গুরুদাসপুর পৌরসভার কোথাও আস্তাকুঁড় কিংবা ডাম্পিং স্টেশন নেই। শহরের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ব্যস্ততম সড়ক, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও নদীর তীরে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পথচারী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। নদীর তীরে বর্জ্যের স্তূপে সংকুচিত হয়ে গেছে এক সময়ের স্রোতস্বিনী নন্দকুঁজা নদী। 
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন আক্ষেপ করে বলেন, সড়কের মোড়ে মোড়ে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে-পেছনে, বাজারসংলগ্ন জায়গায়, এমনকি লোকজনের বাসাবাড়ির সামনেও দিনের পর দিন বর্জ্য পড়ে থাকে। উৎকট দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে থাকে; মশা-মাছিসহ নানা রকমের পোকামাকড়ের অবাধ বংশবিস্তার চলছে। ময়লা-আবর্জনায় নদী ভরাট ও দূষিত হচ্ছে। এ জন্য সাধারণ মানুষ নয়, খোদ পৌর কর্তৃপক্ষই দায়ী বলছেন তারা। 
১৯৯১ সালে গুরুদাসপুর ‘পৌরসভা’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০০৫ সালে এটিকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। ১১ বর্গকিলোমিটারের এ পৌরসভার আওতায় উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ চাঁচকৈড় হাট, গুরুদাসপুর বাজারসহ ছোট ছোট বিভিন্ন বাজার ও কলকারখানা রয়েছে। এসব এলাকার পাড়া-মহল্লার আনাচেকানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা, সেগুলোর সিংহভাগই গৃহস্থালি ও হোটেল-রেস্তোরাঁর পচনশীল বর্জ্য পদার্থ। 
সরেজমিন দেখা গেছে, নন্দকুঁজা নদী ছাড়াও শহরের গুরুদাসপুর বাজার ভূমি অফিসের 
সামনে, খামারনাচকৈড় বাদুরতলা ঘাটে, চাঁচকৈড় প্রফেসর পাড়ার পাকা সড়ক ঘেঁষে, চলনালী হরিজন পল্লির পাশের পাকা সড়ক, দুখা ফকিরের মোড়, চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুলের সামনের সড়কের ওপর বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এসব ব্যস্ততম এলাকায় খেয়ালখুশি মতো বর্জ্য ফেলায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দুর্গন্ধের পাশপাশি নানাভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। 
চাঁচকৈড় হাটের ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন, আকতার আলী, আব্দুস সামাদসহ অনেকেই বলেন, চাঁচকৈড় হাটের উত্তরাংশে নদীর তীর দখল করে আধা কিলোমিটারজুড়ে রয়েছে পাকা সড়ক। সড়কের ওপরই বসে বাঁশ-কাঠ, ধান, রসুন, মাংসসহ গরু-ছাগলের হাট। রয়েছে মুরগি বাজার, মাছের আড়ত, পৌর শৌচাগারও। শুধু পৌর শহর আর মহল্লার বর্জ্য নয়, এসব হাটবাজারের বর্জ্যও হরহামেশাই ফেলা হয় নন্দকুঁজার বুকে। অথচ নন্দকুঁজা নদীকে কেন্দ্র করেই নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠে চাঁচকৈড় হাট।
শিক্ষার্থীরা জানায়, দুর্গন্ধময় পচা আবর্জনায় ভরা রাস্তাঘাটে চলতে গিয়ে তাদের বমি আসে, মাথা ঘোরায়। এমনকি আবর্জনার দুর্গন্ধে বাসাবাড়িতে থাকাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে। 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

এএসএম আলমাস বলেন, নদীর তীরে 
বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব বর্জ্য অপসারণ করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।
উপজেলা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু সমকালকে বলেন, নদী এবং নদীর আশপাশে বর্জ্য না ফেলে ছোট ডাস্টবিন অথবা ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করলে এ সমস্যা হতো না। 
গুরুদাসপুর পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ বলেন, পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে জমি কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জায়গা পেলেই বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর জ য ফ ল নদ র ত র র বর জ য সড়ক র প রসভ

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ