নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে লঞ্চ ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই গ্রপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) তমরদ্দি লঞ্চঘাটে এ সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পর পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহত লায়লা বেগম, কামরুল ইসলাম, আকলিমা বেগম, নাফিসা বেগমসহ ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক লায়লা বেগমকে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে প্রেরণ করেন।

আরো পড়ুন:

বরগুনায় বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ

কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা, নিহত ১

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তমরুদ্দি লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওলা কাজল। ৫ আগস্টের পর হাতিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা আলমগীর তার নেতৃত্বে তমরুদ্দি ঘাটের সকল কর্মকাণ্ড দখল করে নেন। পরবর্তীতে ইজারাদার ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওলা কাজলের সঙ্গে বিএনপি নেতা আলমগীর একটা সমঝোতা করে নেয়। সেই থেকে আলমগীর ঘাটের দায়িত্ব এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। কিন্তু তমরুদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি তানভীর হায়দার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘাটটি দখল নেওয়ার চেষ্টা করে করেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) তানভীরের অনুসারীরা ঘাটের দখল নিতে দলবল নিয়ে ঘাটে যায়। এ সময় তানভীরের লোকদের আলমগীরের লোকজন ধাওয়া করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘাটের পাশে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের নারী-পুরুষ সকলে এগিয়ে আসলে সংঘর্ষে নারীরাও জড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা সদর থেকে পুলিশ, নৌবাহিনী ও তমরদ্দি কোস্টগার্ড লঞ্চঘাটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিএনপি নেতা আলমগীর জানান, ঘাটের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। তবে তিনি জানান, প্রতিদিনের ঘাট থেকে উপার্জনের ৪২ শতাংশ টাকা ইজারাদার গোলাম মাওলা কাজল নিয়ে যান।

তানভীর হায়দার জানান, নানা অপকর্মের দায়ে আলমগীরকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সমঝোতা করে ঘাট ভোগদখল করে আসছেন।

হাতিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম জানান, তমরদ্দি ঘাট নিয়ে দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়। পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ঢাকা/সুজন/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ পর স থ ত আলমগ র স ঘর ষ উপজ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে চাকরির নামে যুবকদের পাঠানো হতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, চক্রের ‘হোতা’ গ্রেপ্তার

বিদেশে আকর্ষণীয় বেতনে চকলেট কারখানার কর্মী, পরিচ্ছন্নকর্মী বা বাবুর্চির কাজ দেওয়ার কথা বলে আগ্রহীদের ফাঁদে ফেলা হয়। পরে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে আসছিল একটি চক্র। চক্রটির এদেশীয় ‘হোতা’ মুহাম্মদ আলমগীর হোছাইনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এমন তথ্য। তাদের খপ্পরে পড়ে অন্তত একজন যুদ্ধে নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, আলমগীর হোছাইনকে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির মানব পাচার প্রতিরোধ শাখা। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা রয়েছে। সেই মামলায় গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সিআইডি জানায়, চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ হজ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই সুলতান আবার তাদের দাস হিসেবে রাশিয়ান সৈনিকদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে তাদের  সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। কেউ যুদ্ধ অংশ নিতে রাজি না হলে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের দুর্বল করে ফেলা হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে রাজি হন। যুদ্ধে নাটোরের সিংড়ার হুমায়ুন কবির নামে একজন নিহত এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামে একজন গুরুতর আহত হন। আর রাশিয়ায় পাঠানো ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশের আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন। এখানে তিনি অন্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছে তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার বনানী থানায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন।

তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে, ১০ জনের আরেকটি দল এখন সৌদি আরবে অবস্থান করছে। যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করানোর বিষয়ে জানাজানি হওয়ায় তারা রাশিয়া যেতে রাজি হননি। এ কারণে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই তারা সৌদি আরবে কোনো কাজ করতে পারছেন না, দেশেও ফিরতে পারছেন না। সিআইডি ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সেইসঙ্গে মানব পাচারের এই নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নিবিড় তদন্ত এবং গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তিনি ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের ব্যবসায়িক অংশীদার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গেপ্তার ২
  • বিএনপির সঙ্গে চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
  • হবিগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
  • নাটক প্রকাশ নিয়ে নিলয়ের ক্ষোভ, যা জানাল দীপ্ত কর্তৃপক্ষ
  • শিল্পী-নির্মাতাকে না জানিয়ে ইউটিউবে নাটক প্রকাশ, নিলয়ের ক্ষোভ
  • শিল্পী-নির্মাতাকে না জানিয়ে নাটক রিলিজ, নিলয়ের ক্ষোভ
  • চাকরির নামে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
  • বিদেশে চাকরির নামে যুবকদের পাঠানো হতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, চক্রের ‘হোতা’ গ্রেপ্তার
  • ঈদ পুনর্মিলনীর নামে বিএনপির আয়োজনে আ.লীগের মিলনমেলার অভিযোগ
  • দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী