মা-বাবার কবর জিয়ারত শেষে ফেরার সময় কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
Published: 14th, March 2025 GMT
মা-বাবার কবর জিয়ারত শেষে বাড়ি ফেরার সময় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে তাঁকে উপজেলার কৃষ্ণপুরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত জাহাঙ্গীর হোসেন কৃষ্ণপুরা এলাকার মৃত আমিন উদ্দিনের ছেলে। তিনি আড়াইহাজার পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। পাশাপাশি প্যানেল মেয়রের দায়িত্বও পালন করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্যান্য কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন বিএনপির একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে নিজ ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে স্থানীয় সামাজিক কবরস্থানে মা-বাবার কবর জিয়ারতে যান জাহাঙ্গীর হোসেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কৃষ্ণপুরা এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোপনে খবর পেয়ে জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিজ এলাকা থেকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর ও নাশকতার মামলা রয়েছে। এতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।