Samakal:
2025-06-16@06:10:35 GMT

কিষানির ‘সূর্যমুখী স্বপ্ন’

Published: 22nd, March 2025 GMT

কিষানির ‘সূর্যমুখী স্বপ্ন’

রাউজান উপজেলায় সূর্যমুখী চাষে বিপ্লব ঘটতে চলেছে। কৃষকের আগ্রহ আর কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বছর বছর বাড়ছে সূর্যমুখীর চাষ। এবার বাম্পার ফলন পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। উপজেলার অনেক মাঠ যেন হলুদগালিচা, সেখানে মৌমাছির গুঞ্জরণে মোহিত মানুষ। সূর্যমুখী ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন অনেক মানুষ আসেন, তারা ছবি তুলে ফেসবুকে দেন। 
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাউজানে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রায় ৩০ টন তেল উৎপাদন হবে এবার। বাজারে প্রতি লিটার সূর্যমুখী তেল বিক্রি হয় ৪৫০ টাকায়। সে হিসাবে এবার উপজেলায় এক কোটি ৩৫ লাখ টাকার তেল উৎপাদিত হবে। এতে কয়েক হাজার পরিবারে সচ্ছলতার সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে।
‘সূর্যমুখী গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত পৌরসভার কাঁশখালী কূলে কথা হয় কৃষক মো.

হোসেনের সঙ্গে। তিনি সমকালকে বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সূর্যমুখীর ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে সঠিকভাবে সার, ওষুধ ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছি। বাজারে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা থাকায় লাভ নিয়ে আমি চিন্তিত নই।’
চিকদাইর ইউনিয়নের দুই কিষানি ‘পার্টনার প্রকল্পের’ আওতায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। কিষানি মরিয়ম বেগম ও রশেদা বেগম বলেন, ‘৫০০ কেজি তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যৌথভাবে সূর্যমুখী চাষ করেছি। সূর্যমুখী ক্ষেতের অপরূপ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন দর্শনার্থী। তারা ফুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন। দর্শনার্থীদের ফসল নষ্ট না করার অনুরোধ জানাতে মাঠে থাকতে হয় আমাদের।’ হলদিয়া ইউনিয়নের কৃষক আলী মজুমদার বলেন, ‘দিনদিন বাজারে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা বাড়ছে। এই চাষাবাদে খরচ কম, লাভ বেশি।  কৃষি অফিস সহযোগিতা ও প্রণোদনা দিয়ে উৎসাহিত করছে।’
উপজেলার চিকদাইর, ডাবুয়া, সদর, বাগোয়ান ইউনিয়নের সূর্যমুখী ক্ষেতে কৃষকরা এখন পরিচর্যায় ব্যস্ত। ভালো ফলন ঘরে তোলার আশায় ক্ষেতের সর্বোচ্চ পরিচর্যা করছেন তারা।  হলুদ রঙের ফুলের ঘ্রাণে ম-ম করছে সূর্যমুখী ক্ষেত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, ‘উপজেলায় এবার প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। প্রায় ৩০ টন তেল পাওয়া আশা করছি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৬৪০ জন কৃষকের মধ্যে সরকারি প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ, সার ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কমবেশি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। বাজারে সূর্যমুখী তেলের দামও ভালো। প্রতি লিটার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়।  তেল উৎপাদনের পাশাপাশি খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়, যা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় হয় কৃষকের।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ল উৎপ দ করছ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা  ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ