রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব
Published: 14th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় ক্যাম্পে আয়োজিত বিশেষ ইফতার মাহফিলে তারা অংশ নেন।
ইফতার আয়োজনে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে প্রতি ব্লক থেকে ৭০ জন করে আসা লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার গ্রহণ করেন।
ইফতারের মেনুতে ছিল ছোলা, মুড়ি, কলা, আলুর চপ, পিঁয়াজু, ফলমূল ও জুস। সাধারণ রোহিঙ্গাদের মতো একই খাবার গ্রহণ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইফতারের আগে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এবারের সফরে আমি দুটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পেয়েছি। প্রথমত, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে, যাতে মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং তাদের অধিকার সুরক্ষিত থাকে। অতীতে যে নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার তারা হয়েছে, তা দূর করে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা জরুরি।”
তিনি আরো বলেন, “রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে আরও ভালো জীবনযাত্রার সুযোগ চায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা তাদের খাদ্য নিরাপত্তাকে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এই সংকট মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
এসময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। এবং তিনি জানান, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি সবসময় মানবিক আচরণ করেছে। আজকের এই আয়োজন সেই সংহতির প্রতীক।
ঢাকা/তারেকুর/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।
ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।