আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে গুঞ্জনটা বাতাসে ভাসছিল। অবশেষে গতকাল রাতে সেটাই সত্যি হলো। কোচ দরিভাল জুনিয়রকে ছাঁটাই করেছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। এক বিবৃতিতে দরিভালের ছাঁটাই হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'ব্রাজিলিয়ান কনফেডারেশন জানাচ্ছে কোচ দরিভাল জুনিয়র আর দায়িত্বে নেই। বোর্ড তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে এবং তার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাচ্ছে। এখন থেকে সিবিএফ তার বদলি সন্ধান করবে।'

ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গো এবং সাও পাওলোর হয়ে সাফল্য তাঁকে নিয়ে আসে জাতীয় দলে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন দরিভাল। সেলেসাও ডাগআউটে তাঁর শুরুটা ছিল দারুণ ইতিবাচক। ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে নিজের যাত্রা শুরু করেন এই কোচ। তবে দ্রুতই ফুরিয়ে যায় দরিভাল জাদু।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্যর্থতা এবং কোপা আমেরিকায় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় বেশ সমালোচনার মুখে ফেলে দরিভালকে। এরপর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচ নিশ্চিত করেছে তাঁর বিদায়। ব্রাজিলের কোচ হিসেবে সব মিলিয়ে ১৬ ম্যাচ দায়িত্ব পালন করেছেন দরিভাল। যেখানে ৭ জয় এবং ৭ ড্রয়ের পাশাপাশি ২ টি ম্যাচে হেরেছে ব্রাজিল।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১৪ ম্যাচ শেষে ৬ জয়, ৩ ড্র ও ৫ হারে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাজিলের অবস্থান এখন চার নম্বরে। শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনার চেয়ে ১০ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে আছে তারা।

এদিকে দরিভালের বিদায়ের পর এখন ব্রাজিলের সম্ভাব্য কোচ হিসেবে জোরের সঙ্গে শোনা যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ কার্লো আনচেলত্তির নাম। পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে দলটি পর্তুগিজ কোচ হোর্হে জেসুসও। তবে শেষ পর্যন্ত কে কোচ হবেন সেটা জানতে আরও কিছু সময় হয়তো অপেক্ষা করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন র দর ভ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ