দিনে গরম, রাতে কোথাও ঠান্ডা ও কুয়াশার মতো, কেন এমন হচ্ছে
Published: 6th, April 2025 GMT
সদ্য শেষ হওয়া ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাড়ি গিয়েছিলেন ইমন আহমেদ। রাজধানীতে বাসে উঠেছিলেন রাত ১২টার দিকে। পরদিন প্রায় সন্ধ্যায় গিয়ে পৌঁছান বাড়িতে। ঈদের আগে যেদিন রাজধানী ছেড়েছিলেন, সেদিনও ঢাকায় তাপপ্রবাহ ছিল। ঠাকুরগাঁওয়ে গিয়ে কিন্তু পেলেন ভিন্ন পরিস্থিতি। রাত যত বাড়ে, তাপমাত্রা কমতে থাকে ধীরে ধীরে।
ইমন আহমেদ বলছিলেন, ‘রাতে একপর্যায়ে গায়ে কাঁথা জড়াতে হলো। এ ছাড়া উপায় ছিল না।’
বেশ সকালেই ঘুম ভাঙে ইমনের। তখন জানালা খুলে দেখেন, চারদিকে যেন শীতকালের কুয়াশার মতো। রাজধানীর চৈত্রের খরতাপ ছেড়ে যাওয়া ইমনের ধন্দ লাগে। অবশ্য একটু পর রোদ উঠলে ‘কুয়াশা’র সেই পর্দাও উধাও হলো। যথারীতি তাপও বাড়তে লাগল।
দিনে গরম আর রাতে তাপের এ পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগের নানা মাধ্যমে ছবি দিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। আবহাওয়া কিংবা জলবায়ুর পরিবর্তন ভেবে শঙ্কাও প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। আবহাওয়াবিদদের কাছে অবশ্য প্রকৃতির এ অবস্থার ব্যাখ্যা আছে।
মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে গেছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহ এখনো চলছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে। দেশজুড়ে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহেরও আশঙ্কা আছে।
কিন্তু এরই মধ্যে এখন দিনে তাপ আর রাতে ঠান্ডা, ভোরে কুয়াশার মতো। কেন?
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন সূর্যোদয় হয় মোটামুটি পৌনে ছয়টার দিকে আর সূর্যাস্ত হয় সোয়া ছয়টার দিকে। সকালে প্রায় এক ঘণ্টা ও সূর্যাস্তের আগের ঘণ্টাখানেক সূর্যের তাপ তেমন থাকে না। কিছু সময় মেঘলা থাকে। এসব বাদ দিলে দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় সূর্য কিরণ দেয় উলম্বভাবে। পরিষ্কার মেঘমুক্ত আকাশ আর এর সঙ্গে থাকা প্রখর তাপে দিনের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, যেমন এখন যাচ্ছে। যদি কেউ কোনো খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকায় এবং যদি আটভাগে ভাগ করা হয়, তখন মেঘের পরিমাণ থাকে এক ‘অকটা’। মেঘ পরিমাপের একক অকটা। অর্থাৎ এ সময়টায় মেঘের পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে।
কিন্তু দিনের এ তাপমাত্রা রাতে কোথায় চলে যায়, কেন রাতে দেশের কোথাও কোথাও রীতিমতো শীত পড়ে?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যার পর সূর্যের তাপ কমে গেলে এবং আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে সূর্যের বিকিরণজনিত শীতলতা তৈরি হয়। রাত যত বাড়ে, এই শীতলতা তত বাড়ে। দিনে সূর্যের তাপে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। সেই গরম হাওয়া রাতে বিকিরণের কারণে কমতে থাকে। তাতেই তাপ কমে, শীতলতা কমে।
এই প্রাক্–মৌসুমি বায়ুর সময়টায় ধোঁয়াশার পরিধি বিস্তৃত থাকে। বৃষ্টি খুবই কম থাকায় ধুলার পর্দাও দীর্ঘ থাকে এ সময়টায়। আর এখন ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের লাহোর পেরিয়ে আন্তমহাদেশীয় দূষিত বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে।এ সময়ে দিনের তাপের সঙ্গে দেখা যায় রাতের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে গেছে। যেমন গত ২৮ মার্চ যশোরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে তা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যায়। গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন ছিল ২৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরের আরেক জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল প্রায় দ্বিগুণ, ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উত্তরের কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, রংপুর থেকে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ হাওরের সুনামগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় রাতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। আবার এসব এলাকাতেই এ সময়ে, বিশেষ করে ভোরের দিকে কুয়াশার মতো ঘন পর্দা দেখা যায়।
রাত ও দিনের তাপমাত্রার এ পার্থক্য এবং রাতে এ ধরনের ঠান্ডা আবহাওয়া প্রকৃতিতে, বিশেষ করে এ সময়ে নতুন কিছু নয়, জানান আবহাওয়াবিদেরা। তবে যাকে ‘কুয়াশা’ বলা হচ্ছে, তা কিন্তু আসলে কুয়াশা নয়, একে বরং ‘ধোঁয়াশা’ বলেন তাঁরা। কেন এটা হয়?
মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলছিলেন, এ সময়ে বাতাসে যদি জলীয় বাষ্প বেশি থাকে, তবে এর সঙ্গে মিলে যায় বৃষ্টিহীন এ সময়ে বাতাসে থাকা ক্ষুদ্র বস্তুকণা। ঠান্ডার স্পর্শে এসব বস্তুকণা ঘন হয়ে যায়। একটা পর্দার মতো অবস্থা সৃষ্টি করে। তবে ধীরে ধীরে দিনের আলো ফুটে উঠলে এ পর্দাও অদৃশ্য হয়ে পড়ে।
উত্তরের এসব জনপদ ও হাওরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আছে জলাভূমি। সেখানে জলীয় বাষ্প স্থানীয় আবহাওয়ার কারণে শীতল হয়ে পড়ে। এসব অঞ্চলে রাতের শীতলতার এ–ও এক কারণ।
সন্ধ্যার পর সূর্যের তাপ কমে গেলে এবং আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে সূর্যের বিকিরণজনিত শীতলতা তৈরি হয়। রাত যত বাড়ে, এই শীতলতা তত বাড়ে।মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক, জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ, আবহাওয়া অধিদপ্তরএখন এই প্রাক্–মৌসুমি বায়ুর সময়টায় ধোঁয়াশার পরিধি বিস্তৃত থাকে। বৃষ্টি খুবই কম থাকায় ধুলার পর্দাও দীর্ঘ থাকে এ সময়টায়। আর এখন ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর পেরিয়ে আন্তমহাদেশীয় দূষিত বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর প্রবেশদ্বার দেশের উত্তরের রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল। এই দীর্ঘ প্রবাহ ময়মনসিংহ থেকে শুরু করে বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুস সালাম।
এসব অঞ্চলে এই বায়ুপ্রবাহের কারণে, বিশেষ করে ভোরের দিকে কুয়াশার মতো ধোঁয়াশার গভীর পর্দা থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এভাবে রাতে শীতল হাওয়া ও ভোরের ধোঁয়াশার কারণ হিসেবে সীমানা স্তরের উচ্চতাকে (বাউন্ডারি লেয়ার হাইট–বিএলএইচ) কারণ বলে মনে করেন অধ্যাপক আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, এটি হলো বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরের এমন একটি উচ্চতা, যেখানে পৃথিবীর পৃষ্ঠের ঘর্ষণের প্রভাবে বাতাস প্রভাবিত হয়। এটি আবহাওয়া, জলবায়ু ও বায়ুদূষণের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দিনে সূর্যের উত্তাপে বিএলএইচ গভীর হয় আর রাতে ঠান্ডায় এটি কমে যায়।
কেন উত্তর ও উত্তর–পূর্বের বাংলাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রায় এত পার্থক্য বা ভোরের ধোঁয়াশা বেশি দেখা যায়? রাজধানীতে এর প্রভাব তেমন দেখা যায় না কেন?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যানবাহন, গাছপালা কম হওয়া, প্রচুর বাড়িঘর, উন্মুক্ত স্থান না থাকা ও বিপুল জনসংখ্যার বসতির কারণে রাজধানীতে রাতের তাপমাত্রায় পার্থক্য খুব বেশি হয় না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক য় শ র মত স লস য় স সময়ট য় প রব হ পর দ ও দশম ক এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ
আপনার বাড়িতে কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের স্তূপ জমে আছে? জানেন কি, এর থেকে মুক্তির পথ আছে ইসলামের সরল জীবনধারায়? আধুনিক বিশ্বে ভোগবাদের তীব্র ঝড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের দেখি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে ঠাসা ঘরে।
নতুন ফ্যাশনের পোশাক, সর্বশেষ প্রযুক্তির গ্যাজেট বা মধ্যরাতে এক ক্লিকে কেনা অপ্রয়োজনীয় পণ্য—এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসলাম আমাদের ন্যূনতম একটি সরল জীবনধারার পথ দেখায়, যা পার্থিব লোভ থেকে মুক্ত করে আমাদের আল্লাহর পথে নিবেদিত হতে উৎসাহিত করে।
আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০সংযম কেন জরুরিমিনিমালিজম বা ন্যূনতাবাদ এমন একটি জীবনধারা, যেখানে আমরা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর নির্ভর করব এবং অতিরিক্ত ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকব। ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ না হয়ে শুধু যেটুকু না হলেই জীবন চলে না, সেটুকু নিজের কাছে রাখব।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় বেশভূষা সৌন্দর্য গ্রহণ করো, খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ৩১)।
এই আয়াত আমাদের জীবনে সংযম ও সরলতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩বিজ্ঞাপনের প্রলোভন আজকাল আমাদের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়ই এমন জিনিস কিনে ফেলি, যেমন একটি ইউএসবি মগ হিটার বা জামাকাপড়, যা তারপর বছরের পর বছর অব্যবহৃত পড়ে থাকে।
বাড়িতে জমে থাকে প্যাকেট না খোলা গ্লাস–বক্স, অপঠিত বইয়ের স্তূপ। প্রশ্ন করে দেখি তো, আমাদের আসলেই কি এগুলো প্রয়োজন ছিল?
মহানবী (সা.)-এর সাদাসিধা জীবনমহানবীজি (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা সরল জীবনযাপনের উজ্জ্বল উদাহরণ। হজরত আয়েশা (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, ‘হে আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো। ধনীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে সাবধান থাকো এবং কোনো পোশাককে তখনই জীর্ণ হয়ে গেছে মনে করো, যখন তুমি তাতে প্যাঁচ লাগিয়েছ (মানে যখন পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে পেঁচিয়ে যায়)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০)।
এই হাদিসে নবীজি (সা.) স্পষ্টভাবে সরল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।ইসলাম আমাদের শেখায় যে পার্থিব সম্পদ ক্ষণস্থায়ী এবং এটি আমাদের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। নবীজি (সা.) কখনো অপ্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করেননি এবং সব সময় দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছেন।
দানের সংস্কৃতিআজকের বিশ্বে ভোগবাদী সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। ক্রেডিট কার্ড, সহজলভ্য ঋণ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ করে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যেমন আমাদের দাদা-দাদিরা, সীমিত সম্পদের মধ্যে সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান এবং সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আমাদের ভোগবাদী প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনখাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা০৯ জুন ২০২৫কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করা লোভ ও কৃপণতার দিকে নিয়ে যায়, যা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।
ইসলাম আমাদের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাইলে মাসিক বাজেটের একটি অংশ দানের জন্য বরাদ্দ করতে পারি।
যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪বিয়ের মতো উৎসবে আমরা বিলাসবহুল আয়োজনের পরিবর্তে সরলতা বেছে নিতে পারি। উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪)।
আমাদের ভালো কাজ এবং দানশীলতা পরকালে যেমন উপকারে আসবে, তেমনি সমাজের জন্যও হবে কল্যাণকর। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দানশীলতার দিকে মনোযোগ দিলে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত হবে।
ভোগবাদী জীবন মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং ন্যূনতম খরচের জীবনধারা মানুষকে তৃপ্তির জীবন উপহার দেয়। এটি একই সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও একটি পথ।
আমরা যদি আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। ন্যূনতমবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের প্রকৃত সুখ পার্থিব সম্পদে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের প্রস্তুতিতে নিহিত।
আরও পড়ুনআধুনিক এই প্রবণতার শিকড় ইসলামে২০ মে ২০২৫