Samakal:
2025-09-17@23:01:13 GMT

পাইকারি বাজারেও ক্রেতা কম

Published: 20th, March 2025 GMT

পাইকারি বাজারেও ক্রেতা কম

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বান্টি এলাকার বাটিক কাপড়ের মার্কেটের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। দেশের প্রায় সব জেলা থেকেই ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন। রমজান মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ মার্কেটে বিক্রি বেশ ভালো ছিল। কিন্তু এখন মার্কেটটির সামনের সারির দোকানগুলোকে খুচরা ক্রেতাদের আনাগোনা থাকলেও ভেতরের সারির দোকানগুলোতে ক্রেতার আনাগোনা একেবারেই কমে গেছে।

বাটিক মার্কেটের ব্যবসায়ীদের ধারণা, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসবে, ক্রেতার সংখ্যা আরও কমে যাবে। গতকাল বুধবার দুপুরে এমনটাই জানান হাজী বারেক মোল্লা সুপারমার্কেটের ঝুমু বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, ঢাকার বাইরে থেকে ক্রেতা আসছেন। বিক্রি কম। ব্যবসায়ীরা অনেকে অলস সময় কাটাচ্ছেন। এর কারণ শীতের পর পরই এবারের ঈদ এসেছে। এ জন্য পাইকারি ক্রেতা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। গত বছর রমজান মাসে ২৫ লাখ টাকার কাপড় বিক্রি করতে পারলেও এ বছর তিনি এখন পর্যন্ত ১০ লাখ টাকার কাপড় বিক্রি করতে পেরেছেন।

বুধবার বিকেলে দেখা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে বান্টি বাজারের বাটিক মার্কেটগুলোতে ক্রেতার আনাগোনা তেমন নেই। দোকান মালিকরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। কেউ আবার দোকান গোছাতে ব্যস্ত। কেউ দোকান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। বান্টি এলাকার প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। মাঝেমধ্যে দু-একজন খুচরা ক্রেতার দেখা মিললেও অনেকে থ্রিপিসের দাম কিছুটা বেশি বলে জানান। এমনই একজন ক্রেতা আব্দুস সালাম জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাটিক মার্কেটে থ্রিপিসের দাম কিছুটা বেশি। বাজারের ব্যবসায়ীরা সুতার মূল্য বেশি হওয়ায় কাপড়ের দামও বেড়েছে বলে জানান।

থ্রিপিস কিনতে আসা ছনপাড়া গ্রামের ক্রেতা লিপি আক্তার জানান, তিনি ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে দুটি থ্রিপিস কিনেছেন। দাম কিছুটা বেশি। দোকানে তেমন ভিড় নেই বলে নিজেই দেখে পছন্দমতো থ্রিপিস কিনতে পেরেছেন।

বান্টি বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাটিক, থ্রিপিসসহ বাটিক কাপড়ের রাজধানী বান্টি বাজার। প্রায় ৪৫ বছর আগে এ এলাকায় বাটিকশিল্পের কাজ শুরু হয়। আবহাওয়াজনিত কারণে এবারের ঈদে সুতি কাপড়ের প্রতিই মানুষের আগ্রহ বেশি। তাই সুতি কাপড়ে বাটিকের কাজ করছেন এখানকার কারিগররা। বাটিকশিল্প ঘিরে বান্টি এলাকায় গড়ে উঠেছে বিশাল মোকাম।

দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রমজানের ১৬ তারিখ পর্যন্ত বাটিকের মোকামে বেশ ভালোই বিক্রি হয়েছিল। বান্টি এলাকায় মহাসড়কের দুই পাশে ২০টি মার্কেটে প্রায় দুই হাজার দোকানের প্রতিটিতে একদিনে গড়ে চার-পাঁচ লাখ টাকার কাপড় বিক্রি হয়ে থাকে। বছরে এখানে গড়ে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এবারের ঈদে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার কাপড় বিক্রির লক্ষ্য ছিল ব্যবসায়ীদের।

মালিয়া এক্সক্লুসিভ কালেকশনের মালিক জুয়েল মিয়া জানান, এ এলাকার বাটিকের কাপড় ঢাকাসহ দেশের বহু এলাকায় যায়। বান্টির বাটিক দেশ ছাপিয়ে মধ্যপ্রাচ্যেও যাচ্ছে। সৌদি আরব, দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে বাটিকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বছর তিনি তাঁর পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে রমজানের ১৬ দিনে ৩০ লাখ টাকার থ্রিপিস বিক্রি করতে পেরেছেন। এখন ক্রেতা কম। প্রতিদিন কিছু খুচরা ক্রেতা দোকানে আসেন।

শামীম ফ্যাশন কর্নারের মালিক তরিকুল ইসলাম জানান, ঈদ ঘনিয়ে এলে পাইকাররা এখানে কম এলেও খুচরা ক্রেতার পদচারণায় মুখর থাকত। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। পুরো মার্কেটে তেমন কোনো ক্রেতা নেই।

একই কথা জানালেন সামির থ্রিপিসের মালিক সামির আলী, শামীম ফ্যাশন কর্নারের মালিক তরিকুল ইসলাম, আনাস বাটিক ঘরের মালিক রমজান মিয়া, প্রভা থ্রিপিস অ্যান্ড জিহাদ বুটিকসের স্বত্বাধিকারী মঞ্জুর হোসেন, মেসার্স আয়েশা থ্রিপিসের মালিক বাচ্চু মিয়া, সানাউল্লাহ শপিংমলের মালিকসহ অন্য ব্যবসায়ীরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব যবস য় দ র ব যবস য় র এল ক য় রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে