“মাহমুদা ইসলাম সাথি (১৯) সোশ্যাল মিডিয়ায় মিষ্টি কণ্ঠে কথা বলে ছেলেদের সাথে সখ্যতা গড়তেন। এরপর বাসায় ডেকে নিয়ে ব্লাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করতেন। তার এই চক্রের সবাই শহরে একটি ভাড়া বাসাকে নিরাপদ ভেবে চালাতেন এই অপকর্ম।”

বুধবার (২৬ মার্চ) চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানান চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ মজিবুর রহমান। যে ঘটনা উন্মোচন হয়েছে একটি মামলার সূত্র ধরে।

মামলার বাদী ভুক্তভোগী মহসীন মাতব্বর বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়াতেই গত বছরের ১২ ডিসেম্বর সাথি নামের মেয়েটির সাথে আমার পরিচয়। এরপর সে আমাকে ১৪ ডিসেম্বর তার ভাড়া বাসায় একটি প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। পরে আমি তার সাথে গেলে সেখানে তার সহযোগী কয়েকজন যুবককে দিয়ে আমাকে রুমের মধ্যে জোরপূর্বক আটকে রেখে উলঙ্গ করে ছবি ও ভিডিও করে। পরে তা সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমি আমার স্ত্রীর সহায়তায় তিন লাখ টাকা সেসময় তাদেরকে দিয়ে ছাড়া পাই।”

ভুক্তভোগী মহসীন আরও বলেন, “এরপর রাসেল নামে সাথির আরেক সহযোগী আমাকে ফোন করে আরো টাকা দাবি করে। অন্যথায় সে ওই ভিডিও এবং ছবি আমার আত্মীয় স্বজনের কাছে পাঠাবে বলে হুমকি দেয়। এর কয়েকদিন পর কোড়ালিয়ার আমার পাশের বাড়ির হাবিব গাজী আমার বাড়িতে আসে এবং আমাকে সেই ধারণকৃত নগ্ন ভিডিও দেখিয়ে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় ভিডিও এলাকার সবার কাছে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। আমি তাকে আমার অপরাগতা জানিয়ে পূর্বে এই সংক্রান্তে তিন লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানাই। তখন সে আমাকে ১৫ দিন সময় দিয়ে বলে, টাকা না দিলে সে এলাকায় এটা ছড়িয়ে দেবে এবং ক্ষতি করবে। পরে আমি বাধ্য হয়েই চাঁদপুর সদর মডেল থানায় ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং ৮৩/২৫০ তারিখ, ২৫/০৩/২০২৫।”

এদিকে সাথির বিষয়ে খোঁজ খবর নিলে জানা যায়, তিনি অনলাইনে ধনাঢ্য ছেলেদের টার্গেট করতেন। নানা সময়ে ছেলেদের কাছ থেকে নানা প্রলোভনে টাকা ধার নিতেন। এরপর সেসব ছেলেদের তার বিষ্ণুদীর মাদ্রাসা রোডের আক্তার হোসেন খানের মালিকানাধীন ‘তাজমহল মনোয়ারা ম্যানশন’ নামক বাসার নিচতলায় নিয়ে ফুর্তি করতেন। সহজ সরল ছেলে পেলে তার সহযোগীদের দিয়ে ভিডিও ধারণ করে মোবাইলসহ টাকা পয়সা আত্মসাৎসহ ব্লাকমেইল করতেন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ মজিবুর রহমান বলেন, “সাথি নামের মেয়েটির মূল বাড়ি হলো মতলব দক্ষিণের নারায়ণপুরে। সে ওখানকার আয়াত আলীর মেয়ে। এখানে সে অনলাইনে কাপড় বিক্রির ব্যবসায় জড়িত পরিচয়ের আড়ালে নিজের সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে এসব অপকর্ম করে আসছিল।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা সাথিসহ তার দুই ছেলে সহযোগী মামুন ও শাহাদাতকে সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে শহরের আদর্শ মুসলিম পাড়া ও পুরান বাজার পালপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদেরও দ্রুতই গ্রেপ্তারের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তাদের এই অপরাধী চক্র অনেক বড় এবং এদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। আসামিদের মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”

ঢাকা/অমরেশ/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করত ন সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা

চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।

জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”

একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”  

আরো পড়ুন:

বধূবেশে অভিষেক কন্যা

জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট

মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।” 

কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।” 

সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়। 

পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না। 

এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার