Prothomalo:
2025-11-03@15:35:55 GMT

জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখুন

Published: 25th, March 2025 GMT

গুজব সংক্রমণ ব্যাধির মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আর সেই গুজবের ভিত্তি যদি রাজনীতি হয়, তাহলে তো কথাই নেই। মুহূর্তে জন থেকে জনে, এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের ভেতরে ও বাইরে একটি মহল গুজব ছড়িয়ে আসছে। যাদের উদ্দেশ্য যেকোনো মূল্যে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা।

সাম্প্রতিক কালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির একজন নেতার বার্তাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। পক্ষে–বিপক্ষে নানা রকম প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এমনকি এই প্রচারণা থেকে রাষ্ট্রীয় বাহিনীও রেহাই পায়নি। রাজনৈতিক দলের নেতা বা সরকারের কোনো পদাধিকারীর আগের কোনো বক্তব্যকে এখনকার বক্তব্য বলে চালানো হচ্ছে। কেউ কেউ গুজবের আগুনে বেগুনপোড়া দিয়ে আত্মসুখও অনুভব করছেন।

গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেওয়ার পর ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। স্বাভাবিকভাবে সবাই আশা করেছিলেন, দেশে যে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা চলছিল তার অবসান হবে, অর্থনীতি ও জনজীবনে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। কিন্তু বাস্তবতা সেটা বলছে না।

আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, যতই দিন যাচ্ছে, আন্দোলনকারী দল ও পক্ষগুলোর মধ্যে অনৈক্য–বিভেদ বাড়ছে। এই সুযোগে দেশের ভেতরে ও বাইরে একটি চক্র অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছ। আরেকটি চক্র বিদেশে বসে যাকেই অপছন্দ হচ্ছে, তাকে হুমকি দিচ্ছে, বাড়িঘর ও অফিস হামলা চালানোর জন্য উসকানি দিচ্ছে। অতীতে তাদের উসকানির কারণে কিছু স্থানে অঘটন ঘটলেও এখন আর জনগণ তাদের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না। 

৫ আগস্টের আগের অরাজক অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে যখন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে, তখন কোনো ঘটনা, বিবৃতি কিংবা গুজবকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হোক, তা কারোরই কাম্য নয়। অর্থনৈতিক উন্নতি ও সহিষ্ণু রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরির জন্য দলমত–নির্বিশেষে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বিশেষ করে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী কোনো পক্ষের এমন কিছু করা বা বলা উচিত হবে না, যাতে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। সে রকম কিছু হলে সুযোগসন্ধানীরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগ পাবে, যা কখনোই করতে দেওয়া সমীচীন হবে না। সংশ্লিষ্ট সবাইকে মনে রাখতে হবে, গণ–অভ্যুত্থানের লক্ষ্য পূরণের জন্য জাতীয় ঐক্য আরও মজবুত করতে হবে।

ডিসেম্বরের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমে জানা যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের কারও এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে নির্বাচনপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। বহুদলীয় গণতন্ত্রে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন যেকোনো দল করতে পারে। অতীত অপরাধের বিচারও দাবি করতে পারে। কিন্তু ‘আমরা দমন করব’, ‘প্রতিহত করব’—এ ধরনের স্লোগান স্বৈরাচারী আমলের কথাই মনে করিয়ে দেয়।

গুজব তারাই সৃষ্টি করে, যাদের ভালো কিছু করার সামর্থ্য নেই। সমাজের প্রতিটি দায়িত্বশীল নাগরিককে চলমান সংকট সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। আন্দোলনকারী সব পক্ষের প্রতি আহ্বান থাকবে, এসব উসকানি ও গুজবে কান দেবেন না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।

বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ