হাতিয়ায় ঘাট দখল নিয়ে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, নারীসহ আহত ১০
Published: 27th, February 2025 GMT
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে লঞ্চ ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই গ্রপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) তমরদ্দি লঞ্চঘাটে এ সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পর পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত লায়লা বেগম, কামরুল ইসলাম, আকলিমা বেগম, নাফিসা বেগমসহ ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক লায়লা বেগমকে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে প্রেরণ করেন।
আরো পড়ুন:
বরগুনায় বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ
কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা, নিহত ১
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তমরুদ্দি লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওলা কাজল। ৫ আগস্টের পর হাতিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা আলমগীর তার নেতৃত্বে তমরুদ্দি ঘাটের সকল কর্মকাণ্ড দখল করে নেন। পরবর্তীতে ইজারাদার ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওলা কাজলের সঙ্গে বিএনপি নেতা আলমগীর একটা সমঝোতা করে নেয়। সেই থেকে আলমগীর ঘাটের দায়িত্ব এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। কিন্তু তমরুদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি তানভীর হায়দার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘাটটি দখল নেওয়ার চেষ্টা করে করেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) তানভীরের অনুসারীরা ঘাটের দখল নিতে দলবল নিয়ে ঘাটে যায়। এ সময় তানভীরের লোকদের আলমগীরের লোকজন ধাওয়া করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘাটের পাশে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের নারী-পুরুষ সকলে এগিয়ে আসলে সংঘর্ষে নারীরাও জড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা সদর থেকে পুলিশ, নৌবাহিনী ও তমরদ্দি কোস্টগার্ড লঞ্চঘাটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএনপি নেতা আলমগীর জানান, ঘাটের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। তবে তিনি জানান, প্রতিদিনের ঘাট থেকে উপার্জনের ৪২ শতাংশ টাকা ইজারাদার গোলাম মাওলা কাজল নিয়ে যান।
তানভীর হায়দার জানান, নানা অপকর্মের দায়ে আলমগীরকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সমঝোতা করে ঘাট ভোগদখল করে আসছেন।
হাতিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম জানান, তমরদ্দি ঘাট নিয়ে দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়। পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা/সুজন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ পর স থ ত আলমগ র স ঘর ষ উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।