হাজার হাজার শ্রমিক ও কর্মীর স্বার্থ বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ সংস্থার তদারকি এবং যথাযথভাবে আইন মেনে বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলার অনুমতি দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজে রিসিভার নিয়োগ এবং সম্পত্তি অ্যাটাচমেন্টে (সংযুক্ত) অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের প্রয়োজনীয়তা না থাকায় তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের দাখিল করা প্রতিবেদন উল্লেখ করে আদালত বলেন, এতে দেখা যায় যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংকগুলো ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজের সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ক্ষেত্রে খেলাপি ও শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ে তাদের দায়িত্ব পালনে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে; এর পরিণতি শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হবে।

রায়ে আদালত বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্য সব সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজের ঋণ অনুমোদন সুবিধার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং বিধিবিধান লঙ্ঘিত হওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বেক্সিমকো গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রশ্নবিদ্ধ ঋণসুবিধা দেওয়ায় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দায়ী হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হলো।

আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান ও আইনজীবী ফাতেমা এস চৌধুরী শুনানিতে ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনীরুজ্জামান। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও আইনজীবী আনিসুল হাসান শুনানিতে ছিলেন।

রায়ের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী মুনীরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেক্সিমকো গ্রুপের ১৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৯টি পাবলিক/প্রাইভেট কোম্পানি। যার প্রতিটিতে আদালতের আদেশ অনুসারে রিসিভার নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। রিসিভার কার্যক্রম বৈধ বলা হয়েছে রায়ে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রিসিভার প্রয়োজন নেই। বেক্সিমকো গ্রুপ নিজেরাই তাদের কোম্পানি পরিচালনা করবে। এ ক্ষেত্রে বেক্সিমকো গ্রুপকে দেশের প্রচলিত আইন–বিধিবিধান যথাযথভাবে মানতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার তদারকি থাকবে। বেক্সিমকো গ্রুপের খেলাপি ও শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

গত ২৫ বছরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অন্য সব ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিশোধের পর ঋণ মওকুফ বিষয়ে তথ্যাদি সরবরাহসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওই রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। এতে বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি সংযুক্ত (অ্যাটাচ) করতে ও গ্রুপটির কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনায় ছয় মাসের জন্য ‘রিসিভার’ নিয়োগ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া হয়। রিসিভার নিয়োগের আদেশ স্থগিত চেয়ে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পক্ষে আবেদন করা হয়। এর শুনানি নিয়ে গত ১২ নভেম্বর আপিল বিভাগ শুধু বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ক্ষেত্রে রিসিভারের বিষয়টি স্থগিত করেন। পাশাপাশি হাইকোর্টে এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। গত বছরের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়, যা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। সেদিন শুনানি শেষে আদালত ১২ মার্চ রায়ের জন্য দিন রাখেন। পর্যবেক্ষণ, সিদ্ধান্ত, নির্দেশনাসহ নয়টি পয়েন্ট উল্লেখ করে আজ রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন আদালত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প অব ক ম প ন জ ব যবস থ আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল 

বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।

তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড