সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুসংবাদ আমাকে খুবই ব্যথিত করেছে। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তিনি ছিলেন দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং তাঁর দক্ষতা ও নীতিনিষ্ঠা সর্বজনবিদিত। সমাজের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা ছিল। শুধু তা–ই নয়, দুবার (১৯৯৬ ও ২০০১) তিনি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি নিয়ে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সুস্পষ্ট ধারণা ছিল। তিনি ছিলেন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তাঁর নানামুখী প্রজ্ঞা রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনেক সহায়ক ছিল। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালে  সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) পরিচালক ছিলেন। ব্যাংক খাতের উন্নতি, এ খাতের সুশাসন, খেলাপি ঋণের হার নিয়ন্ত্রণে তাঁর পরামর্শ আমরা কাজে লাগিয়েছি। এ ছাড়া বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী ফোরাম এমনকি বাজেট প্রণয়নেও তাঁর জ্ঞানগর্ভ সুপারিশ অর্থ মন্ত্রণালয় পেয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

সানবিমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ শিক্ষা খাত এবং বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তাঁর সঙ্গে সামাজিক ফোরামে যখনই দেখা হয়েছে, আমি দিলখোলাভাবে কথা বলেছি, গল্প করেছি। তিনি ছিলেন একজন অমায়িক ও পরিশীলিত ভদ্রলোক।

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরকে অ্যাপেক্স গ্রুপের দায়িত্ব দিয়েছেন অনেক আগেই। এটাও তাঁর একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। এবার যখন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি। আশা ছিল, সুস্থ হয়ে ফিরে দেশে ফিরে আসবেন।

ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়া, কাগজপত্রের ভিত্তিতে ব্যাংকঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করা, বিদেশে অর্থ পাচার করা ইত্যাদি কাজ করে থাকেন দেশের একশ্রেণির ব্যবসায়ী। এর বিপরীতে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মতো শিল্পপতিরাও তৈরি হয়েছেন, যাঁরা দেশের সম্পদ। এ ধরনের শিল্পপতিদেরই বাংলাদেশ চায়। আমি মনে করি কর্ম, নিষ্ঠা, সাফল্য ও সততার দিক থেকে যেকোনো ব্যবসায়ী বা শিল্পপতির জন্যই আদর্শ হতে পারেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী।

লেখা: সালেহউদ্দিন আহমেদ, অর্থ উপদেষ্টা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল পপত

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে

ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
 
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  

ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।

সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
 
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’ 

আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’ 

সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নবীজির (সা.) অদ্ভুত দোয়া
  • অর্থ আত্মসাত: খুলনায় নারী ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
  • বগুড়ায় সারজিসের উপস্থিতিতে মারামারির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ৪ নেতা হাসপাতালে
  • অমিতাভের চিরকুট কিংবা ফ্যাশন নিয়ে রাধিকার ১০ প্রশ্নের জবাব, ১০ ছবি
  • মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে