ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের আদেশ আটকে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক সরকারি আদেশের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এ বিষয়ে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত আদালতের আদেশ বলবৎ রাখতে বলা হয়েছে। আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।

ইসরায়েলের বিরোধী রাজনীতিকসহ কয়েকটি গোষ্ঠী শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্তের সরকারি আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে পিটিশন দায়ের করেছিলেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে রোনেন বারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাঁর দায়িত্বের শেষ দিন হবে আগামী ৮ এপ্রিল। এর আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে তারিখটি ১০ এপ্রিল বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনইসরায়েলের নিরাপত্তাপ্রধানকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু২১ মার্চ ২০২৫

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলা আগেভাগে আঁচ করতে না পারার কারণ দেখিয়ে শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

আদালতের আদেশের পর ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারাভ–মিয়ারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখনই নতুন নিরাপত্তাপ্রধানের নাম ঘোষণা করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনইসরায়েলের ক্ষমতায় টিকে থাকতে গাজায় নতুন করে নৃশংসতা চালাচ্ছেন নেতানিয়াহু২০ মার্চ ২০২৫

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের ফলে শিন বেতের প্রধান রোনেন বারের পদের ক্ষতি করে—এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া নিষিদ্ধ থাকবে। একজন মুখপাত্রের মাধ্যমে নেতানিয়াহুর উদ্দেশে পাঠানো এক বার্তায় অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।

২০২১ সালের অক্টোবরে শিন বেতের প্রধান হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদে রোনেন বারকে নিযুক্ত করা হয়েছিল।

আরও পড়ুনগাজায় হামলা চালিয়ে চার শতাধিক মানুষ হত্যার পর নেতানিয়াহু বললেন, ‘এটা কেবল শুরু’১৯ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বরখ স ত র ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই

বিভতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাসে একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, যিনি লবটুলিয়ার জঙ্গলে সরস্বতী কুন্ডের পাড়ে নানা জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গাছপালা এনে লাগাতেন। সেসব গাছে ফুল ফুটলে আনন্দে তিনি আত্মহারা হয়ে যেতেন। আমারও একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, নাম আজাহার। প্রায় আমারই সমবয়সী।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিভিন্ন শালবনে ঘুরতে গেলে মাঝেমধ্যে তিনি আমার সাথি হতেন। শালবনে কত গাছ! তেমন কিছুই চিনি না। কিন্তু সেই শালবনের কোলে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা আজাহার ঠিকই সেসব গাছ চিনতেন, আর জিজ্ঞেস করলে টপাটপ নাম বলে দিতেন। কিন্তু গোলমাল বাধত সেসব নাম শুনে। কেননা সেসব নাম বলতেন, তাঁদের স্থানীয় ভাষায়। বইয়ে সেসব নাম খুঁজে পাওয়া যেত না।

একদিন শালবনের মধ্যে একটা ছোট গাছ দেখলাম, গাছের গুঁড়ির চারদিকে তীক্ষ্ণসরু ও সোজা প্রচুর কাঁটা বেরিয়েছে। পাতাগুলো দেখতে কিছুট পেয়ারাপাতার মতো। প্রচুর ডালপালায় গাছটার মাথা ঝাঁকড়া হয়ে আছে। ডালের আগায় শিষের মতো মঞ্জরিতে প্রচুর ঘিয়া ও সাদাটে রঙের খুদে ফুল ফুটেছে। চিনি না। তাই আজাহারকে জিজ্ঞেস করলাম, নাম কী? চট করেই বলে দিলেন, ছেচরা কই। মাছের নাম কই হয় জানি, কিন্তু কোনো গাছের নাম কই হতে পারে? অগত্যা ছবি তুলে ওই নামকেই মনে গেঁথে ফিরে এলাম ঢাকায়।

আজাহার বললেন, এখন ফুল দেখছেন। কদিন পরেই ওসব ফুল থেকে ছোট ছোট গুলির মতো প্রচুর ফল ধরবে। ছোটবেলায় আমরা সেসব কাঁচা ফল নিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফটকা বানিয়ে তার চোঙে একটা একটা করে ফল দিয়ে বন্দুকের মতো গুলি গুলি খেলতাম। চোঙের ভেতরে একটা সরু কাঠি ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে সেসব ফল গুলির মতো ফাটাতাম। ফটাস করে শব্দ হতো। এ সময় মাসখানেকের জন্য আমরা এ গাছের ফল, পরে জালি খেজুর নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতাম। শালবনে সে সময় এ গাছের অভাব ছিল না। এখন তো দেখতে হলে খুঁজে বের করতে হয়।

ফিরে এসে সে ছবি পাঠালাম জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সাবেক বোটানিস্ট সামসুল হক ভাইয়ের কাছে। দুই দিন পরেই তিনি জানালেন, গাছটার স্থানীয় নাম ছেচরা কই, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Bridelia retusa, গোত্র ফাইলেনথেসি। বইপত্রে এ গাছের চারটি বাংলা নাম পেলাম—কাঁটাকই, কাঁটাকুশি, কামকই, আকদানা। বাংলাদেশ ছাড়াও এ গাছ আছে নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সাধারণত উঁচু ও শুষ্ক বনাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়। ছোট বৃক্ষজাতীয় গাছ, প্রায় ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, দ্রুত বাড়ে। এ গাছের কাঁটা থাকায় বন্য প্রাণীরা এদের ধারে ঘেঁষে না, এমনকি এর বাকল দিয়েও বিষ তৈরি করা হয় বলে শুনেছি।

ফল গোলাকার, ছোট, কাঁচা ফল ময়লা সবুজ, পাকলে খোসায় লাল রং ধরে। ছেচরা কইগাছের কাঠ মাঝারি শক্ত থেকে শক্ত, কাঠের রং ময়লা লাল। রঙে ও গুণে কাঠ উৎকৃষ্ট। নির্মাণকাজ ও গরুর গাড়ির চাকা বানাতে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও শুষ্ক তৃণভূমিতে যদি কোনো গাছ থাকে, তবে সেসব ঘাসে আগুন দিলে এ গাছ পোড়ে না বলে কথিত রয়েছে। বীজ দ্বারা সহজে বংশবৃদ্ধি বা চারা হয়।

পূর্বাচল উপশহরের শালবনে দেখা পাটখই ফল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কখন ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে, সেই আতঙ্কে দিন কাটছে তেহরানের মানুষের
  • ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র কেড়ে নিল তরুণ ইরানি কবি আর তাঁর পুরো পরিবারকে
  • চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু
  • আমি কারো সঙ্গে পাল্লা দিতে আসিনি: অপু বিশ্বাস
  • এমন রাত বাড়তে থাকলে একসময় ইসরায়েলিরা প্রশ্ন তুলবে, ‘আমরা কোথায় যাচ্ছি?’
  • হামজাদের কোচিং স্টাফ বাড়ছে
  • ব্যক্তিগত মুহূর্ত নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা, স্পষ্ট বার্তা দিলেন অপু
  • ব্যক্তিগত মুহূর্ত নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় আমি নেই: অপু বিশ্বাস
  • শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই
  • ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানের বিপ্লবী গার্ডপ্রধান হোসেইন সালামি কে ছিলেন