ইতিকাফ করছেন আল্লাহর জন্য, তবু পরিবারকে ভুলে থাকা উচিত হবে না। বরং পরিবারের প্রধান দায়িত্ববান হলে ইতেকাফ কিছুতে দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয় না। রাসুল (সা.)-এর জীবনে দেখি, তিনি ইতেকাফকালে পরিবারকে বিস্মৃত হতেন না। এমনকি নিয়মিত খোঁজ নিতেন, তাদের সুযোগ-সুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখতেন।

সাফিয়া (রা.) পক্ষ থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি রমজানের শেষ দশ দিনে তিনি রাসুলের (সা.

) সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন। রাসুল (সা.) তখন মসজিদে ইতেকাফ করছেন। তিনি কিছু সময় তথায় অবস্থান করে কথা বললেন, এরপর উঠে যাবার উদ্‌যোগ করলেন। রাসুল (সা.) বললেন, তুমি তাড়াহুড়ো কোরো না...। (বুখারি, হাদিস: ২,০৩৮)

বরং রাসুল (সা.) তাঁকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এগিয়ে এলেন। (বুখারি, হাদিস: ২,০৩৫)

একটি বর্ণনায় আছে, সাফিয়াকে লক্ষ্য করে তিনি বললেন, তাড়াহুড়ো কোরো না, আমি তোমার সঙ্গে বেরোব। তার আবাস ছিল উসামার বাড়িতে, (রাসুল পৌঁছে দেওয়ার জন্য) বেরিয়ে এলেন। (বুখারি, হাদিস: ২,০৩৮)

রাসুল (সা.) তাঁর পরিবারের কথা ভুলে যাননি। তাঁর নিরাপত্তার কথা ভেবেছেন। এমনকি মসজিদে ইতেকাফ করলেও তিনি মসজিদ থেকে বের হয়ে থাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন।

আরও পড়ুনইতিকাফ অবস্থায় কী করা যায়, করা যায় না২১ মার্চ ২০২৫

রাসুলের সাহাবিগণ নারীদের প্রতি লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি শিশুদের প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতেন। রুবাইয়ি বিনতে মুআউয়িজ বলেন, ‘রাসুল (সা.) মদিনার প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত আনসারদের গ্রামে বার্তা পাঠালেন, যে ব্যক্তি রোজা রেখেছে, সে যেন রোজা পূর্ণ করে নেয়, আর পানাহার করছে যে, সে যেন পূর্ণ দিবস এভাবেই অতিবাহিত করে। এরপর আল্লাহ চাহে তো নিশ্চয় আমরা রোজা পালন করব, ছোট ছোট শিশুদেরও রোজা রাখতে বলব। তাদের নিয়ে আমরা মসজিদে যাব, তাদের হাতে তুলে দেব পশমের খেলনা। খাবারের জন্য কেউ যদি কাঁদে, তবে ইফতারের সময়ে তাদের খেতে দেব।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,১৩৬)

এই বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, এমনকি তিনি শিশুদের দিকে খেয়াল রেখেছেন, শিশুদের আনন্দের বিষয়টি বিবেচনা করেছেন। সুতরাং আল্লাহর ইবাদতে সন্ন্যাস গ্রহণ করার মতো দুনিয়াভোলা হওয়ার বিধান ইসলামে নেই। পরিবারের খোঁজখবর রাখা সুন্নত।

আরও পড়ুনতাহাজ্জুদ নামাজে ওঠার জন্য কয়েকটি কৌশল০৬ জুলাই ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র জন য মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে

মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)। 

চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। 

আরো পড়ুন:

‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’

এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার

শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। 

সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।  

সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’ 

সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’ 

সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ 

শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’ 

সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’ 

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • পুতিন এমন কিছু চান, যা তিনি কখনোই পাবেন না
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে