ফতুল্লায় মসজিদে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হলেও গ্রেপ্তার নেই
Published: 28th, March 2025 GMT
ফতুল্লার রূপায়ন টাউনে আধিপত্য বিস্তার করে জোর পূর্বক রুপায়ন টাউন জামে মসজিদের খতিবকে অপসারণকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত এম এ হোসাইন রাজ ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার না করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী।
আসামিদের গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর ভুক্তভোগী এম এ হোসাইন রাজ আবেদন করেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) বাদ জুম্মা পুলিশ সুপার বরাবর এ আবেদন দায়ের করেন।
আবদনে এম এ হোসাইন রাজ উল্লেখ করেন, তিনি স্ব-পরিবারে দীর্ঘদিন যাবৎ ভূইগড় রূপায়ন টাউন সোসাইটিতে ফ্ল্যাট মালিক হয়ে বসবাস করছেন। তিনি রূপায়ন টাউনের একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক এবং রূপায়ন টাউন সোসাইটির প্রস্তাবিত কমিটির আহ্বায়ক।
রূপায়ন টাউনবাসী গত ৫ আগষ্টের পর হতে রূপাউন টাউনের ভিতরে বহিরাগত স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা আধিপত্য বিস্তার, হুকুমজারী, চাঁদাবাজী, রাহাজানি এবং দখলদারিত্বের স্বীকার হয়ে আসছে।
এ এ ঘটনায় এম এ হোসাইন রাজ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় কতিপয় সন্ত্রাসী তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় তাকে আওয়ামী ট্যাগ লাগিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি এবং ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে ।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ফেব্রুযারি এম এ হোসাইন রাজ বাদি হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন এবং বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে অবহিত করি।
এর জের ধরে গত ১ মার্চ সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সন্ত্রাসীদের নেতা কাজী মাজিদুল হক, তোফায়েল হোসেন লিটন এর পক্ষে ৩ জন এম এ হোসাইন রাজ এর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে যায়।
চাঁদা নেয়ার বিষয়টি গোপন না রাখলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে কাউকে কিছু জানান নাই।
গত ২০ মার্চ রূপায়ণ টাউন জামে মসজিদের ভিতরে তারাবির নামাজ শেষে মসজিদের খতিবকে অপসারণের অযুহাতে ওই সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চাঁদার দাবিতে এম এ হোসাইন রাজকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।
এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করার পরও উক্ত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে।
সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ দুুপুরের দিকে রূপায়ন টাউন ২৫নং বিল্ডিংয়ে এম এ হোসাইন রাজ এ অফিসে এসে সন্ত্রাসীরা পূর্বের দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদার পরিবর্তে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
তিনি দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিবাদীরা আমাকে মারধর করার জন্য উদ্যত হয়ে অফিসের ড্রয়ারে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে বলে দাবিকৃত বাকী চাঁদার টাকা রাত্র ১০টার মধ্যে না দিলে তাকেসহ তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণে শেষ করিয়া ফেলিবে। অথবা এছাড়াও রূপায়ন হইতে জোর পূর্বক তাদেরকে বাহির করে দিয়ে ফ্ল্যাট দখল করে নিবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হওয়ায় তারা একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হুকুমজারী, চাঁদাবাজী, রাহাজানি এবং দখলদারিত্ব সহ আধিপত্য বিস্তার করে আসিতেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রূপায়ণ টাউনবাসী সারাক্ষণই জান-মালের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে।
তাই রুপায়ন টাউনবাসী ও মুসুল্লিদের নিয়ে পুলিশ সুপার মহোদয় বরাবর আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও আমাদের নিরাপত্তা চেয়ে অভিযোগ দায়ের করি। এসপি সাহেব আমাদের অভিযোগ আমলে নেন এবং তৎক্ষনাৎ ফতুল্লা মডেল থানার ওসি সাহেবকে ফোন করে আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন এবং এবিষয় তিনি নিজে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ ফতুল্লার রূপায়ন টাউনে আধিপত্য বিস্তার করে জোর পূর্বক রুপায়ন টাউন জামে মসজিদের খতিব সায়েখ জামাল উদ্দিন (৫০) কে অব্যাহতি ও লাহ্নিত করাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলায় খতিবসহ তিনজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- খতিব সায়েখ জামাল উদ্দিন (৫০), এম এ হোসাইন রাজ (৩৬) ও আঃ হান্নান (৪০)।
এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে অভিযুক্ত করে শুক্রবার সকালে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হামলায় আহত এম এ হোসাইন রাজ।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ মসজ দ ন র য়ণগঞ জ দ য় র কর মসজ দ র উল ল খ ত র কর ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগের সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায় বলে দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
রবিবার (২ নভেম্বর) ডাকসুর ভিপি মো. আবু সাদিক, জিএস এসএম ফরহাদ ও এজিএস মুহা: মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত ‘রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কাৃরের বিরোধিতা এবং ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো অক্ষুণ্ন রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ডাকসুর প্রতিবাদ' শীর্ষক এক প্রতিবাদলিপিতে এ কথা বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি
ঢাবিতে সপ্তাহব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার এক সম্মিলিত বিপ্লব। কেবল সরকার পরিবর্তন নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, স্বাধীন ও শক্তিশালী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠন, প্রশাসনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল এই বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোন প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে যা সরাসরি ছাত্র–জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহা-হিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়।
যে বৈষম্যমূলক চাকরি ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করেই জুলাই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল সেই কাঠামো পরিবর্তনের বিরুদ্ধাচরণ করে বিএনপি নতুন প্রজন্মের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করছে। পাশাপাশি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশনের বিরোধিতা, অনুচ্ছেদ–৭০ সংস্কারে আপত্তি, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান আলাদা দুজন ব্যক্তির মতো আধুনিক গণতান্ত্রিক প্রস্তাবে বিরোধিতা, আইন পেশায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা, স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস গঠনে তাদের আপত্তি রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে বড় বাঁধার সৃষ্টি করছে। এভাবে বিএনপি মূলত জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে অস্বীকার করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
প্রতিবাদলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সংস্কারগুলো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তৈরির লক্ষ্যেই প্রস্তাবিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গঠনের নৈতিক দায়িত্ব ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের। তাই সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণ থেকে নিতে হবে। আর গণভোটই জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিতের উপযুক্ত মাধ্যম। গণভোটের মাধ্যমেই জনগণ ঠিক করবে দেশের স্বার্থে কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোকে তারা সমর্থন দিবে।
কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব যদি রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে জানিয়ে প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়, জুলাই বিপ্লব শুধু শাসক বা সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন নয় বরং জুলাই বিপ্লব হলো ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলোপ করে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী