) বছরের মধ্যে আবেদন করতে হবে;
৪.
আবেদন ফরমের লিংক
৫.
২৫.০২.২০২৫ সাল সকাল ১০টা হতে ১৬.৩.২০২৫ দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে। সরাসরি/ডাকযোগে কোনো আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না। সরাসরি বা ডাকযোগে পাঠানো সব আবেদনপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
৬.
অনলাইনে আবেদন ফরম (Online Application Form) এ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক প্রকাশিত পরীক্ষার ফলাফলের তারিখ অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। ২৫.০২.২০২৫ তারিখ বা তৎপূর্বে স্নাতক/ স্নাতকোত্তর ডিগ্রির ফলাফল যাঁদের প্রকাশিত হয়েছে, তাঁরা আবেদনের যোগ্য হবেন। অবতীর্ণ প্রার্থীদের পরীক্ষা সম্পন্নের তারিখ অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর কোন পরীক্ষা কবে২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ আবেদনের পদ্ধতি ও শর্তআগ্রহী প্রার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে অনাপত্তি সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) গ্রহণপূর্বক প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অনলাইনে স্রেডা বরাবর নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি ও আবেদন ফরমের লিংক স্রেডার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
প্রোগ্রামের মেয়াদ ৩ (তিন) মাস (এপ্রিল-জুন, ২০২৫
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় সব সনদপত্রের মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।
চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ই–মেইল অবহিত করা হবে
পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীদের টিএ/ডিএ প্রদান করা হবে না।
নিয়মিত কর্মসম্পাদন ও এক্সপোজার ভিজিটের জন্য ইন্টার্নদের প্রতি মাসে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা ভাতা প্রদান করা হবে
ইন্টার্ন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
ইন্টার্নশিপ নীতিমালা, ২০২৩–এর শর্তানুযায়ী প্রার্থী ইন্টার্নশিপ শেষে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) বা অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রাপ্তির দাবি করতে পারবেন না।
আরও পড়ুনরোমানিয়ায় বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা, সুযোগ-সুবিধা ও আবেদনের পদ্ধতি জেনে নিন১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫প্রিলিমিনারি পরীক্ষা—প্রাথমিকভাবে বাছাই করা প্রার্থীদের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে ইন্টার্ন নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী ১৮ মার্চ অনলাইনে গ্রহণ করা হবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা আগামী ২০ মার্চ ২০২৫ স্রেডার দপ্তর, আইইবি ভবন (লেবেল-১০), রমনা, ঢাকায় গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুনবাংলাদেশিদের হার্ভার্ডে বৃত্তি নিয়ে এমবিএ করার সুযোগ২৮ মার্চ ২০২১উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইন ট র ন পর ক ষ য অবত র ণ ট কসই
এছাড়াও পড়ুন:
‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়
‘তাণ্ডব’ সিনেমার গান ‘লিচুর বাগানে’ প্রকাশের পর রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। কফি শফ থেকে বাস, মেট্রোরেল আশপাশে কান পাতলে গানটা শোনা যাচ্ছে। কেউ না কেউ শুনছেন। সামাজিক মাধ্যমের স্টোরি ও রিলসেও গানটি ভেসে বেড়াচ্ছে। চরকি ও এসভিএফের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত গানটির আজ পর্যন্ত (১২ এপ্রিল ২০২৫) ভিউ হয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিয়ন ও ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন।
উচ্ছ্বসিত অনেক দর্শক গানটি নিয়ে মন্তব্যও করেছেন। তাহসিন নামের এক শ্রোতা লিখেছেন, ‘গানটির প্রতিটি সুর, দৃশ্য ও পরিবেশনায় বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অপূর্ব রূপ ফুটে উঠেছে। যাত্রাপালার ফিল্মের আবহে তৈরি এই গানটি যেন গ্রামীণ বাংলার প্রাণস্পন্দন তুলে ধরেছে। লোকেশন থেকে শুরু করে কস্টিউম, প্রতিটি ডিটেইলে আছে নিখুঁত যত্ন।’
গানটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের মধ্যে খুনসুটিও চলছে। বন্ধুকে মেনশন দিয়ে কেউ যেমন প্রশ্ন করছেন, ‘কী রে, বেড়া ডিঙাতে পারলি?’ আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন বল তো, ‘“লিচুর বাগানে” কেন “পিরিতের বেড়া” দিতে হয়?’
প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। শুরুতেই ‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, ‘কে এই ছত্তার পাগলা’ শীর্ষক প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। গবেষক সরোজ মোস্তফার মতে ‘কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুরও বাগানে’ পঙ্ক্তির রচয়িতা ও সুরকার ছত্তার পাগলা। তবে সংগীতগবেষক গৌতম কে শুভর মত ভিন্ন। তাঁর মতে, ‘এটি মূলত প্রচলিত ঘেটু গান। “কে দিল পিরিতির বেড়া লিচুর বাগানে?” অংশটি মূল গানের অংশ। ছত্তার পাগলা নিজের মতো করে এর সঙ্গে কথা সংযোজন করেছেন। নেত্রকোনায় ছত্তার পাগলার লেখা রূপটিই বিখ্যাত হয়েছে।’ ২০১৪ সালের এপ্রিলে মারা গেছেন ছত্তার পাগলা। জীবদ্দশায় রচনা ও সুরারোপ করেছেন কয়েক শ গান। মৃত্যুর বছর তিনেক আগে তাঁর কাছ থেকে গানটি শুনে হাতে লিখে রেখেছিলেন আল মামুন চৌধুরী।
আল মামুন চৌধুরীর লেখা অনুযায়ী গানটির কথা:
কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে
লিচুরও বাগানে গো সই…লিচুরও বাগানে …(ঐ)
পাখি খাইছ না লিচু, বন্দে খাইবো
বন্দে লিচু খাইয়া, খুশি হইবো
আমার কাছে আইসা কইবো
কত শান্তি দিবো আমার মনেপ্রাণে (ঐ)
ছোট ছোট লিচুগুলি, বন্দে তুলে আম্বো তুলি
বন্দে দেয় গো আমার মুখে,
আমি দিতে চাই বন্ধুর মুখের পানে…(ঐ)
মিষ্টি লিচু খাইয়া বন্দে, বাঁশি বাজায় মন আনন্দে
আমার মনে লাগে সন্দে বন্ধু সম্ভব জাদু জানে (ঐ)
বাঁশি হাতে পলায় মালা, তারে চায় ছত্তার পাগলা,
করব লইয়া উলামেলা, (২) প্রাণবন্ধুর সনে…(ঐ)
সরল অর্থে ‘বেড়া’ হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা তথা বাধা তৈরির উপকরণ। আর ‘পিরিতের বেড়া’ মানে ভালোবাসায় বাধা। কিন্তু ভালোবাসার এই বাধা তথা প্রতিবন্ধকতা ‘লিচুর বাগানে’ কেন? কবিতা তথা গানে অর্থের তারতম্য অর্থের অনুগত না হয়ে বোধ কিংবা ভাবনার পরবশে প্রস্ফুটিত হয়। ব্যক্তিবিশেষে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ লাভ করে, ভিন্ন ভিন্ন মূল্য পায়।
আরও পড়ুন‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, কে এই ছত্তার পাগলা ০৬ জুন ২০২৫‘কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে’ একটি ‘ঘাটু গান’ বা ‘ঘেটু গান’। এই গান প্রসঙ্গে জানা যায়, এই গানের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল নৃত্য। অল্প বয়সী একটি ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে তার নৃত্যের মধ্য দিয়ে ঘেটু গান পরিবেশিত হতো। সঙ্গে থাকত ঢোল, হারমোনিয়াম, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। কয়েকটি ‘ঘেটু গানে’র দৃষ্টান্ত দেখা যাক।
(১)
‘তুই আমারে চিনলে নারে
আমি তো রসের কমলা।
বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি
মধ্যে নলের বেড়া।’
(২)
ঘুমাইলা ঘুমাইলারে বন্ধু
পান খাইলায়না
এক বালিশে দুইটি মাথা
সুন্দর কইরা কওরে কথা।
গানগুলো থেকে উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না যে ‘ঘেটু গানে’ যেমন ভাষার সারল্য আছে, তেমনিভাবে রূপকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যাপিত জীবনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা নানা উপকরণ। আর এ ক্ষেত্রে গান রচনার সময় রচয়িতা তাঁর আশপাশ থেকেই গান নির্মাণের উপকরণগুলো যে নিয়ে থাকবেন, সেই ধারণাও পাওয়া যায়। ‘লিচুর বাগানে’ গানের ক্ষেত্রেও বোধ করি এটা ঘটেছে। তাই এই গানে যেমন ‘লিচু বাগানে’র কথা আছে, একইভাবে আছে ‘পাখি’, ‘বাঁশি’ ও ‘লিচু’র কথাও। পাখিকে লিচু না খাওয়ার অনুরোধ করলেও পাখি যেন খেতে না পারে সে কারণেই যে বেড়া দেওয়া হয়েছে; সেই ব্যথাও গানটিতে ফুটে উঠেছে। সব মিলিয়ে ‘লিচুর বাগান’ শেষ পর্যন্ত ‘লিচুর বাগানে’ সীমাবদ্ধ থাকেনি। হয়ে উঠেছে ভালোবাসার প্রতীক।
কথায় আছে, ভালোবাসা জয় করে নিতে হয়। জিতে নেওয়ার মধ্যেই আছে অপার আনন্দ। ভালোবাসায় প্রতিবন্ধকতা থাকাটা মোটেও দোষের নয়। বরং বাধা না থাকাটাই যেন আশ্চর্যের। একইভাবে ভালোবাসা জিতে নেওয়ার পরও পেয়ে গেছি বলে হাল ছেড়ে দিলে চলে না। ‘লিচুর বাগান’কে এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করলে, ‘লিচুর বাগানে’ ‘পিরিতের বেড়া’ তথা ভালোবাসার বেষ্টনী দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত। কেননা ‘ভালোবাসা’কে ভালোবাসা দিয়েই আগলে রাখতে হয়। প্রবল যত্নে আঁকড়ে রাখতে হয়। যেন কোনো কৌতূহলেই তা দুলে না ওঠে, হারিয়ে না যায়।
আরও পড়ুনসাবিলা তো ‘লিচুর বাগানে’ দিয়ে কী যে আগুন লাগিয়ে দিল...০৫ জুন ২০২৫