গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় বাংলাদেশের তীব্র নিন্দা
Published: 7th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
সোমবার (৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মাসে একতরফা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলি সামরিক হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। পাশাপাশি গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়েছে, যা মানবিক বিপর্যয়ের দিকে পরিচালিত করেছে। স্পষ্টতই, ইসরায়েল বারবার আন্তর্জাতিক আবেদনের প্রতি কোনো গুরুত্ব দেয়নি এবং এর পরিবর্তে ক্রমবর্ধমানভাবে হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানোর জন্য গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার বোমা বর্ষণের তীব্র নিন্দা জানায়।
বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সব সামরিক অভিযান বন্ধ, সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে দায়িত্ব পালনের দাবি করছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানাচ্ছে যে, তারা যেন নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন, বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা এবং অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তাদের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালন করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনি জনগণের সব ন্যায্য অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানা অনুসারে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।
বাংলাদেশ সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনার প্ল্যাটফর্মে ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর সহিংসতা ও দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি এবং সংলাপের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানায়।
আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব, শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে ফিলিস্তিনি সমস্যার দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশ তার আহ্বানে অবিচল এবং দ্ব্যর্থহীন থাকবে।
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ সরক র র জন য ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
অবিলম্বে গণভোটের দাবি চাকসুর
জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি দিতে অবিলম্বে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু)।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে চাকসুর অফিশিয়াল পেজে সহ-সভাপতি (ভিপি) ইব্রাহীম হোসেন রনি ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সাঈদ বিন হাবিব স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞাপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ থাকায় জুলাই সনদ অনুষ্ঠান বর্জন ছাত্র সংসদ নেতাদের
শপথ নিলেন চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেও কিছু রাজনৈতিক দল ধারাবাহিকভাবে সেই সংস্কার বাস্তবায়নের পথে বাধা দিয়ে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। তারা এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করছে, যা জুলাই বিপ্লবের মূল লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল, জুডিশিয়ারি, মহা-হিসাব নিরীক্ষকসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে দল-মুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণ ও দলীয় প্রভাব বজায় রাখার নীতি অনুসরণ করছে। যে বৈষম্যমূলক নিয়োগ ও রাষ্ট্রীয় লুণ্ঠন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে, সেই কাঠামো অপরিবর্তিত রাখার মাধ্যমে কিছু রাজনৈতিক দল স্পষ্টভাবে নতুন প্রজন্মের ন্যায্য আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের সঙ্গে উপহাস করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বিচারপতি নিয়োগে দলীয় প্রভাব কমিয়ে জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশন গঠন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭০ আধুনিকায়ন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পৃথককরণ, আইন পেশায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা, স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস গঠনে তাদের আপত্তি, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে বড় বাঁধার সৃষ্টি করছে। এটি মূলত রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং তরুণ সমাজের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের এক গভীর ষড়যন্ত্র।
প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো কোনো ব্যক্তি বা দলের স্বার্থের জন্য নয়, এগুলো দেশের, জনগণের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠন ও গণতান্ত্রিক আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার শর্তভিত্তিক রূপরেখা। জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রগঠনমূলক সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে। আর সেই গণমতের সর্বোচ্চ প্রকাশের মাধ্যম হলো গণভোট। জনগণের প্রত্যক্ষ মতামত নিয়েই সংস্কারের প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে হবে।
যদি কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী অথবা প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি সংস্কারের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, তবে ছাত্র-জনতা সেই বাধা মোকাবিলায় সংগ্রামী ভূমিকা পালন করবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী