ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি
Published: 1st, April 2025 GMT
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নয় দিনের লম্বা ছুটি পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। ছুটি উপভোগ করতে এ সময় অনেকেই বেড়ানোর পরিকল্পনা করেন। পর্যটকদের সেই পরিকল্পনা সার্থক এবং আনন্দময় করতে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
ছুটিতে পাহাড় ও লেক ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙামাটি বরাবরই পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটকদের। ভ্রমণপিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তি দূর করতে এখানে আসেন। এমনিতেই ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলো। ঈদের টানা ছুটিতে সেই ভিড় আরো বাড়বে। জেলার সাজেক ভ্যালি, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই লেক, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যক ও সুবলং ঝরনাসহ আরো মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্পটগুলো মুখরিত হয়ে উঠবে হাজার হাজার পর্যটকে।
এ কারণে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্কসহ শহরের হোটেল মোটেলগুলো। সাজেকে সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডে বেশ কিছু রিসোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাকি রিসোর্টগুলো পর্যটক বরণে প্রস্তুতি শেষ করেছে বলে জানিয়েছে সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতি।
সমিতির সভাপতি সুপর্ন দেব বর্মন জনান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাজেকে ১২৬টি রিসোর্টের মধ্যে ৩৫টি রিসোর্ট পুড়ে যায়। বাকি ৯১টি রিসোর্ট অক্ষত আছে। আশা করছি ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটকরা সাজেক বেড়াতে আসবেন। তাদের বরণ করতে আমরা সব প্রস্তুতি সেরে নিয়েছি।
রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে ঝুলন্ত সেতু। ইতোমধ্যে ঝুলন্ত সেতু এবং এর আশপাশ রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে। এছাড়া ইঞ্জিনচালিত নৌকায় কাপ্তাই লেকের নীল জলে নৌবিহার করতে চান পর্যটকরা। এ জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ট্যুরিস্ট বোট ব্যবসায়ীরা।
বোট চালক মো.
রাঙামাটি পর্যটন নৌ-যান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘‘পর্যটকদের বরণ করে নিতে আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। বোটগুলো সংস্কার করা, রঙ করাসহ সব কাজ শেষ। আমরা এখন পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করছি।’’
জেলার আরেক অন্যতম বিনোদন স্পট পলওয়েল পার্কও প্রস্তুত পর্যটক বরণে। পুরো পার্ক নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে পার্কের একমাত্র ঝুলন্ত সেতুটিও।
এ দিকে ইতোমধ্যে শহরের বেশিরভাগ হোটেল-মোটেলগুলোতে অধিকাংশ রুম বুকড। রিজার্ভ বাজার গ্রীন ক্যাসেল হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘‘রোজার মাসে আমাদের তেমন একটা ব্যবসা হয়নি। কিন্তু আমরা আশা করছি ঈদের ছুটিতে প্রচুর পর্যটক রাঙামাটি ভ্রমণে আসবেন। আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে আমাদের হোটেলের প্রায় ৮০ শতাংশ বুকড হয়ে গেছে।’’
হোটেল মতি মহলের ব্যবস্থাপক চন্দন মজুমদার বলেন, আমাদের হোটেলের প্রায় ৯০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং রয়েছে। আশা করছি এবার ভালো ব্যবসা হবে।
একই কথা বলেছেন পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা। অন্যদিকে রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক একেএম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘‘ঈদের ছুটি রাঙামাটির প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ঘুরতে পারেন তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপশি জেলা পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়ন থাকবে।’’
শংকর//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ র ছ ট আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
হামলার পর আশা ও আতঙ্কের মধ্যে পেহেলগামে ধীরে ধীরে ফিরছেন পর্যটকেরা
ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামের কাছে এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর শহরটিতে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। অবশ্য সেখানে অল্প অল্প করে পর্যটক ফিরতে শুরু করেছেন।
গত সপ্তাহে শহরের প্রধান মহাসড়ক একেবারে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, খালি হয়ে গিয়েছিল হোটেলগুলো। এখন সেখানে আবার অল্প অল্প করে প্রাণ ফিরছে।
গত মঙ্গলবার পেহেলগাম থেকে তিন মাইল (৫ কিলোমিটার) দূরে পাহাড়চূড়ার উপত্যকা বৈসারানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের ওপর গুলি চালায় একদল বন্দুকধারী। এই বৈসারানকে অনেক সময় ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ বলা হয়।
বৈসারানের হামলাকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা অনেক পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে এবং ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কাশ্মীরের দুই অংশ দুই দেশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তরে পুরো অঞ্চলকে দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করে থাকে।
দিল্লি এ হামলার কোনো সামরিক জবাব দেবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।
পেহেলগামের মতো এলাকার অর্থনীতি পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। হামলার জেরে সেখানে বহু মানুষের জীবিকা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনকাশ্মীরে ব্যাপক ধরপাকড়, ভাঙা হচ্ছে বাড়ি: ‘আমার ভাই জড়িত থাকলেও পরিবারের অপরাধ কী’১৮ ঘণ্টা আগেহামলার পরদিন (২৩ এপ্রিল) ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পেহেলগামের বৈসারান এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালান