পবিত্র রমজানের প্রথম ২০ দিনে প্রায় ৪৫ হাজার রোজাদারকে ইফতার করিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবির। এতে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

শুক্রবার (২১ মার্চ) শাখা শিবিরের দাওয়াতি সংগঠন ‘মিনার’ এর ব্যানারে ২০ দিনব্যাপী ‘গণ-ইফতার ও দারসুল কোরআন’ আয়োজনটি শেষ হয়। 

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ ও ছাত্রীদের জন্য ছাত্রী হলগুলোতে প্রতিদিন এ আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এ গণ-ইফতারে অংশ নেন। ইফতার ব্যবস্থাপনায় অন্তত ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়মিত কাজ করেছেন। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

আরো পড়ুন:

গাজায় ভয়াবহ হামলার প্রতিবাদে চবিতে বিক্ষোভ

চবি সমাবর্তনে থাকতে পারবে মূল সনদ গ্রহণকারীরাও

গণ-ইফতারের বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত ছিলেন শিবিরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, সৌদি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ড.

মুসা বিন সালমান খিবরানী, জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরের সহকারী সেক্রেটারি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

চবি শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমাদের প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। শুভাকাঙ্ক্ষী ও সাবেক নেতাদের সহযোগিতায় আমরা প্রাথমিকভাবে আয়োজন শুরু করি। পরে আমাদের আয়োজন দেখে অনেকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন।”

তিনি বলেন, “গণইফতার কর্মসূচিতে কয়েকটি উপ-কমিটি কাজ করেছে। কেউ দারসুল কুরআনের দাওয়াত দিয়েছেন, কেউ খাবার প্রস্তুত করেছেন, আবার কেউ সেগুলো সুষ্ঠুভাবে বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন। ছোট ছোট ছেলেরাও আমাদের সহযোগিতা করেছে।”

শাখা শিবিরের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, “মাহে রমজান উপলক্ষে আমাদের ২০ দিনব্যাপী দারসুল কুরআন ও গণ-ইফতার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, আমাদের জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক।”

তিনি বলেন, “প্রতিদিন দারসুল কুরআনের মাধ্যমে আমরা কুরআনের গভীর শিক্ষা ও তাৎপর্য শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছি। যাতে তারা নিজেদের জীবনকে কুরআনের আলোকে পরিচালিত করতে পারে। পাশাপাশি গণইফতার আয়োজনের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে চেয়েছি।”

গণইফতার কর্মসূচি শেষ হলেও আর্থিক সমস্যায় থাকা শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করলে তাদের ইফতারের ব্যবস্থা করা হলে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রআন র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।

বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ