প্রথমে ছিল হুমকি, পরে করা হলো শুল্ক আরোপ। এখন আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানাডার জোরপূর্বক সংযুক্তিকরণের কথাকে রসিকতা হিসেবে উপহাস করা হচ্ছে না। তার এই হুমকি গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচনা করা হচ্ছে। পাশপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছেন কানাডার বাসিন্দারা।
সাম্প্রতিক জরিপ অনুসারে, কানাডা-মার্কিন সম্পর্ক বাসিন্দাদের উদ্বেগের বিষয়গুলির তালিকার শীর্ষে থাকায় কানাডিয়ানরা তাদের দেশের জন্য সমাবেশ করছে এবং জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থান দেখতে পাচ্ছে।
‘এলবোস আপ’ অর্থাৎ কনুই উঁচু করা হকি খেলায় ব্যবহৃত একটি শব্দ ও চিহ্ন, যা যুদ্ধের প্রস্তুতি বোঝায়। কানাডা এখন এই চিহ্ন ও শব্দ সমাবেশে ব্যবহৃত হচ্ছে, পোশাকে খোদাই করা হচ্ছে এবং একটি নতুন পডকাস্টের শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের শুল্ক কতদিন বহাল থাকবে বা কানাডাকে ৫১তম মার্কিন রাজ্যে পরিণত করার তার আকাঙ্ক্ষার পিছনে কী রয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু রয়টার্সের সাথে কথা বলা ১১ জন ক্ষুব্ধ কানাডিয়ান জানিয়েছেন, তারা বিশ্বাস করেন যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কানাডিয়ানরা মার্কিন পণ্য বর্জন করছে এবং মার্কিন ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করছে। প্রদেশগুরো দোকান থেকে আমেরিকান অ্যালকোহল সরিয়ে নিচ্ছে। বিশ্বাসঘাতকতার অনুভূতি বাসিন্দাদের মনে গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
এলবোস আপ র্যালির আয়োজক পিটার ওয়াল বলেন, “এটি উদ্বেগ, হতাশা, ক্রোধের মিশ্রণ। আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও মিত্র আমাদের বিরুদ্ধে চলে গেছে এবং আমরা আসলে কী করব তা জানি না।”
সাংবাদিক জর্ডান হিথ-রালিংস, যিনি এলবোস আপ নামে একটি নতুন পডকাস্টে তার হতাশা প্রকাশ করেছেন, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কানাডার সম্পর্কের অবস্থাকে বিবাহবিচ্ছেদের ধাক্কার সাথে তুলনা করেছেন।
জর্ডান বলেন, “আপনার জীবনের যেসব জিনিসকে আপনি হালকাভাবে নিয়েছিলেন, সেগুলো হঠাৎ করেই চলে গেছে। আপনাকে একজন ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে হবে এবং আমি মনে করি দেশ হিসেবে আমরা সেখানেই আছি। আমার মনে হয় অনেক কানাডিয়ান সত্যিই কষ্ট পেয়েছেন। আমার মনে হয় অনেক কানাডিয়ান সত্যিই রাগান্বিত। আমি নিজেও নিশ্চিতভাবেই এমনটাই অনুভব করছি।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।
ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।