জাকিয়া সুলাতানা কর্ণিয়া। কণ্ঠশিল্পী। গতকাল প্রকাশ হয়েছে তাঁর গাওয়া দ্বৈত গান ‘আদর’। এ গানে তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন অশোক সিং। পাশাপাশি সিনেমায়ও গান করছেন তিনি। নতুন এ গান ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

‘আদর’ গানটি গেয়ে কেমন লাগল?
খুবই ভালো। শ্রোতারা এই সময় যেমন গান শুনতে চান এটি তেমনই। রোমান্টিক গানটি বেশ আগে গেয়েছিলাম। আমার সহশিল্পী ভারতের অশোক সিং। গানটি বাংলাদেশের একটি প্রজেক্টের জন্য করা হয়েছিল; পরে কাজটি হয়নি। এখন সহশিল্পীর ইউটিউব চ্যানেলে গানটির লিরিক্যাল ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন লিংকন রায় চৌধুরী। 

গান মানেই তো মিউজিক ভিডিও। ভিডিও ছাড়া গান সাদামাটা মনে হবে না?
হ্যাঁ, এটি সত্য যে, লিরিক্যাল ভিডিওতে বেশি ভিউ আসে না। কিন্তু অশোক সিং এর সঙ্গে আমি যখন এ কথাটি শেয়ার করি, তিনি তা মানতে চাইলেন না। বললেন, ভারতে নাকি লিরিক্যাল ভিডিওর ভিউ বেশি হয়। এ কারণে আগে তারা লিরিক্যাল ভিডিও প্রকাশ করেছেন। পরবর্তী সময়ে এর ভিডিও হবে।

আজকাল একক গানের চেয়ে দ্বৈত গানে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এর কারণ কী?
আমার কণ্ঠে শ্রোতারা রোমান্টিক গান শুনতে বেশি পছন্দ করেন। রোমান্টিক গান মানেই তো দ্বৈত গান। দর্শক-শ্রোতার পাশাপাশি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানও চাচ্ছিল আমি যেন বেশি দ্বৈত গান করি। তা ছাড়া ভক্তদের চাওয়া রয়েছে। আসল কথা হলো, দ্বৈত গান প্রকাশের মধ্য দিয়ে ভক্তদের কথা রাখার চেষ্টা করছি। অশোক সিং-এর এই গানটির আগে বেলাল খানের সঙ্গে দুটি গান করা হয়েছে।

ইদানীং রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসা শিল্পীরা নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না বলে অনেকেই মনে করেন।  আপনার কী মনে হয়?
আমাদের এখানে রিয়েলিটি শোগুলোতে আসে মধ্যবিত্ত পরিবারের শিল্পীরা। প্রথম দিকে তাদের চেষ্টা থাকলেও পরে চেষ্টা কমে যায়। তাদের নিয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্নের কমতি থাকে না। গানটা আসলে ধরে রাখতে হয়। ভেঙে পড়লে হবে না। স্বপ্ন অনুযায়ী তাকে এগিয়ে চলতে হবে। আমার মনে হয়, নিয়মিত চর্চার মধ্যে থাকলে একদিন না একদিন ওঠে আসবেই।

 

প্রতিটি আয়োজনেই নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরেন। নিজেকে ভার্সেটাই শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতেই কী এমন ভাবনা?
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই চেয়েছি, নানা ধরনের গানের মধ্য দিয়ে পরিচিতি গড়ে তোলার। এ কারণেই কখনও টেকনো, কখনও হার্ডরক, আবার কখনও ফোক ফিউশনের মতো মেলোডি গান কণ্ঠে তুলেছি। গায়কীর মধ্য দিয়ে নিজেকে বারবার ভাঙার চেষ্টা করছি। সবসময়ই নিরীক্ষাধর্মী গান করতে ভালো লাগে। একই ধরনের কাজ বারবার করতে চাই না বলেই নানা ধরনের গান করছি। নিজেকে ভেঙে সবসময়ই নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা জারি রাখছি।

এই সময়ের ব্যস্ততা কী নিয়ে?
ঈদের আর বেশি বাকি নেই। টিভি চ্যানেলের কিছু আয়োজনে হাজির হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। পাশাপাশি, নতুন  কিছু একক ও দ্বৈত গান প্রকাশ করারও পরিকল্পনা করছি। আশা করছি, নতুন গানগুলো শ্রোতাদের মন ভরাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ক য় স ল ত ন কর ণ য় গ ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত

বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ। 

সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।

আরো পড়ুন:

একা বাস করতে পারে যে পাখি

কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?

সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।

তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না। 

এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস। 

তিনি জানেন,  প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে।  বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।

সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন। 

একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।

সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।

চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।

গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারা বেশি কাঁদেন? 
  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত