বর্জ্যের দূষণে নদীটি টিকে থাকবে তো?
Published: 1st, March 2025 GMT
দেশের নদ-নদীর বিপন্ন হওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নাগরিকদের জন্য কোনো কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থা না থাকা। ফলে জেলা-উপজেলার মফস্সল শহর ও পৌরসভা শহরগুলোর বর্জ্যের দিন শেষে স্থান হয় স্থানীয় নদ-নদীতে। এর ফলে নদ-নদীগুলো দূষিত হয় এবং দিন দিন বিপন্ন হওয়ার দিকেই ঝুঁকে। যেমনটি আমরা দেখছি নওগাঁ পৌর শহরের ছোট যমুনা নদীর ক্ষেত্রে। বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, নওগাঁ শহরের অন্তত ২৫টি স্থানে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা ও বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীর তীরে। এর ফলে নদীর পানি কালো হয়ে পড়েছে। আশপাশে মশা-মাছি উড়ছে। নদীতীরের বাসিন্দারা পড়েছেন দুর্ভোগে। অনেক স্থানে নদীর বাঁধ থেকে নদীর ভেতরের অংশে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, চালকল গড়ে তোলা হচ্ছে। এগুলো থেকে বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ছোট যমুনা নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে নদীটি দূষিত হচ্ছে। বর্জ্য ফেলার কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে দূষণ আরও ভয়াবহ হবে।
নওগাঁ শহরের পারঘাটি ধোপাপাড়া এলাকার এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘শহরের অন্যান্য এলাকায় বাসাবাড়ি থেকে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লা-আবর্জনা নিয়ে যান। কিন্তু আমাদের এলাকায় বাসাবাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা নেওয়া হয় না। এ ছাড়া আশপাশে ডাস্টবিনও নেই। ফলে বাধ্য হয়ে বাসাবাড়ির বর্জ্য নদীর তীরে গিয়ে ফেলছেন বাসিন্দারা।’
নদী সংগঠকদের মতে, শুধু ছোট যমুনা নদী নয়, সারা দেশেই নদীগুলোর একই অবস্থা। নদী হচ্ছে জীবন্ত সত্তা। মানুষের প্রয়োজনেই নদীকে বাঁচাতে হবে। নদী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য হাইকোর্টের আদেশও আছে। কিন্তু প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অবহেলা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে নদীগুলোর অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসকের বক্তব্য, পৌরসভার জনবলসংকটের কারণে এখনো অনেক এলাকার সব বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। দূষণ রোধ করতে নদীতীরে ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে নদীদূষণের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিললে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
আমরা আশা করব, দ্রুত জনবলসংকট কাটিয়ে বর্জ্য সংগ্রহের কার্যক্রমকে বেগবান করা হবে। পৌরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় পরিবেশবিষয়ক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সর্বোপরি কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তৈরিতে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র বর জ য প রসভ র ব যবস শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় চলছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব’
জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত ১১ দলের ১১টি নতুন প্রযোজনা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব’। জাতীয় নাট্যশালায় গত ৩১ জুলাই শুরু হওয়া এই নাট্যোৎসব চলবে ৮ আগস্ট পর্যন্ত। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসবে নাট্যরূপে উঠে আসছে ইতিহাস, আন্দোলন ও সময়ের গল্প।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন গতকাল শুক্রবার জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ‘শুভঙ্কর হাত ধরতে চেয়েছিল’। তীরন্দাজ রেপার্টরি প্রযোজিত নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় দীপক সুমন। গতকালই ছিল এ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মঞ্চস্থ নতুন এ নাটক নিয়ে আলোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে উল্লেখযোগ্য দর্শকের উপস্থিতি ছিল। দর্শকদের অনেকেই বলছেন, এই নাটকে যেন এক নাগরিকের নির্জনতা, এক প্রেমিকের না-পাওয়া, এক বিপ্লবীর বিষণ্নতা আর এক সাধারণ মানুষের অসহায়তা একসূত্রে বাঁধা পড়েছে।