সেতুর দুই গার্ডারের মাঝের ফাঁকা স্থানে বাসা বেঁধেছে কবুতর। সে কবুতর ধরতে দুই গার্ডারের মধ্যে ঢোকে ৯ বছরের শিশু নূর মোহাম্মদ। কিন্তু বিপত্তি বাধে বের হওয়ার সময়। শিশুটি আর বের হতে পারছিল না। একপর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তিন ঘণ্টা চেষ্টা করে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধার হওয়া নূর মোহাম্মদ নওগাঁ পৌরসভার কাঁঠালতলী এলাকার রিপন হোসেনের ছেলে। উদ্ধারের পর শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। সে পৌরসভার উপশেরপুর এলাকায় তার নানাবাড়িতে আছে।

শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, শিশু নূর মোহাম্মদ কয়েক দিন আগে পৌরসভার উপশেরপুর এলাকায় নানাবাড়িতে বেড়াতে যায়। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নূর মোহাম্মদ অন্য শিশুদের সঙ্গে নানাবাড়ির পাশে সুলতানপুর সেতুতে বাসা বাঁধা কবুতর ধরতে যায়। এ সময় তার সঙ্গে আরও দুই শিশু ছিল। কবুতর ধরার জন্য নূর মোহাম্মদ সেতুর উত্তর রেলিংয়ের (সীমানাদেয়াল) পাশে দুই গার্ডারের মধ্যে প্রবেশ করে। কিন্তু এরপর সে আর বের হতে পারছিল না। বিপদ বুঝতে পেরে নূর মোহাম্মদকে উদ্ধারের জন্য তার সঙ্গে থাকা অন্য শিশুরা তার নানাবাড়িতে খবর দেয়। ঘটনাটি জানার পর শিশুটির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে খবর পেয়ে নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টা করে শিশু নূর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারের কার্যক্রম দেখতে সুলতানপুর সেতুর ওপর ও নদীর দুই তীরে শত শত মানুষ জড়ো হন।

নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গার্ডার সেতুতে দুই গার্ডারের মধ্যে ফাঁকা রাখা হয়। আর গার্ডারের নিচে স্প্রিং থাকে। সেতুর ওপর ভারী যানবাহন উঠলে ওই স্প্রিং লোড নেয়। এ সময় দুই গার্ডারের মধ্যের অংশ নড়াচড়া করে। দুই গার্ডারের মধ্যে ফাঁকা না রাখলে সেতুর গার্ডার ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। প্রযুক্তিগত কারণে দুই গার্ডারের মধ্যে ফাঁকা রাখাই লাগবে। কিন্তু মানুষ ঢুকতে পারে, এত বড় ফাঁকা থাকার কথা নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ম হ ম মদ প রসভ র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ