ঠাকুরগাঁওয়ে অপহৃত মিলন হোসেনের লাশ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত একজনের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মহেশপুরের বিট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় এক মাস আগে অপহৃত হয়েছিলেন মিলন হোসেন (২৩)। গতকাল বুধবার রাতে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুরের বিট বাজার এলাকা থেকে মিলনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। বিষয়টি জানাজানি হলে আজ ভোরে মিলনের এলাকার লোকজন এসে বিট বাজারের ওই বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করেন। প্রথমেই বাড়ির জানালা–দরজা ভেঙে মালামাল লুট করা হয়। এরপর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

আজ সকাল ১০টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে পুড়ে যাওয়া একটি ঘরের অবকাঠামোর কয়েকটি খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। কোথাও কোথাও ধোঁয়া উড়ছে। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির মূল কাঠামো ভেঙে তাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। রান্নাঘর ও গোয়ালঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়িতে কয়েকটি দেয়াল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। উঠানের গাছপালাও কেটে ফেলা হয়েছে। অনেকে দেয়ালের ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

গোয়ালঘরের ইট খুলে নিচ্ছিলেন কয়েকজন। তাঁদের কেউ নাম–পরিচয় বলতে রাজি হননি। ইট খুলে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাঁদের একজন বলেন, ‘এই বাড়ির কিছুই রাখিমোনি।’ এ সময় তিনি অন্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা সব মাটিত মিশায় দেও। খুনির নামনিশানা রাখিবোনি।’

মিজানুর রহমান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, নিহত মিলনের বাড়ির এলাকার লোকজন এই ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছেন। বাড়ির মালামাল লুটপাট করতে তাঁদের সঙ্গে এই এলাকার লোকজনও যোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম মুসতাক বলেন, মানুষের ঢল এসে ওই বাড়িতে হামলা চালান। এরপর তাঁরা আগুন দেন। তাঁদের সামলানো সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুনদফায় দফায় বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, দেওয়ার পরও হত্যা করা হলো তরুণকে৪ ঘণ্টা আগেমিলন হোসেন হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র র এল ক ঠ ক রগ এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে

মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)। 

চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। 

আরো পড়ুন:

‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’

এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার

শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। 

সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।  

সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’ 

সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’ 

সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ 

শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’ 

সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’ 

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
  • আমাকে বিব্রত-বিরক্ত করে আপনাদের কী উপকার, প্রশ্ন এডলফের