Samakal:
2025-06-15@20:45:18 GMT

চাঁদ দেখা গেছে, কাল ঈদ

Published: 30th, March 2025 GMT

চাঁদ দেখা গেছে, কাল ঈদ

দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে আগামীকাল সোমবার। আজ রোববার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা ও পর্যালোচনা কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

সভা শেষে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, দেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল সোমবারই সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হবে।

ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, ঈদ আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার। এক মাসের সিয়াম সাধনা আর সংযমের পর ঈদ আনছে ‘ভাঙার দিন’।

রমজানে ২৯ দিন ধরে ছুটি ঘোষণা করা হয়। আজ থেকে শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। ঈদ ধর্মীয় উদযাপন হলেও বাংলাদেশে তা উৎসবেরও। প্রিয়জনের কাছে ফেরা ঈদের প্রধান আনন্দ।

এদিকে গত ২৩ মার্চ ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা সরকার। এরপর গত শুক্রবার থেকেই লাখ লাখ মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে ছুটে যান। জীবিকার জন্য শহরবাসী মানুষ নাড়ির টানে ছুটেন বাড়িতে। তবে দীর্ঘদিন ছুটি হওয়ায় এবার ঈদযাত্রায় তেমন একটা ভোগান্তি ছিল না।

ঈদ মানেই নতুন জামা। কেনাকাটা হয়েছে দেদার, তার প্রমাণ গত কয়েক দিনে বিপণিবিতানে ছিল উপচে পড়া ভিড়। নিজের জন্য কিংবা অন্যকে উপহার দিতে; সামর্থ্যের মধ্যে সেরা জামা খুঁজে পেতে অহর্নিশ দোকান থেকে দোকানে ঘুরে বেড়িয়েছেন অনেকে।

তারপরও সবার ভাগ্যে নতুন জামা জুটবে না। ঈদের আগেই অস্বাভাবিক জোয়ারে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। দেশে এমনও কোটি মানুষ আছে, যাদের ঈদের দিনেও খাবার জোটে না। তবে ঈদ মানেই দুঃখী-দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা। 

তাই তো ইসলামের তাগিদ– ঈদগাহে যাওয়ার আগেই পরিশোধ করতে হবে জাকাত। যাতে ধনী-গরিব নির্বিশেষে পালন করতে পারেন ঈদের খুশি। 

বিত্তবানের জাকাত ও ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। নজরুলের কবিতার মতোই– ‘যার ঘরে ধন রত্ন জমানো আছে,/ ঈদ আসিয়াছে, জাকাত আদায় করিব তাদের কাছে। এসেছি ডাকাত জাকাত লইতে, পেয়েছি তাঁর হুকুম,/ কেন মোরা ক্ষুধা তৃষ্ণায় মরিব, সহিব এই জুলুম?’ 

ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত দেশের প্রতিটি গ্রাম-মহল্লার ঈদগাহ ময়দান। ঢাকা মহানগরীতে ১১১টি ঈদগাহে ও ১৫৭৭টি মসজিদসহ মোট ১৭৩৯টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। 

তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে বা অন্য কোনও কারণে জাতীয় ইদগাহ মাঠে জামাত অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে সকাল ৯টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবারও মসজিদটিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, এর এক ঘণ্টা পর পর তিনটি জামাত এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উৎসবমুখর ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়। উৎসবটির নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ ময়দান দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ। প্রায় ২২ একর আয়তনের এ ময়দানে ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনারের সামনে সকাল ৯টায় হবে ঈদ জামাত।

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। এবার এখানে অনুষ্ঠিত হবে ১৯৮তম জামাত।

ঈদ জামাত শেষে মিষ্টি খাওয়া রাসুল (সা.

) এর সুন্নত। তাই ঈদে সেমাই অবধারিত। গরিব কি ধনী সবারই চেষ্টা থাকবে সেরা আয়োজনটুকু করার। ঈদের খাবার থেকে বাদ যাবে না কেউ। রোগীদের জন্য হাসপাতালে, এতিমদের জন্য এতিমখানায়, শিশু সদন, ছোটমণি নিবাস, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে আশ্রয়কেন্দ্র; সবখানেই থাকবে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা। জেলখানা ও কিশোর সংশোধন কেন্দ্রগুলোতেও থাকবে উন্নত খাবার।

ঈদে বড় শহর ও রাজধানীর বিনোদনকেন্দ্রও সেজেছে উৎসবের ঢংয়ে। চিড়িয়াখানা, শিশুপার্কের মতো বিনোদনকেন্দ্র খোলা থাকছে ঈদে। ঈদ মানেই একে অপরকে আপন করে নেওয়া। শুভেচ্ছা জানানোর রীতি চিরন্তন।

এদিকে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রোববার এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরে সকলকে জানাই ঈদ মোবারক। ঈদে পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্বিঘ্নে ও আনন্দ সহকারে নিজ নিজ বাড়ি যাবেন। আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করবেন। গরিব পরিবারের খোঁজখবর নেবেন। তাদের ভবিষ্যৎ ভালো করার জন্য চিন্তা-ভাবনা করবেন। আপনার সন্তানদের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন, এই কামনা করছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম ত অন ষ ঠ ঈদগ হ ম র জন য ময়দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার