বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তভিত্তিক ফুটবলের পরিকল্পনা
Published: 3rd, March 2025 GMT
র্যাঙ্কিংয়ে পার্থক্য অনেক। ভারত যেখানে ১২৬তম, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৫তম। র্যাঙ্কিংয়ে ব্যবধান ৫৯ হলেও ফুটবলের সবুজ গালিচায় দু’দলের লড়াইয়ে সব সময় উত্তাপ ছড়ায়। ২৫ মার্চ শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ সামনে রেখে ইতোমধ্যে দুই প্রতিবেশীর লড়াই নিয়ে উন্মাদনা শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও সহসভাপতি ফাহাদ করিম। সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ছাড়াও ফুটবলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে এবং ক্রীড়ায় সহযোগিতার বিষয়টি উঠে এসেছে।
২০১৩ সাল থেকে ভারত আয়োজন করে আসছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এই টুর্নামেন্টের জনপ্রিয়তা দেশটিতে বেশি। অনেক নামি-দামি তারকা ফুটবলারের সঙ্গে কোচকেও ডাগআউটে দাঁড়াতে দেখা গেছে। কয়েক বছর আগে এমন লিগ আয়োজনের উদ্যোগ নিলেও স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে শেষ পর্যন্ত সেটা চালু করতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
সোমবার বাফুফের দুই কর্মকর্তাকে আইএসএলের জনপ্রিয়তা তুলে ধরেন ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ‘তিনি আমাদের সঙ্গে অনেক সময় কথা বলেছেন। তাদের দেশে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ হচ্ছে, সেটা কীভাবে করছে, এই বিষয়গুলো প্রয়োজনে আমরা যেন জানতে পারি, সেই কথাও বলেছেন। একই সঙ্গে ভারতে স্পোর্টস মেডিসিন খুবই ভালো। আমরা চাইলে এই বিভাগে তারা সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি আমাদের নারী ফুটবলের প্রশংসা করেছেন তিনি। ভারতের মেয়েদের লিগে বাংলাদেশের ফুটবলারদের খেলার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। সবকিছু মিলিয়ে আলোচনাটা ফলপ্রসূ হয়েছে। ফুটবলের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন করে উন্নয়নের কথা আলোচনায় এসেছে। এর বাইরে দুই দেশের সীমান্তভিত্তিক ফুটবল খেলা আয়োজনের কথাও উঠেছে’– সমকালের কাছে এভাবেই আলোচনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন বাফুফে সহসভাপতি ফাহাদ করিম।
ভারত ম্যাচের প্রস্তুতির জন্য ৫ মার্চ সৌদি আরবে যাবে জাতীয় ফুটবল দল। সেখানে অনুশীলন করে ১৮ তারিখে ঢাকায় ফেরার কথা দলটির। ২০ কিংবা ২১ মার্চ ভারতে যাবে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল। সৌদি আরব যাওয়ার আগেই বাফুফে থেকে পুরো দলের জন্য ভারতের ভিসার আবেদন করা হয়। আশার কথা সব ফুটবলারের ভিসা হয়ে গেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ব থ আওয় ল ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’