স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন বিতর্ক
Published: 5th, March 2025 GMT
সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব বদিউর রহমান প্রশিক্ষণ প্রদানকালে একটি কথা প্রায়ই বলতেন, স্থানীয় সরকার একটি চারাগাছ; প্রতিটি সরকার সেই চারাগাছ তুলে শিকড় দেখে বিবেচনা করে গাছটি কতটুকু বেড়েছে, তারপর আবার রোপণ করে। ফলে স্থানীয় সরকার নামে চারাগাছটির যথাযথ বিকাশ ঘটেনি। স্থানীয় সরকার বলতে আমাদের দেশে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদকে বোঝায়।
স্বাধীনতার পর দেশে কোনো সিটি করপোরেশন ছিল না। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভাই ছিল নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান। তবে ১৯৬৯ সালে সামরিক শাসনের বদৌলতে সব নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে দেশের সংবিধান অনুমোদনের পর ১৬ ডিসেম্বর থেকে তা কার্যকর হয়। গৃহীত সংবিধানের আলোকে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৯ মাস পরে ১৯৭৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদে এবং ১৯৭৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান বীরউত্তম রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হন। তার আগে ১৯৭৭ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি নিজস্ব রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক থাকা অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করেন। ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম নির্বাচন থেকে দ্বিতীয় নির্বাচনের মধ্যে ফারাক ছিল তিন বছর এক মাস। ১৯৭৭ সালের ১৩ আগস্ট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনীর একাংশ দ্বারা চট্টগ্রামে শহীদ হন। উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর সর্বজনীন ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি হন। কিন্তু ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁকে উৎখাত করে তৎকালীন সেনাপ্রধান লে.
১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে গণঅভ্যুত্থানে জেনারেল এরশাদের পতন হলে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিজয়ী হয়। ১৯৯০-এর মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গঠিত উপজেলা পরিষদ ১৯৯১ সালের ২৩ অক্টোবর বিলুপ্ত করা হয়। চার বছর বয়সী ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা ভেঙে দিয়ে ১৯৯২ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ এবং ১৯৯৩ সালের ৩০ জানুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনের আয়োজন করে। ১৯৯৪ সালের ৩০ জানুয়ারি সর্বপ্রথম ঢাকা সিটি করপোরেশনে সর্বজনীন ভোটের মাধ্যমে মেয়র নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পাঁচ বছর মেয়াদের ১০ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরে ১৯৯৭ সালের ১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ এবং পূর্ববর্তী নির্বাচনের ৬ বছর পরে ১৯৯৯ সালের ২৩ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করে।
২০০৩ সালের প্রথম তিন মাসে দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়। মেয়াদ পূর্তির পরে ২০০৪-এর মে ও ২০০৫-এর অক্টোবরে পৌরসভা নির্বাচন হয়। ২০০৮-এর ২৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০০৯ সালের ২২-২৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাচন করে নির্বাচন কমিশন এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দুটি বড় নির্বাচন করার সক্ষমতা প্রদর্শন করে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের অব্যবহিত পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার ফলে বড় রাজনৈতিক দলগুলো আপত্তি করে। কিন্তু নির্বাচিত সরকার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন না-ও করতে পারে আশঙ্কায় তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দৃঢ় থাকে এবং যথারীতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পৌরসভার মেয়াদ পূর্তির আগেই ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট পৌরসভা এবং সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন করে, তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করেনি। প্রায় আট বছর বয়সী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয় ২০১১ সালের মার্চ থেকে জুলাই মাসব্যাপী। অন্যদিকে পৌরসভার আগাম নির্বাচন হয় ২০১১-এর জানুয়ারিতে। এরপর ২০১৬-এর জানুয়ারির মধ্যেই পৌরসভা এবং মার্চ থেকে জুনের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়। সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে যথাক্রমে ২১ জুন ২০২০ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ও ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১-এর মধ্যেই। সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। অন্যান্য সিটি করপোরেশনে ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন হয়েছিল।
দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা খুব কম সময়ই নির্ধারিত পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে নির্বাচন পেয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিতদের মেয়াদ কখনও চার বছরে নেমেছে আবার কখনও আট বছরেও চলে গেছে। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, সামরিক শাসকদের আমলে তাদের অনুকূলে রাজনৈতিক দল গঠনের অভিপ্রায়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হয়েছে এবং অন্যান্য সময়ে পরে হয়েছে।
দেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন ভেঙে দিলে স্থানীয় সরকার প্রশাসনে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে শূন্যতা দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে, নাকি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে– এ প্রশ্নে বৃহত্তর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সুপারিশে সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। পত্রিকান্তরে দেখা গেছে, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ৯ থেকে ৩০ জনে বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। সে ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ডিলিমিটেশন করতে যথেষ্ট সময় লাগবে। অন্যদিকে সংবিধান সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে স্থানীয় সরকার সম্পর্কে সুপারিশ থাকা স্বাভাবিক। ফলে ডিম আগে, না মুরগি আগের মতো অনিষ্পন্ন প্রশ্নের উদ্রেক হতেই পারে। সে কারণে সংবিধান সংস্কারের আইনানুগ পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক জাতীয় সংসদের নির্বাচন দিয়ে এক মাসের মধ্যেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। ১৯৮৮ ও ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক মাসের মধ্যে যথাক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করে তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে জানুয়ারিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হওয়া যেতে পারে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার অধিক্ষেত্রের যারা পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেবেন না– এমন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দিয়ে প্রশাসনিক কমিটি গঠন করে সাময়িকভাবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় রাখাই ভালো হবে।
আ ক ম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী: অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মত মত স থ ন য় সরক র স র ষ ট রপত ২০০৮ স ল ড স ম বর র জন ত ক এক ম স ন র পর উপজ ল প রথম ক ষমত চ বছর বছর র এরশ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।
অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।